হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রশ্ন উত্তর // class 10 hariye jawa kali kolom question answer // bengali wbbse
হারিয়ে যাওয়া কালি কলম
প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীরা, এই পোস্টটিতে আমি তোমাদের দেখিয়েছি পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদের (WBBSE) মাধ্যমিক / দশম শ্রেণীর বাংলা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা আয় আফ্রিকা কবিতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং পরীক্ষায় কমন পাওয়ার মতো প্রশ্ন উত্তর ও সাজেশন । আর হ্যাঁ, একটা কথা মনে রাখবে যে প্রশ্নগুলির পাশে বেশি স্টার মার্ক (*) সেই প্রশ্নগুলির খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সাজেশনের অন্তর্ভুক্ত । এতো সব প্রশ্নের উত্তর যদি তোমরা না পড়তে পারো , তবে স্টার মার্ক (*) প্রশ্ন উত্তরগুলি পড়লেই হবে । কিন্তু সবচেয়ে বেশি স্টার মার্ক (*) প্রশ্ন উত্তরগুলি আগে পড়বে ।
মার্ক – 1 ( MCQ )
১. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধটির স্রষ্টা হলেন- (ক) শ্রীপান্থ (খ) পরশুরাম (গ) বনফুল (ঘ) রবীন্দ্রনাথ
উত্তর – (ক) শ্রীপান্থ
২. ‘শ্রীপান্থ’ ছদ্মনামে লিখেছেন – (ক) অন্নদাশংকর রায় (খ) বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় (গ) সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (ঘ) নিখিল সরকার
[অথবা], শ্রীপান্থর আসল নাম – (ক) অন্নদাশংকর রায় (খ) নিখিলনাথ রায় (গ) সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (ঘ) নিখিল সরকার
উত্তর – (ঘ) নিখিল সরকার
৩. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ? – (ক) বটতলা (খ) যখন ছাপাখানা এল (গ) কালি আছে কাগজ নেই, কলম আছে মন নেই (ঘ) আজব নগরী
উত্তর – (গ) কালি আছে কাগজ নেই, কলম আছে মন নেই
৪. “কথায় বলে কালি কলম মন, লেখে __________”-শূন্যস্থান পূরণ করো । – (ক) দুই জন (খ) তিন জন (গ) সাত জন (ঘ) চার জন
উত্তর – (খ) তিন জন
৫. প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ যেখানে কাজ করেন, সেটি একটি – (ক) পোস্ট অফিস (খ) সওদাগরি অফিস (গ) লেখালেখির অফিস (ঘ) রেজিস্ট্রি অফিস
উত্তর – (গ) লেখালেখির অফিস
৬. ‘আমি ছাড়া কারও হাতে কলম নেই।’ – ‘এখানে ‘আমি’ কে ? – (ক) শ্রীপান্থ (খ) মাস্টারমশাই (গ) লেখকরা (ঘ) রবীন্দ্রনাথ
উত্তর – (ক) শ্রীপান্থ
৭. ‘সকলের সামনেই চৌকো আয়নার মতো একটা’ – (ক) স্ক্রিন (খ) পরদা (গ) কাচের স্ক্রিন (ঘ) কাচের স্ক্রিন বা পরদা
উত্তর – (ঘ) কাচের স্ক্রিন বা পরদা
৮. ‘তবে তাতে লিখে আমার সুখ নেই।’– কীসে লেখার কথা বলা হয়েছে ? – (ক) কম্পিউটারে (খ) টাইপরাইটারে (গ) বল পেনে (ঘ) গলা-শুকনো, ভোঁতা-মুখ পেনে
উত্তর – (ঘ) গলা-শুকনো, ভোঁতা-মুখ পেনে
৯. ‘বাংলায় একটা কথা চালু ছিল’ – কী কথা ? – (ক) কালি কলম মন, লেখে তিন জন (খ) অসির থেকে মসি বড়ো (গ) কালি নেই, কলম নেই, বলে আমি মুনশি (ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তর – (গ) কালি নেই, কলম নেই, বলে আমি মুনশি
১০. লেখক শ্রীপান্থ শৈশব ও কৈশোর কাটিয়েছেন – (ক) গ্রামে (খ) শহরে (গ) মফস্সলে (ঘ) বিদেশে
উত্তর – (ক) গ্রামে
১১. প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধটি রচনা করেন – (ক) পঞ্চাশ বছর বয়সে (খ) চল্লিশ-প্যাশ বছর বয়সে (গ) পঞ্চাশ-ষাট বছর বয়সে (ঘ) যাট-পঁয়ষট্টি বছর বয়সে
উত্তর – (গ) পঞ্চাশ-ষাট বছর বয়সে
১২. লেখক শ্রীপান্থ ছোটোবেলায় কলম তৈরি করতেন – (ক) ব্রোঞ্জের শলাকা দিয়ে (খ) পাখির পালক দিয়ে (গ) বাঁশের সরু কঞ্চি কেটে (ঘ) খাগ দিয়ে
উত্তর – (গ) বাঁশের সরু কঞ্চি কেটে
১৩. ‘বড়োরা শিখিয়ে দিয়েছিলেন’– কী শিখিয়ে দিয়েছিলেন ? – (ক) কলমের মুখ ছুঁচোলো করতে হয় (খ) কালি খুব গাঢ় করা উচিত নয় (গ) কালি খুব পাতলা হওয়া উচিত নয় (ঘ) কলমের মুখটা চিরে দিতে হয়
উত্তর – (ঘ) কলমের মুখটা চিরে দিতে হয়
১৪. ‘লেখার পাত বলতে শৈশবে আমাদের ছিল’ – (ক) তালপাতা (খ) নারকেল পাতা (গ) খেজুর পাতা (ঘ) কলাপাতা
উত্তর – (ঘ) কলাপাতা
১৫. তখনকার দিনে ‘হোম-টাস্ক’ করা হত – (ক) তালপাতায় (খ) বটপাতায় (গ) তুলোট কাগজে (ঘ) কলাপাতায়
উত্তর – (ঘ) কলাপাতায়
১৬. প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থর স্কুলের মাস্টারমশাই তাঁদের লেখার পাতটিকে ছিঁড়তেন – (ক) আড়াআড়িভাবে (খ) লম্বালম্বিভাবে (গ) এলোপাথারি করে (ঘ) টুকরো টুকরো করে
উত্তর – (ক) আড়াআড়িভাবে
১৭. অক্ষরজ্ঞানহীন লোককে বলে – (ক) ওর এগোবার পথ বন্ধ (খ) ওর কাছে ক’অক্ষর গোমাংস (গ) ও একটা গাধা (ঘ) ওর পেটে বোম মারলেও ‘অ’ বেরোবে না
উত্তর – (খ) ওর কাছে ক’অক্ষর গোমাংস
১৮. ‘ওর কাছে ক’অক্ষর গোমাংস’ – ‘ওর’ বলতে বোঝানো হয়েছে – (ক) গণ্ড মূর্খকে (খ) শিশুকে (গ) অক্ষরজ্ঞানহীনকে (ঘ) সাক্ষরকে
উত্তর – (গ) অক্ষরজ্ঞানহীনকে
১৯. প্রাবন্ধিককে কালি তৈরিতে কারা সাহায্য করতেন ? – (ক) মা-পিসি-দিদিরা (খ) মা-মাসি-পিসিরা (গ) দাদা-দিদি-পিসিরা (ঘ) কাকী-জেঠি-পিসিরা
উত্তর – (ক) মা-পিসি-দিদিরা
২০. “তিল ত্রিফলা সিমুল ছালা/ছাগ দুগ্ধে করি মেলা/লৌহপাত্রে লোহায় ঘসি/ছিঁড়ে পত্র না ছাড়ে মসি।” – এ কথা বলতেন – (ক) নবীনেরা (খ) প্রাচীনেরা (গ) নবীনারা (ঘ) প্রাচীনারা
উত্তর – (ঘ) প্রাচীনারা
২১. কালি তৈরির জন্য কাঠের উনানে রান্না করা কড়াইতে লেগে থাকা কালি তোলা হত – (ক) আমপাতা দিয়ে (খ) ডুমুর পাতা দিয়ে (গ) লাউপাতা দিয়ে (ঘ) বাঁশের পাতা দিয়ে
উত্তর – (গ) লাউপাতা দিয়ে
২২. কড়াইয়ের তলায় জমা কালি তুলে কীসে রাখা হত ? – (ক) তামার বাটিতে (খ) পিতলের বাটিতে (গ) রুপোর বাটিতে (ঘ) পাথরের বাটিতে
উত্তর – (ঘ) পাথরের বাটিতে
২৩. ‘আমাদের মধ্যে যারা ওস্তাদ তারা ওই কালো জলে’ কী ঘষত ? – (ক) আমলকী (গ) বহেড়া (গ) হরীতকী (ঘ) জায়ফল
উত্তর – (গ) হরীতকী
২৪. প্রাবন্ধিকরা আতপ চাল ভেজে পুড়িয়ে বেটে নিতেন – (ক) কালিতে মেশানোর জন্য (খ) কালি তৈরির জন্য (গ) দোয়াত তৈরির জন্য (ঘ) দোয়াতকে শক্ত বানানোর জন্য
উত্তর – (খ) কালি তৈরির জন্য
২৫. “… তাই নিয়ে আমাদের প্রথম লেখালেখি।”– কী নিয়ে ? – (ক) বাঁশের কলম ও ঘরে তৈরি কালি (খ) মাটির দোয়াত (গ) কলাপাতা (ঘ) উক্ত সব ক-টি
উত্তর – (ঘ) উক্ত সব ক-টি
২৬. স্টাইলাস হল – (ক) লোহার শলাকা (খ) ব্রোঞ্জের শলাকা (গ) পিতলের শলাকা (ঘ) কাঁসার শলাকা
উত্তর – (খ) ব্রোঞ্জের শলাকা
২৭. পালকের কলমের ইংরেজি নাম হল – (ক) স্টাইলাস (খ) ফাউন্টেন পেন (গ) কুইল (ঘ) রিজার্ভার পেন
উত্তর – (গ) কুইল
২৮. “বাবু কুইল ড্রাইভারস”– কথাটি বলতেন – (ক) জব চার্নক (গ) লর্ড কার্জন (গ) শ্রীপান্থ (ঘ) বঙ্গবন্ধু
উত্তর – (গ) লর্ড কার্জন
২৯. কানে কলম গুঁজে দুনিয়া খোঁজেন – (ক) প্রাবন্ধিক (খ) দার্শনিক (গ) গল্পকার (ঘ) নাট্যকার
উত্তর – (খ) দার্শনিক
৩০. ‘সিজার যে কলমটি দিয়ে কাসকাকে আঘাত করেছিলেন, তোর পোশাকি নাম – (ক) রিজার্ভার (খ) স্টাইলাস (গ) পার্কার (ঘ) পাইলট
উত্তর – (খ) স্টাইলাস
৩১. ‘কুইল’ হল – (ক) খাগের কলম (খ) পালকের কলম (গ) খাগড়ার কলম (ঘ) কঞ্চির কলম
উত্তর – (খ) পালকের কলম
৩২. ‘… আমি যদি __________আগে জন্মাতাম।”– শূন্যস্থান পূরণ করো । – (ক) জুলিয়াস সিজারের (খ) রবীন্দ্রনাথের (গ) চৈতন্যদেবের (ঘ) জিশু খ্রিস্টের
উত্তর – (ঘ) জিশু খ্রিস্টের
৩৩. নীলনদের তীর থেকে ভেঙে নিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে – (ক) নল-খাগড়া (খ) গাছের ডাল (গ) ফুলের কুঁড়ি (ঘ) ফলের বীজ
উত্তর – (ক) নল-খাগড়া
৩৪. ‘সেই আমার কলম।’ – ‘সেই’ হল – (ক) নল-খাগড়া (খ) হাড় (গ) পালক (ঘ) ব্রোঞ্জের শলাকা
উত্তর – (খ) হাড়
৩৫. চিনারা চিরকালই লেখার জন্য ব্যবহার করে আসছে – (ক) তুলি (খ) ব্রোঞ্জের শলাকা (গ) হাড় (ঘ) নল-খাগড়া
উত্তর – (ক) তুলি
৩৬. হাড়কে কলম বানিয়ে লিখত – (ক) সুমেরীয়রা (খ) ইংরেজরা (গ) চিনারা (ঘ) ফিনিসীয়রা
উত্তর – (ঘ) ফিনিসীয়রা
৩৭. বর্তমানে খাগের কলমের দেখা পাওয়া যায় – (ক) পরীক্ষার সময়ে (খ) অন্নপ্রাশনের সময় (গ) সরস্বতী পুজোর সময় (ঘ) দুর্গাপুজার সময়
উত্তর – (গ) সরস্বতী পুজোর সময়
৩৮. এখন পালকের কলম দেখা যায় – (ক) পুরোনো দিনের তৈলচিত্রে (খ) মিউজিয়ামে (গ) গ্রন্থাগারে (ঘ) অফিসে
উত্তর – (ক) পুরোনো দিনের তৈলচিত্রে
৩৯. দোয়াতে গোঁজা পালকের কলম দেখা যায় – (ক) রবীন্দ্রনাথের ছবিতে (খ) জিশু খ্রিস্টের ছবিতে (গ) জুলিয়াস সিজারের ছবিতে (ঘ) কেরি সাহেবের ছবিতে
উত্তর – (ঘ) কেরি সাহেবের ছবিতে
৪০. পালক কেটে কলম তৈরি করার যন্ত্রটি ছিল – (ক) পেনসিল সার্পনারের মতো (খ) সেফটি রেজারের মতো (গ) ট্রিমারের মতো (ঘ) হিরে কাটার যন্ত্রের মতো
উত্তর – (ক) পেনসিল সার্পনারের মতো
৪১. কলকাতার চৌরঙ্গিতে ফেরিওয়ালাদের প্রতি তিনজনের মধ্যে একজনের পেশা হল – (ক) ইঁদুর মারার বিষ বিক্রি (খ) কলম বিক্রি (গ) ফাউন্টেন পেন বিক্রি (ঘ) কালি বিক্রি
উত্তর – (খ) কলম বিক্রি
৪২. পায়ের মোজায় কলম গোঁজা ছিল – (ক) দারোগাবাবুর (খ) শরৎচন্দ্রের (গ) কাসকার (ঘ) জুলিয়াস সিজারের
উত্তর – (ক) দারোগাবাবুর
৪৩. লেখকের দেখা দারোগাবাবুর কলম গোঁজা ছিল – (ক) প্যান্টের পকেটে (খ) পায়ের মোজায় (গ) মাথার টুপিতে (ঘ) জামার পকেটে
উত্তর – (খ) পায়ের মোজায়
৪৪. কোনো কোনো অতি আধুনিক ছেলের কলম থাকে – (ক) বুক পকেটে (খ) পায়ের মোজায় (গ) মাথার চুলে (ঘ) কাঁধের ছোট্ট পকেটে
উত্তর – (ঘ) কাঁধের ছোট্ট পকেটে
৪৫. চুলে কলম ধারণ করা মহিলা যাত্রী চড়েছিলেন – (ক) বাসে (খ) ট্রেনে (গ) ট্রামে (ঘ) স্টিমারে
উত্তর – (গ) ট্রামে
৪৬. কালির অক্ষর নাইকো পেটে, চন্ডী পড়েন – (ক) মাঠেঘাটে (খ) কালীঘাটে (গ) শ্মশানঘাটে (ঘ) বেলুড় মঠ
উত্তর – (খ) কালীঘাটে
৪৭. বিখ্যাত লেখক শৈলজানন্দের ফাউন্টেন পেনের সংগ্রহ ছিল –(ক) এক ডজন (খ) দুই ডজন (গ) তিন ডজন (ঘ) চার ডজন
উত্তর – (খ) দুই ডজন
৪৮. এক সময় লেখা শুকোনো হত যা দিয়ে তা হল –(ক) বালি (খ) ব্লটিং পেপার (গ) চকের গুঁড়ো (ঘ) শুকোনো কাপড়
উত্তর – (ক) বালি
৪৯. ফাউন্টেন পেনের আদি নাম ছিল – (ক) ডট পেন (খ) ঝরনা কলম (গ) রিজার্ভার পেন (ঘ) নিব পেন
উত্তর – (গ) রিজার্ভার পেন
৫০. ব্লটিং পেপারের আগে লেখা শুকনো করা হত কী দিয়ে ? – (ক) তালপাতা দিয়ে (খ) উত্তাপ দিয়ে (গ) বালি দিয়ে (ঘ) কাপড় দিয়ে
উত্তর – (গ) বালি দিয়ে
৫১. সাহিত্যিক শৈলজানন্দের সংগ্রহে ছিল – (ক) ২৪টি কলম (খ) ২৭টি কলম (গ) ২২টি কলম (ঘ) ২৬টি কলম
উত্তর – (ক) ২৪টি কলম
৫২. ফাউন্টেন পেন-এর ‘ঝরনা কলম’ নামকরণটি করেন সম্ভবত – (ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (খ) শরৎচন্দ্র (গ) শৈলজানন্দ (ঘ) সুভো ঠাকুর
উত্তর – (ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
৫৩. ‘তা লেখককে নেশাগ্রস্ত করে।’ – কোন পেন লেখককে নেশাগ্রস্ত করে ? – (ক) পার্কার পেন (খ) পাইলট পেন (গ) ফাউন্টেন পেন (ঘ) শেফার্ড পেন
উত্তর – (গ) ফাউন্টেন পেন
৫৪. শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় ফাউন্টেন পেন সংগ্রহের নেশা পেয়েছিলেন – (ক) রবীন্দ্রনাথের কাছে (খ) বঙ্কিমচন্দ্রের কাছে (গ) শরৎচন্দ্রের কাছে (ঘ) বিভূতিভূষণের কাছে
উত্তর – (গ) শরৎচন্দ্রের কাছে
৫৫. ‘ফাউন্টেন পেন’ সংগ্রহ করতেন – (ক) সুভো ঠাকুর (খ) সত্যজিৎ রায় (গ) অন্নদাশঙ্কর রায় (ঘ) শৈলজানন্দ
উত্তর – (ঘ) শৈলজানন্দ
৫৬. ‘কাচের দোয়াতে আমরা কালি বানাতাম’– (ক) উনুনের ছাই দিয়ে (খ) পোড়া আতপ চাল দিয়ে (গ) বোতলের কালি গুলে (ঘ) বড়ি-গুলি দিয়ে
উত্তর – (ঘ) বড়ি-গুলি দিয়ে
৫৭. বিদেশি ফাউন্টেনের বিজ্ঞাপনে নিব ছিল – (ক) পাঁচশো রকমের (খ) সাতশো রকমের (গ) তিনশো রকমের (ঘ) চারশো রকমের
উত্তর – (খ) সাতশো রকমের
৫৮. ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক হলেন – (ক) অ্যালবার্ট আইনস্টাইন (খ) অ্যালফ্রেড নোবেল (গ) টমাস আলভা এডিসন (ঘ) লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান
উত্তর – (ঘ) লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান
৫৯. প্রাবন্ধিক ফাউন্টেন পেন কিনতে গিয়েছিলেন কলকাতার – (ক) বাগবাজারে (খ) শ্যামবাজারে (গ) কলেজ স্ট্রিটে (ঘ) লিন্ডসে স্ট্রিটে
উত্তর – (গ) কলেজ স্ট্রিটে
৬০. কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের নামি দোকান থেকে প্রাবন্ধিক কিনেছিলেন – (ক) পার্কার (খ) শেফার্ড (গ) সোয়ান (ঘ) পাইলট
উত্তর – (ঘ) পাইলট
৬১. পাইলট হল – (ক) জাপানি কলম (খ) চাইনিজ কলম (গ) আমেরিকান কলম (ঘ) ভারতীয় কলম
উত্তর – (ক) জাপানি কলম
৬২. প্রাবন্ধিক বাঁশের বা কঞ্চির কলমকে ছুটি দেন – (ক) কলেজে ভরতির পর (খ) হাইস্কুলে ভরতির পর (গ) চাকরি পাওয়ার পর (ঘ) শহরে আসার পর
উত্তর – (খ) হাইস্কুলে ভরতির পর
৬৩. দোয়াতে বা বোতলে তৈরি একটি কালির নাম – (ক) সজল (খ) আদর্শ লেখা (গ) আনিশিলেখা (ঘ) সুলেখা
উত্তর – (ঘ) সুলেখা
৬৪. কালি ট্যাবলেট বা বড়ি-গুলি পাওয়া যেত – (ক) দু-রকম (খ) তিন রকম (গ) বহু রকম (ঘ) চার রকম
উত্তর – (ক) দু-রকম
৬৫. গোরুর শিং বা কচ্ছপের খোল কেটে তৈরি হল – (ক) নিব (খ) দোয়াত (গ) কলম (ঘ) কলমদানি
উত্তর – (ক) নিব
৬৬. “সেগুলো সাজিয়ে রাখার আসবাব”– ‘সেগুলো’ হল – (ক) কালি-কলম (খ) দোয়াত-কলম (গ) নিব-কলম (ঘ) বলপেন
উত্তর – (খ) দোয়াত-কলম
৬৭. “তোমার সোনার দোয়াত কলম হোক।” – আশীর্বাদ করতেন – (ক) মাস্টারমশাইরা (খ) গুরুজনেরা (গ) বুড়োবুড়িরা (ঘ) বড়োরা
উত্তর – (গ) বুড়োবুড়িরা
৬৮. সুভো ঠাকুরের দোয়াত ছিল – (ক) রূপোর (খ) হিরের (গ) প্ল্যাটিনামের (ঘ) সোনার
উত্তর – (ঘ) সোনার
৬৯. সোনার অঙ্গ হিরের হৃদয়যুক্ত কলমের দাম – (ক) আড়াই হাজার পাউন্ড (খ) লক্ষ টাকা (গ) কোটি টাকা (ঘ) দশ লক্ষ টাকা
উত্তর – (ক) আড়াই হাজার পাউন্ড
৭০. শ্রীপান্থ যখন প্রবন্ধটি রচনা করেন তখন এক পাউন্ড সমান ছিল – (ক) ৮৫ টাকা (খ) ৭৫ টাকা (গ) ৬৫ টাকা (ঘ) ৯৫ টাকা
উত্তর – (খ) ৭৫ টাকা
৭১. সত্যজিৎ রায়ের সুস্থ সুন্দর নেশার মধ্যে একটি হল – (ক) কলম সংগ্রহের নেশা (খ) চিত্রশিল্প (গ) লিপিশিল্প (ঘ) সিনেমা শিল্প
উত্তর – (গ) লিপিশিল্প
৭২. ‘ডমরুধর’-এর লেখক – (ক) শরৎচন্দ্র (খ) বঙ্কিমচন্দ্র (গ) ত্রৈলোক্যনাথ (ঘ) প্রেমচাঁদ
উত্তর – (গ) ত্রৈলোক্যনাথ
৭৩. “মুঘল দরবারে একদিন তাঁদের কত না খাতির,” – যাঁদের খাতির তাঁরা হলেন – (ক) ওস্তাদ কলমবাজ (খ) সেনাপতি (গ) পন্ডিত ব্রাহ্মণ (ঘ) কবি
উত্তর – (ক) ওস্তাদ কলমবাজ
৭৪. নিজের হাতের কলমের আঘাতে মৃত্যু হয়েছিল যে লেখকের, তাঁর নাম – (ক) বনফুল (খ) পরশুরাম (গ) ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় (ঘ) শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়
উত্তর – (গ) ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়
৭৫. “লাঠি তোমার দিন ফুরাইয়াছে।” – কে লিখেছিলেন ? – (ক) শরৎচন্দ্র (খ) শ্রীপান্থ (গ) বঙ্কিমচন্দ্র (ঘ) রবীন্দ্রনাথ
উত্তর – (গ) বঙ্কিমচন্দ্র
৭৬. ‘কঙ্কাবতী’-র লেখক হলেন – (ক) তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় (খ) ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় (গ) ভবানীপ্রসাদ মজুমদার (ঘ) শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়
উত্তর – (খ) ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়
৭৭. ‘অনেক ধরে ধরে টাইপ-রাইটারে লিখে গেছেন’ – (ক) ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় ধ্যায় (খ) জয় গোস্বামী (গ) অন্নদাশঙ্কর রায় (ঘ) সুভাষ মুখোপাধ্যায়
উত্তর – (গ) অন্নদাশঙ্কর রায়
৭৮. যাঁরা ওস্তাদ কলমবাজ তাঁদের বলা হয় – (ক) টেলিগ্রাফিস্ট (খ) ক্যালিগ্রাফিস্ট (গ) পলিগ্রাফিস্ট (ঘ) ব্যালিগ্রাফিস্ট
উত্তর – (খ) ক্যালিগ্রাফিস্ট
৭৯. ‘কলমকে বলা হয়’ – কী বলা হয় ? – (ক) সবচেয়ে শক্তিধর (খ) শক্তিধর (গ) মানুষের চেয়েও শক্তিধর (ঘ) তলোয়ারের চেয়েও শক্তিধর
উত্তর – (ঘ) তলোয়ারের চেয়েও শক্তিধর
৮০. কালি-কলমকে জাদুঘরে পাঠাবে বলে প্রতিজ্ঞা করেছে – (ক) কম্পিউটার (খ) ডট পেন (গ) টাইপ-রাইটার (ঘ) ইনটারনেট
উত্তর – (ক) কম্পিউটার
৮১. বাংলা মুলুকে লিপি-কুশলীদের সম্মান করতেন – (ক) জ্ঞানীগুণীরা (খ) ইংরেজরা (গ) মোঘলরা (ঘ) রাজা-জমিদাররা
উত্তর – (ঘ) রাজা-জমিদাররা
৮২. চারখন্ড রামায়ণ কপি করে একজন লেখক অষ্টাদশ শতকে কত টাকা পেয়েছিলেন ? – (ক) সাত টাকা (খ) আট টাকা (গ) নয়-টাকা (ঘ) দশ টাকা
উত্তর – (ক) সাত টাকা
৮৩. উনবিংশ শতাব্দীতে বত্রিশ হাজার অক্ষর লেখানো যেত – (ক) ষোলো আনায় (খ) চোদ্দো আনায় (গ) বারো আনায় (ঘ) দু-টাকায়
উত্তর – (গ) বারো আনায়
৮৪. গত ক-বছর ধরে টাইপ-রাইটার ধরেছেন – (ক) অন্নদাশঙ্কর রায় (খ) সুভাষ মুখোপাধ্যায় (গ) ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় (ঘ) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
উত্তর – (খ) সুভাষ মুখোপাধ্যায়
৮৫. “সেই আঘাতেরই পরিণতি নাকি তাঁর মৃত্যু।”– কোন আঘাতের ? – (ক) ছুরির (খ) বুলেটের (গ) কলমের (গ) তরবারির
উত্তর – (গ) কলমের
৮৬. শেষ পর্যন্ত নিবের কলমের মান-মর্যাদা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন – (ক) সুকুমার রায় (খ) উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী (গ) সন্দীপ রায় (ঘ) সত্যজিৎ রায়
উত্তর – (ঘ) সত্যজিৎ রায়
মার্ক – 1 ( SAQ )
১. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধটির স্রষ্টা কে ?
উত্তর – প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ ওরফে নিখিল সরকার ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধের স্রষ্টা।
২. ‘শ্রীপান্থর আসল নাম কী ? [অথবা], শ্রীপান্থের প্রকৃত নাম কী ?
উত্তর – শ্রীপান্থর আসল বা প্রকৃত নাম নিখিল সরকার ।
৩. ‘কথায় বলে’ – কথায় কী বলা হয় ?
উত্তর – কথায় বলে – “কালি কলম মন, লেখে তিন জন।”
৪. “লেখে তিন জন”– এই ‘তিন জন’ বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে ? [অথবা], ‘লেখে তিন জন’ – তিনজন কে কে ?
উত্তর – শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধ থেকে উদ্ধৃত আলোচ্য অংশে ‘তিন জন’ বলতে বোঝানো হয়েছে-যে কালিতে প্রাবন্ধিক লেখেন সেই ‘কালি’-কে, তাঁর ‘কলম’-কে ও প্রাবন্ধিকের ‘মন’-কে।
৫. “আমি যেখানে কাজ করি সেটা লেখালেখির আপিস।” – ‘লেখালেখির আপিস’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?
উত্তর – প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ ‘আনন্দবাজার’ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আলোচ্য অংশে ‘লেখালেখির আপিস’ বলতে এই ‘আনন্দবাজার’ পত্রিকার দফতরকেই বোঝানো হয়েছে।
৬. “কারও সঙ্গে কলম নেই।”– কলম ছাড়া সকলে লেখে কীভাবে ? [অথবা], ‘তবেই বিপদ’ – কখন, কীসের বিপদ ?
উত্তর – প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থর সংবাদপত্রের অফিস অর্থাৎ ‘লেখালেখির আপিস’ কেউ কলম ব্যবহার করেন না, তা সকলে কম্পিউটারে লেখালেখি করেন যা কী-বোর্ডের সহায়তায় পরদায় ফুটে ওঠে ।
৭. “দায়সারা ভাবে কোনও মতে সেদিনকার মতো কাজ সারতে হয়।” – কোন পরিস্থিতিতে শ্রীপান্থ দায়াসারাভাবে সেদিনকার কাজ সারতেন ?
উত্তর – শ্রীপান্থ যেদিন অফিসে কলম নিতে ভুলে যেতেন সেদিন তিনি বিপদে পড়তেন। কারণ, অন্য কোনো সহকর্মীর কাছে কলম চেয়ে তিনি পেতেন না। যদি-বা একটা ভোতা-গলা শুকনো কলম পেতেন, তা দিয়ে তাঁকে দায়সারাভাবে কাজ সারতে হত।
৮. ‘বাংলায় একটা কথা চালু ছিল’ – কোন কথা চালু ছিল ? [অথবা], বাংলায় একটা কথা চালু ছিল’ – কথাটি কী ? [অথবা], ‘বাংলায় একটা কথা চালু ছিল’ – যে কথাটা চালু ছিল সেটা কী?
উত্তর – শ্রীপান্থ তাঁর হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধে বাংলায় যে কথাটি চালু ছিল বলে উল্লেখ করেছেন সেটি হল-“কালি নেই, কলম নেই, বলে আমি মুনশি।”
৯. ‘তাঁরা হয়তো বুঝবেন কলমের সঙ্গে আমাদের কী সম্পর্ক।’-তাঁরা কারা ?
উত্তর – প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থর জন্মের প্রায় সমকালে যাঁরা যাঁরা প্রাবন্ধিকের মতোই ‘অজ-পাড়া-গাঁয়ে জন্মেছেন’, ‘তারা’ বলতে প্রশ্নোক্ত অংশে তাঁদেরকেই বোঝানো হয়েছে ।
১০. “বড়োরা শিখিয়ে দিয়েছিলেন,’কী শিখিয়ে দিয়েছিলেন ?
উত্তর – শ্রীপান্থর বাল্যকালে তিনি যখন বাঁশের কঞ্চি দিয়ে কলম তৈরি করতেন তখন তাঁকে বড়োরা শিখিয়ে দিয়েছিলেন যে, কলম থেকে কালি যাতে একসঙ্গে গড়িয়ে না পড়ে তার জন্য কলমের মুখটা অর্থাৎ কঞ্চির ছুঁচোলো মুখটি চিরে দিতে হয়।
১১. লেখক শ্রীপান্থ ছোটোবেলায় কীসে ‘হোম-টাস্ক’ করতেন ?
উত্তর – প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ ছোটোবেলায় স্কুলে পড়ার সময় কলাপাতাকে কাগজের মতো নির্দিষ্ট মাপে কেটে নিয়ে তার উপর ‘হোম-টাস্ক’ করতেন।
১২. “আমরা ফেরার পথে কোনও পুকুরে তা ফেলে দিয়ে আসতাম।” – বক্তা কী পুকুরে ফেলে দিয়ে আসত ?
উত্তর – বক্তা অর্থাৎ স্বয়ং প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ পাঠশালায় পড়াকালীন যে কলাপাতায় স্কুলের ‘হোম-টাস্ক’ করতেন সেই কলাপাতাগুলিই বাড়ি ফেরার সময় পুকুরে ফেলে দিয়ে আসতেন।
১৩. “আমরা ফেরার পথে কোনও পুকুরে তা ফেলে দিয়ে আসতাম।”- বক্তা কেন তা পুকুরে ফেলে দিতেন ? [অথবা], ‘পুকুরে তা ফেলে দিয়ে আসতাম।’ – পুকুরে ফেলার কারণ কী ?
উত্তর – গ্রামে প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী গোরুকে অক্ষর খাওয়ানো পাপের সমতুল্য, তাতে অমঙ্গল হতে পারে। তাই মাস্টারমশাইয়ের দেখে ফেরত দেওয়া কলাপাতাগুলি প্রাবন্ধিক ও তাঁর সহপাঠীরা কোনো-না-কোনো পুকুরের জলে ফেলে দিতেন।
১৪. ‘ওর কাছে ক’অক্ষরগোমাংস।’ – ‘ওর’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?
উত্তর – আলোচ্য অংশে ‘ওর’ বলতে যে-কোনো অক্ষরজ্ঞানহীন ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে।
১৫. “গোরুকে অক্ষর খাওয়ানোও নাকি পাপ।”– তাই লেখকেরা শৈশবে কী করতেন ?
উত্তর – প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থর শৈশবে প্রশ্নোদ্ভূত ধারণাটি প্রচলিত ছিল। তাই তাঁরা তাঁদের ‘হোম-টাস্ক’ করা কলাপাতাগুলি মাস্টারমশাইকে দেখানোর পর বাড়ি ফেরার পথে ছিঁড়ে কোনো পুকুরে ফেলে দিতেন।
১৬. ‘প্রাচীনেরা বলতেন‘- কী বলতেন ? [অথবা], কালি তৈরির উৎকৃষ্ট পদ্ধতি সম্পর্কে প্রচলিত প্রবাদটি লেখো ।
উত্তর – কালি তৈরি সম্পর্কে প্রাচীনেরা বলতেন- “তিল ত্রিফলা সিমুল ছালা /ছাগ দুগ্ধে করি মেলা/লৌহপাত্রে লোহায় ঘসি/ছিঁড়ে পত্র না ছাড়ে মসি।” -এটিই হল কালি তৈরি উৎকৃষ্ট পদ্ধতি সম্বন্ধে প্রচলিত প্রবাদ ।
১৭. “তিল ত্রিফলা সিমুল ছালা“- ত্রিফলা কী ?
উত্তর – ত্রিফলা হল একটি অতি প্রসিদ্ধ আয়ুর্বেদিক বস্তু বিশেষ যা ‘ত্রি’ ‘ফল’ অর্থাৎ তিনটি ফলের সমাহার। এই তিনটি ফল হল আমলকী, বহেড়া ও হরীতকী।
১৮. ‘এই ছিল তাঁদের ব্যবস্থাপত্র‘ – ভালো কালি তৈরির ব্যবস্থাপত্র কী ছিল ? [অথবা], কালিকে দীর্ঘস্থায়ী করার পদ্ধতিটি কী ছিল ?
উত্তর – ভালো কালি তৈরির প্রাচীনদের বলা ব্যবস্থাপত্রটি ছিল-তিল, ত্রিফলা ও শিমুলছাল ছাগলের দুধে মিশিয়ে সেই মিশ্রণটি লোহার পাত্রে রাখতে হত, তারপর সেই পাত্রের মিশ্রণটিকে লোহা দিয়ে ঘষতে হত। এভাবে কালি বানালে কালি দীর্ঘস্থায়ী হত।
১৯. ‘তাই নিয়ে আমাদের প্রথম লেখালেখি।‘ – কী নিয়ে লেখকদের প্রথম লেখালেখি ? [ অথবা], ‘তাই নিয়ে আমাদের প্রথম লেখালেখি।‘- বক্তার প্রথম লেখালেখির উপকরণগুলি কী কী ?
উত্তর – লেখক শ্রীপান্থ যখন প্রথম ‘লেখালেখি’ শুরু করেন তখন লেখার জন্য কলাপাতা, ঘরে তৈরি কালি, মাটির দোয়াত ও বাঁশের কঞ্চির কলম ব্যবহৃত হত। সুতরাং, এগুলিই ছিল প্রাবন্ধিকের প্রথম লেখালেখির উপকরণ।
২০. “এত বছর পরে সেই কলম যখন হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম, তখন মনে কষ্ট হয় বইকী! “- কেন কলম হাতছাড়া হতে চলেছে ?
উত্তর – কম্পিউটারের বহুল ব্যবহারের জন্য কলম প্রায় অচল বস্তুর তালিকায় স্থান নিয়ে হাতছাড়া হতে চলেছে ।
২১. ‘তখন মনে কষ্ট হয় বইকী।’ – কষ্ট হওয়ার কারণ কী ? [অথবা], ‘তখন মনে কষ্ট হয় বইকী।‘ – কেন বক্তার কষ্ট হচ্ছে ?
উত্তর – প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ ছিলেন কালি ও কলমের ভক্ত। কিন্তু যন্ত্রযুগের দাক্ষিণ্যে লেখালেখির জগতে কম্পিউটারের আধিপত্য বিস্তারের ফলে কলম ক্রমশ অপ্রয়োজনীয় হতে হতে হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ কারণেই বক্তা অর্থাৎ প্রাবন্ধিক কষ্ট পেয়েছেন।
২২. “বাবু কুইল ড্রাইভারস।“- এরকম নামকরণের কারণ কী ?
উত্তর – লর্ড কার্জন বাঙালি সাংবাদিকদের গরম গরম ইংরেজি দেখে তাঁদের নাম দিয়েছিলেন-‘বাবু কুইল ড্রাইভারস’। অর্থাৎ, পালকের কলম চালক বাবু।
২৩. “কলম সেদিন খুনিও হতে পারে বইকী”- কোন প্রসঙ্গে বলা হয়েছে ?
উত্তর – সিজার একটি স্টাইলাস বা ব্রোঞ্জের ধারালো শলাকা দিয়ে কাসকাকে আঘাত করেছিলেন। সেই আঘাতে কাসকা মারা যান। এই প্রসঙ্গে আলোচ্য উক্তিটি করা হয়েছে।
২৪. ‘কুইল‘ কী ?
উত্তর – পালকের কলমকে ইংরেজিতে ‘কুইল’ বলা হয় ।
২৫. “কলম তাদের কাছে আজ অস্পৃশ্য।”- কেন অস্পৃশ্য ?
উত্তর – কলম এতই সস্তা এবং সর্বভোগ্য হয়ে গেছে যে পকেটমাররাও আজ আর কলম চুরি করে না। কলম তাদের কাছে এখন অস্পৃশ্য।
২৬. দার্শনিক তাকেই বলি’ – প্রাবন্ধিক কাকে ‘দার্শনিক‘ বলেছেন ?
উত্তর – প্রাবন্ধিক কানে কলম গুঁজে দুনিয়া খোঁজা ব্যক্তিকে ‘দার্শনিক’ বলেছেন ।
২৭. ফিনিসীয়রা কী দিয়ে কলম বানাতেন ?
উত্তর – ফিনিসীয়রা নল-খাগড়া দিয়ে কলম বানাতেন ।
২৮. ‘স্টাইলাস’ কী?
উত্তর – স্টাইলাস হল লেখার জন্য ব্যবহৃত ব্রোঞ্জের শলাকা। রোম সাম্রাজ্যের অধিপতি জুলিয়াস সিজারও লেখার জন্য এই বন্ধুটি ব্যবহার করতেন।
২৯. “সেই আমার কলম।”– কারা, কী কলম হিসেবে ব্যবহার করত ?
উত্তর – ফিনিসীয়রা বন্যপ্রান্ত থেকে কুড়িয়ে পাওয়া হাড়কে কলম হিসেবে ব্যবহার করত।
৩০. “জিশু খ্রিস্টের আগে জন্মালে কলম হিসেবে লেখককে কী ব্যবহার করতে হত ?
উত্তর – জিশু খ্রিস্টের আগে জন্মালে কলম হিসেবে লেখককে ব্যবহার করতে হত নল-খাগড়া, হাড় কিংবা ব্রোঞ্জের শলাকা অর্থাৎ স্টাইলাস।
৩১. সরস্বতী পুজোর সময় কীসের কলম ও কেমন কালি দেখা যায় ?
উত্তর – সরস্বতী পুজোর সময় খাগের কলম এবং কাচের দোয়াতে কালির বদলে দুধ দেখা যায়।
৩২. কোথায় দোয়াতে গোঁজা পালকের কলম দেখা যায় ?
উত্তর – উইলিয়াম জোনস কিংবা কেরি সাহেবের স-মুনশি ছবিতে গোঁজা পালকের কলম দেখা যায় ।
৩৩. সাহেবরা কীজন্য যন্ত্র বের করেছিল ?
উত্তর – পালক কেটে কলম তৈরি করার জন্য সাহেবরা যন্ত্র বের করেছিল ।
৩৪. বল পেনের অপর নাম কী ?
উত্তর – বল পেনের অপর নাম ডট পেন ।
৩৫. পণ্ডিতমশাইয়ের কলম কীজন্য বিখ্যাত ছিল ?
উত্তর – পণ্ডিতমশাইয়ের কলম কানে গুঁজে রাখার জন্য বিখ্যাত ছিল ।
৩৬. “কালির অক্ষর নাইকো পেটে, চন্ডী পড়েন কালীঘাটে।” – অর্থ কী?
উত্তর – প্রশ্নোক্ত প্রবাদ বাক্যটির অর্থ-নিরক্ষর ব্যক্তি অথচ কালীঘাটে বসে চন্ডীপাঠ করছেন ।
৩৭. কলম নিয়ে হাতসাফাইয়ের খেলা কারা দেখায় ?
উত্তর – কলম নিয়ে হাতসাফাইয়ের খেলা দেখায় পকেটমারেরা ।
৩৮. পায়ের মোজায় কলম গোঁজা দারোগাবাবুকে কে, কখন দেখেছিলেন ?
উত্তর – পায়ের মোজায় কলম গোঁজা দারোগাবাবুকে প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ ওরফে নিখিল সরকার তাঁর ছেলেবেলায় দেখেছিলেন।
৩৯. ফাউন্টেন পেনকে এককালে বাংলায় কী বলা হত ?
উত্তর – ফাউন্টেন পেনকে এককালে বাংলায় ঝরনা কলম বলা হত ।
৪০. দুজন সাহিত্যিকের নাম করো যাদের নেশা ছিল ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ করাৎ।
উত্তর – ফাউন্টেন পেন সংগ্রহ করা যাঁদের নেশা ছিল, এমন দুজন সাহিত্যিক হলেন – (ক) শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় (খ) শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ।
৪১. ‘দার্শনিক তাকেই বলি।’ – কাকে বক্তা দার্শনিক বলেন ?
উত্তর – যিনি কানে কলম গুঁজে দুনিয়া খোঁজেন, বস্তা দার্শনিক তাঁকেই বলেন ।
৪২. “নামটা রবীন্দ্রনাথের দেওয়াও হতে পারে।” – কোন নাম ?
উত্তর – ফাউন্টেন পেনকে এককালে বাংলায় বলা হত ঝরনা কলম । এই নামটি রবীন্দ্রনাথের দেওয়া হতে পারে বলে মনে করেছেন লেখক ।
৪৩. আদিতে ফাউন্টেন পেনের নাম কী ছিল ?
উত্তর – আদিতে ফাউন্টেন পেনের নাম ছিল ‘রিজার্ভার পেন ’।
৪৪. “তাঁরও ছিল ফাউন্টেন পেনের নেশা।” – কার ?
উত্তর – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়েরও ছিল ফাউন্টেন পেনের নেশা ।
৪৫. শ্রীপান্থদের স্কুলজীবনে কী কী কালি কিনতে পাওয়া যেত ?
উত্তর – শ্রীপান্থদের স্কুলজীবনে কাজল কালি, সুলেখা কালি ইত্যাদি কিনতে পাওয়া যেত।
৪৬. পণ্ডিতদের মতে কলমের দুনিয়ায় কে বিপ্লব আনে ?
উত্তর – পন্ডিতদের মতে, কলমের দুনিয়ায় বিপ্লব আনে ফাউন্টেন পেন বা ঝরনা কলম ।
৪৭. প্রাবন্ধিক প্রথম কোথা থেকে ফাউন্টেন পেন কেনেন ?
উত্তর – প্রাবন্ধিক প্রথম ফাউন্টেন পেন কেনেন কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের একটি নামি দোকান থেকে।
৪৮. প্রাবন্ধিকের কেনা প্রথম ফাউন্টেন পেনটি কোন জাতীয় ছিল ?
উত্তর – প্রাবন্ধিকের কেনা প্রথম ফাউন্টেন পেনটি ছিল জাপানি পাইলট ।
৪৯. “খুবই টেকসই।”– কার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তর – গোরুর শিং কিংবা কচ্ছপের খোল কেটে তৈরি উন্নত ধরনের বিদেশি নিবগুলি খুবই টেকসই ছিল ।
৫০. ‘আমি ছিলাম কালি কলমের ভক্ত।’– উদ্ধৃতিটির অর্থ কী ?
উত্তর – উদ্ধৃতিটির অর্থ হল-প্রাবন্ধিক শ্রীপন্থ ওরফে নিখিল সরকার ছিলেন দোয়াত ও নিবের কলমের ভক্ত। একে তিনি বলেছেন-‘কালি-খেকো কলম’। এই কলম ছিল তাঁর প্রথম পছন্দ।
৫১. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’-এ বর্ণিত সবচেয়ে দামি কলমটির কত দাম ?
উত্তর – ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’-এ বর্ণিত সবচেয়ে দামি কলমটির দাম আড়াই হাজার পাউন্ড।
৫২. ‘তাই এই ব্যবস্থা।’– কী ব্যবস্থা ?
উত্তর – পালকের কলম তাড়াতাড়ি ভোঁতা হয়ে যায়। তাই ফাউন্টেন পেনের নিবকে টেকসই করার জন্য গোরুর শিং বা কচ্ছপের খোল কেটে তা তৈরি হত।
৫৩. দোয়াত কত রকমের হতে পারে বলে প্রাবন্ধিক উল্লেখ করেছেন ?
উত্তর – দোয়াত বিভিন্ন রকমের উপাদান দিয়ে তৈরি হত। কাচ, কাট-গ্লাস, পোর্সেলিন, শ্বেতপাথর, জেড, পিতল, ব্রোঞ্জ, ভেড়ার শিং ইত্যাদি। এমনকি, সোনা দিয়েও দোয়াত তৈরি হত ।
৫৪. গ্রামের বুড়োবুড়িরা কখন, কী আশীর্বাদ করতেন ?
উত্তর – গ্রামে কেউ দু-একটা পরীক্ষায় পাস করতে পারলে বুড়ো বুড়িরা আশীর্বাদ করতেন- “বেঁচে থাকো বাছা, তোমার সোনার দোয়াত কলম হোক ।”
৫৫. ‘সোনার দোয়াত কলম যে সত্যই হতো’ তা লেখক কীভাবে জেনেছিলেন ?
উত্তর – সুভো ঠাকুরের দোয়াত সংগ্রহ দেখে প্রাবন্ধিক জেনেছিলেন যে, সোনার দোয়াত কলম সত্যই হত ।
৫৬. টাকার কুমিরদের খুশি করার জন্য কী ধরনের কলম তৈরি হয়েছিল ?
উত্তর – টাকার কুমিরদের খুশি করার জন্য তৈরি হয়েছিল সোনার অঙ্গ, হিরের হৃদয়যুক্ত কলম, যার দাম আড়াই হাজার পাউন্ড।
৫৭. “হিসাব করে দেখো কত টাকা!”– কীসের হিসাব ?
উত্তর – এক পাউন্ড সমান পঁচাত্তর টাকা। তাহলে আড়াই হাজার পাউন্ড সমান কত হয় সেই হিসাবের কথা এখানে বলা হয়েছে ।
৫৮. দোয়াতের কালি দিয়ে লিখেছেন, এমন কয়েকজন কবি-সাহিত্যিকের নাম লেখো ।
উত্তর – দোয়াতের কালি দিয়ে লিখে গেছেন, এমন কয়েকজন কবি-সাহিত্যিক হলেন- শেকসপিয়র, দান্তে, মিল্টন, কালিদাস, ভবভূতি, কাসীরাম দাম, কৃত্তিবাস ওঝা, রবীন্দ্রনাথ, বঙ্কিমচন্দ্র, শরৎচন্দ্র প্রমুখ।
৫৯. “সেগুলো সাজিয়ে রাখার আসবাব।”– কোনগুলি সাজিয়ে রাখার আসবাব ?
উত্তর – দোয়াত-কলমকে সাজিয়ে রাখার আসবাব বলা হয়েছে ।
৬০. ফাউন্টেন পেনের নিবকে শক্ত ও সৌখিন করার জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হত ?
উত্তর – ফাউন্টেন পেনের নিবকে শক্ত করার জন্য গোরুর শিং কিংবা কচ্ছপের খোল কেটে নিব তৈরি হত। এ ছাড়া হিরে, প্ল্যাটিনাম, সোনা দিয়ে মুড়ে তাকে আরও শক্ত ও দামি করে তোলা হত।
৬১. দোকানদার লেখককে কলম বিক্রি করার আগে কী জাদু দেখিয়েছিলেন ?
উত্তর – দোকানদার লেখক শ্রীপাদকে ‘জাদু পাইলট’ বিক্রির আগে সেটির খাপ খুলে নিয়ে হঠাৎ টেবিলের পাশে রাখা একটি কাঠের বোর্ডে ছুড়ে মারেন। তারপর তিনি দেখান ওই পেনটির কোনো ক্ষতি হয়নি, নিব ঠিক আছে ও স্বচ্ছন্দে লেখা যাচ্ছে। তিনি আসলে কলমটির টেকসই সংরূপের জাদু দেখান।
৬২. শেষ পর্যন্ত নিবের কলমের মান–মর্যাদা কে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন ?
উত্তর – শেষ পর্যন্ত নিবের কলমের মান-মর্যাদা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন একমাত্র সত্যজিৎ রায় ।
৬৩. “মুঘল দরবারে একদিন তাঁদের কত না খাতির,”- কাদের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তর – মোগল দরবারে একদিন যাঁদের ভীষণ খাতির ছিল তাঁরা হলেন লিপি-কুশলী বা ক্যালিগ্রাফিস্ট ।
৬৪. ‘ক্যালিগ্রাফিস্ট‘ শব্দটির বাংলা প্রতিশব্দ কী ? কাদের ক্যালিগ্রাফিস্ট বলা হত ?
উত্তর – ‘ক্যালিগ্রাফিস্ট’ শব্দটির বাংলা প্রতিশব্দ হল-লিপি-কুশলী। যাঁরা ওস্তাদ কলমবাজ বা পুথি নকল করতেন, সেই লিপিকরদের ‘ক্যালিগ্রাফিস্ট’ বলা হত।
৬৫. ‘তাঁর অনেক সুস্থ সুন্দর নেশার একটি ছিল‘- কার, কী নেশা ছিল ?
উত্তর – ‘তাঁর’ অর্থাৎ সত্যজিৎ রায়ের অনেক সুস্থ সুন্দর নেশার মধ্যে একটি ছিল লিপিশিল্প ।
৬৬. ত্রৈলোক্যনাথের দুটি রচনার নাম উল্লেখ করো ।
উত্তর – ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের দুটি রচনার নাম হল- ‘কঙ্কাবতী’ ও ‘ডমরুচরিত’।
৬৭. ‘তার সূচনা কিন্তু হাতে লেখা পান্ডুলিপির পাতায়।’ – কীসের সূচনার কথা বলা হয়েছে ?
উত্তর – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বেশি বয়সে চিত্রশিল্পী হিসেবে বিশ্বময় সম্মানিত হয়েছিলেন। এই চিত্রশিল্পের সূচনা হয়েছিল হাতে লেখা পান্ডুলিপির পাতায়।
৬৮. “সেই আঘাতেরই পরিণতি নাকি তাঁর মৃত্যু।” -কোন আঘাতের পরিণতির কথা বলা হয়েছে ?
উত্তর – হাতের কলম অসাবধানতাবশত বুকে ফুটে গিয়েছিল ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের। সেই আঘাতের পরিণতিতেই নাকি তাঁর মৃত্যু হয়।
৬৯. “সমানি সম শীর্ষাণি ঘনানি বিরলানি চ।”– কথাটির বাংলা অর্থ লেখো ।
উত্তর – “সমানি সম শীর্ষাণি ঘনানি বিরলানি চ।”-কথাটির বাংলা অর্থ হল সব অক্ষর সমান, প্রতিটি ছত্র সুশৃঙ্খল ও পরিচ্ছন্ন ।
৭০. “আশ্চর্য, সবই আজ অবলুপ্তির পথে।”– কোন বিষয়ে লেখক এমন মন্তব্য করেছেন ?
উত্তর – কঞ্চির কলম, খাগের কলম, পালকের কলম, ফাউন্টেন পেন, তার বিচিত্র নিব, রকমারি দোয়াত-সবই আজ অবলুপ্তির পথে। কারণ কম্পিউটার তাদের জাদুঘরে পাঠানোর বন্দোবস্ত করেছে।
৭১. আধুনিক যুগে নিবের কলম ব্যবহার করতেন কোন বিখ্যাত বাঙালি ?
উত্তর – আধুনিক যুগে নিবের কলম ব্যবহার করতেন বিখ্যাত বাঙালি সত্যজিৎ রায় ।
৭২. ‘চিরকালের জন্য তবে কী আর রইল?”– কেন এমন কথা বলা হয়েছে ?
উত্তর – কম্পিউটার মানুষের হাত থেকে কলম কেড়ে নেওয়ার উপক্রম করেছে। তাই এই পরিস্থিতিতে ফাউন্টেন পেনের প্রতি অনুরক্ত লেখকের মনে হয়েছে, তাহলে মানুষের হাতে আর কী-ই বা থাকবে।
৭৩. “তাঁদের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করতেন।” – কারা, কাদের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করতেন ?
উত্তর – বাংলা-মুলুকে রাজা, জমিদাররা লিপি-কুশলীদের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করতেন।
৭৪. লিপিকরদের হাতের লেখা ও রোজগার কেমন ছিল ?
উত্তর – লিপিকরদের হাতের লেখা ছিল মুক্তোর মতো কিন্তু তাঁদের রোজগার ছিল সামান্য।
৭৫. “ফাউন্টেন পেনও আভাসে ইঙ্গিতে তা-ই বলতে চায়।” – কী বলতে চায় ?
উত্তর – কলমকে বলা হয় তলোয়ারের চেয়েও শক্তিধর।
৭৬. ‘ফরাসি কবির মতো বলেছি’– কে, কী বলেছেন ?
উত্তর – প্রাবন্ধিক ফরাসি কবির মতোই বলেছেন-“তুমি সবল, আমি দুর্বল। তুমি সাহসী, আমি ভীরু। তবু যদি আমাকে হত্যা করতে চাও, আচ্ছা, তবে তা-ই হোক। ধরে নাও আমি মৃত।”
৭৭. কাকে, কীভাবে খুনির ভূমিকায় দেখা গেছে ?
উত্তর – নিবের কলমকে ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের খুনির ভূমিকায় দেখা গেছে। কারণ হাতের খোলা কলমের নিব অসাবধানতাবশত বুকে ফুটে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয় ।
৭৮. “লাঠি তোমার দিন ফুরাইয়াছে।”- কথাটি কে বলেছিলেন ?
উত্তর – সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর ‘দেবী চৌধুরাণী’ উপন্যাসে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেন।
মার্ক – 5 প্রশ্ন উত্তর
১. “আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই।” – কারা কালি তৈরি করতেন ? তাঁরা কীভাবে কালি তৈরি করতেন ? [অথবা], “আমরা কালিও তৈরি করতাম নিজেরাই।” – ‘আমরা’ কারা ? তাঁরা কীভাবে কালি তৈরি করতেন ? সেই পদ্ধতি লেখকের অনুসরণে লেখো । [অথবা], “আমাদের ছিল সহজ কালি তৈরি পদ্ধতি।”-লেখকরা কীভাবে সহজে কালি তৈরি করতেন-নিজের ভাষায় বর্ণনা করো।
উত্তর – ‘আমরা’-র পরিচয়: প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধের কথক অর্থাৎ প্রাবন্ধিক স্বয়ং ও তাঁর বাল্যকালের গ্রামবাসী সহপাঠীরা নিজেরাই নিজেদের লেখার কালি বানাতেন। প্রশ্নোদ্ভূত অংশে তাঁরাই ‘আমরা’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন।
কালি তৈরির পদ্ধতি: প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থর জন্ম বাংলার অজ-পাড়া-গাঁয়ে হওয়ায় তাঁকে বাল্যকালে কালি ও কলম নিজেকেই তৈরি করে নিতে হত। কালি তৈরির বিষয়ে তাঁর মা-পিসিমা-দিদিরা তাঁকে সাহায্য করতেন। প্রাবন্ধিক নিজেই জানিয়েছেন যে, “আমাদের ছিল সহজ কালি তৈরি পদ্ধতি।” তৎকালীন সময়ে কাঠের উনুনে বাড়িতে রান্না হত বলে কড়াইয়ের তলায় ঘন কালি জমত। সেই কালি প্রাবন্ধিক লাউপাতা দিয়ে ঘষে তুলে একটি পাথরের বাটিতে জলে গুলে রাখতেন। অনেকে এর সঙ্গে মেশাতেন হরীতকী গুঁড়ো। প্রাবন্ধিক কখনো-কখনো তাঁর মাকে দিয়ে আতপ চাল ভেজে পুড়িয়ে তা বেটে কালি-জলে মেশাতেন। ভালোভাবে সকল উপকরণ মেশানোর পর খুন্তির গোড়ার দিকটা পুড়িয়ে লাল টকটকে করে ওই কালি-জলে ছ্যাঁকা দিতেন। শেষে ওই তপ্ত কালি ন্যাকড়ায় ছেঁকে ঢেলে রাখতেন দোয়াতে।
কলম তৈরির পদ্ধতি: প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থকে তাঁর বাল্যকালে কলমও তৈরি করে নিতে হত। তাঁরা কলম তৈরি করতেন মূলত ‘রোগা বাঁশের কঞ্চি কেটে’। বড়োদের থেকে জেনেছিলেন যে, কলমের মুখ যেমন ছুঁচোলো হওয়া প্রয়োজন তেমনি তার মুখটা চিরে দেওয়াও দরকার। তবেই কালি ধীরে ধীরে চুঁইয়ে পড়বে। তাই কঞ্চিকে নির্দিষ্টভাবে কেটে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে তার মুখ চিরে দিয়ে প্রাবন্ধিকরা কলম বানাতেন।
২. আমরা এত কিছু আয়োজন কোথায় পাব। আমাদের ছিল সহজ কালি তৈরি পদ্ধতি।”- এখানে ‘এত কিছু আয়োজন’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? লেখকদের সহজ কালি তৈরির পদ্ধতি উল্লেখ করো । ২+৩
উত্তর – ‘এত কিছু আয়োজন’-এর ব্যাখ্যা: প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ তাঁর ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে উৎকৃষ্ট মানের দীর্ঘস্থায়ী কালি তৈরি সংক্রান্ত প্রাচীনদের একটি কথন বা ছড়া উপস্থাপন করেছেন। “তিল ত্রিফলা সিমুল ছালা/ছাগ দুগ্ধে করি মেলা/ লৌহপাত্রে লোহায় ঘসি/ছিঁড়ে পত্র না ছাড়ে মসি।” – অর্থাৎ তিল, ত্রিফলা (আমলকী, হরীতকী, বহেড়া) আর সিমুল ছাল ছাগলের দুধে মিশিয়ে লোহার পাত্রে সেই দ্রবণকে লোহার পাত দিয়ে ঘষলে উৎকৃষ্ট মসি অর্থাৎ কালি তৈরি হয় যা কাগজ ছিঁড়ে গেলেও নষ্ট হয় না। কালি তৈরির এই সামগ্রীগুলি সম্বন্ধেই ‘এত কিছু আয়োজন’ কথাটি বলা হয়েছে।
কালি তৈরির পদ্ধতি: প্রথম প্রশ্নের উত্তরটির ‘কালি তৈরির পদ্ধতি’ পয়েন্টটি দেখো ।
৩. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধের লেখক শ্রীপান্থ ছেলেবেলায় বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় ‘হোম-টাস্ক’ করা ও তা দেখানোর জন্য যে ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করেছেন, তা নিজের ভাষায় লেখো ।
উত্তর – শ্রীপান্থ ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে পঞ্চাশ-ষাট বছর আগে তাঁর বাল্যকালে গ্রাম বাংলার মানুষজন লেখার জন্য যে উপায় বেছে নিয়েছিলেন, তার উল্লেখ করেছেন। এই আলোচনার প্রসঙ্গক্রমে লেখক তাঁর ছেলেবেলায় স্কুলের হোম-টাস্কের প্রসঙ্গের অবতারণা করেছেন।
লেখকের মতো যারা অজ-পাড়াগাঁয় শৈশব কাটিয়েছেন তারা এখনকার মতো কলম ব্যবহার করতেন না। সরু বাঁশের কঞ্চি কেটে তার মুখ ছুঁচোলো করে তাঁদেরকে কলম তৈরি করে নিতে হত। তারপর সেই কঞ্চির ছুঁচোলো মুখটা চিরে দেওয়া হত যাতে একসঙ্গে অনেকটা কালি গড়িয়ে না পড়ে। সেসময় লেখার জন্য কাগজের পরিবর্তে ব্যবহার করা হত কলাপাতা। সেগুলি কাগজের মতো মাপ করে কেটে নিয়ে তার উপর কঞ্চির কলমে ঘরে তৈরি কালি দিয়ে লিখে হোম-টাস্ক করতে হত। ওই কলাপাতাগুলিই বান্ডিল করে স্কুলে নিয়ে যেতে হত। শিক্ষক মহাশয় হোম-টাস্ক দেখে বুঝে আড়াআড়িভাবে একটানে তা ছিঁড়ে পড়ুয়াদের ফেরত দিতেন। শুধু তাই নয়, স্কুল থেকে ফেরার পথে ছাত্রছাত্রীরা ওই হোম-টাস্কের কলাপাতাগুলি কোনো পুকুরে ফেলে দিতে হত। কারণ, তখন তারা বিশ্বাস করতেন এই পাতা যদি কোনোভাবে গোরুতে খায় তবে তা ভয়ানক অমঙ্গল।
৪. “…বলতে গেলে তাই নিয়ে আমাদের প্রথম লেখালেখি।” – কী কী নিয়ে বক্তার প্রথম লেখালেখি ? এই লেখালেখি সংক্রান্ত বক্তার শৈশব স্মৃতি লিপিবদ্ধ করো । ১+৪
উত্তর – বক্তার প্রথম লেখালেখির উপকরণ: প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ ওরফে নিখিল সরকার রচিত ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ নামক প্রবন্ধের বক্তা অর্থাৎ স্বয়ং প্রাবন্ধিকের প্রথম লেখালেখির উপকরণ ছিল-বাঁশের কঞ্চির কলম, মাটির দোয়াত, ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি কালি ও লেখার পাত হিসেবে ব্যবহৃত কলাপাতা।
লেখালেখি সংক্রান্ত বক্তার শৈশব স্মৃতি: প্রাবন্ধিকের গ্রাম জীবনের সঙ্গে জড়িত শৈশব জীবনের স্মৃতিচারণা তথা তাঁর লেখালেখির স্মৃতিচারণের প্রসঙ্গ আলোচ্য প্রবন্ধে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যায়।
নিজের তৈরি কলম: লেখালেখির প্রথম জীবনে প্রাবন্ধিক ও তাঁর সমবয়সিদের কলম নিজেদের তৈরি করে নিতে হত। ‘রোগা বাঁশের কঞ্চি’ কেটে তার ছুঁচোলো মুখটি যথাযথভাবে চিরে দিয়ে কলম তৈরি করা হত। বড়োদের পরামর্শক্রমেই কালি যাতে চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ে সেজন্য কলমের মুখটি চিরে দিতে হত প্রাবন্ধিকদের।
ঘরে প্রস্তুত কালি: কলমের মতো প্রাবন্ধিকদের কালিও তৈরি করতে হত ঘরোয়া বিভিন্ন উপাদান দিয়ে। বাড়ির কাঠের উনুনে রান্না করার কারণে কড়াইয়ের তলায় জমা কালি লাউপাতা দিয়ে ঘষে তুলে একটি পাথরের বাটিতে রাখা জলে গুলে নিতেন। এরপর কেউ তাতে হরীতকী গুলে কিংবা আতপ চাল ভেজে পুড়িয়ে বেটে তা ভালোভাবে মেশাতেন। সবশেষে খুন্তির গোড়ার দিক টকটকে লাল করে পুড়িয়ে মিশ্রণটিকে ছ্যাঁকা দিয়ে লেখার যোগ্য কালি তৈরি হত। এই কালিকে ন্যাকড়ায় ছেঁকে দোয়াতে ঢেলে রাখা হত।
কালি সংগ্রহের আধার প্রাবন্ধিকদের লেখালেখির সব উপকরণই ছিল অতি সাধারণ মানের। তাঁর কালি সংগ্রহের আধার অর্থাৎ দোয়াতটি ছিল মাটির তৈরি।
লেখার পাত: প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থর বাল্যকালে লেখালেখির প্রধান আধার অর্থাৎ ‘লেখার পাত’ বলতে ছিল কলাপাতা। এগুলিকে তাঁরা কাগজের আকারে নির্দিষ্ট মাপে কেটে তাতে ‘হোম-টাস্ক’ করতেন। পরে মাস্টারমশাইকে তা দেখানোর পর সেগুলিকে ছিঁড়ে পুকুরে ফেলে দিতে হত।
৫. ‘ফাউন্টেন পেন’ বাংলায় কী নামে পরিচিত ? নামটি কার দেওয়া বলে উল্লেখ করা হয়েছে ? ফাউন্টেন পেনের জন্ম ইতিহাস লেখো । [ অথবা] ‘ জম্ন নিল ফাউন্টেন পেন’ – ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক কে ছিলেন ? ফাউন্টেন পেনের জম্ন বৃত্তান্তটি লেখো । ১+৪
উত্তর – বাংলায় ফাউন্টেনের পরিচিতি: ফাউন্টেন পেন বাংলায় ঝরনা কলম নামে পরিচিত।
নামকরণকারী: প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ ওরফে নিখিল সরকারের মতে, নামটি সম্ভবত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেওয়া।
ফাউন্টেন পেনের জন্ম ইতিহাস: ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক হলেন-লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান। সেকালের বহু ব্যবসায়ীর মতো তিনিও দোয়াত-কলম নিয়ে কাজে বের হতেন। একবার এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে চুক্তিপত্র সই করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে। দোয়াত উপুড় হয়ে কালি পড়ে যায় কাগজে। ওয়াটারম্যান ছোটেন কালির সন্ধানে। ফিরে এসে শোনেন, ইতোমধ্যে আর-একজন চতুর ব্যবসায়ী সইসাবুদ শেষ করে চুক্তিপত্র পাকা করে চলে গেছেন। হতাশ ও দুঃখিত ওয়াটারম্যান মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেন, এর একটা বিহিত তাঁকে করতেই হবে। এরপর ওয়াটারম্যান আবিষ্কার করেন ফাউন্টেন পেন।
৬. “হায়, কোথায় গেল সে সব দিন।”- কোন সব দিনের কথা বলা হয়েছে ? সেসব দিন হারিয়ে যাওয়ার কারণ কী ? ৩+২
উত্তর – উদ্দিষ্ট নির্দিষ্ট দিন: প্রাবন্ধিক নিখিল সরকার তাঁর ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে অতীত স্মৃতিচারণা করে বিষণ্ণ হয়েছেন। আগে ছিল দোয়াত-কলম। দোয়াতে কালি ভরা থাকত। কলম ডুবিয়ে লেখালিখি চলত। কাচ, কাট-গ্লাস, পোর্সেলিন, শ্বেতপাথর, জেড, পিতল, ব্রোঞ্জ, ভেড়ার শিং এমনকি সোনা দিয়েও দোয়াত তৈরি হত। গ্রামের কেউ দু-একটা পাস দিতে পারলে বুড়োবুড়িরা আশীর্বাদ করতেন- “বেঁচে থাকো বাছা, তোমার সোনার দোয়াত কলম হোক।”
সাহিত্য ও ইতিহাসের সঙ্গে যোগ ছিল দোয়াতের। এই দোয়াতের কালি দিয়েই লেখালিখি করেছেন শেকসপিয়র, দান্তে, মিল্টন, কালিদাস, ভবভূতি, কাশীরাম দাস, কৃত্তিবাস, রবীন্দ্রনাথ, বঙ্কিমচন্দ্র, শরৎচন্দ্র প্রমুখেরা। তাঁদের অমর সৃষ্টি রূপ পেয়েছিল এই দোয়াতের কালিতেই। সেইসব দিনের কথাই এখানে বলা হয়েছে।
সেসব দিন হারিয়ে যাওয়ার কারণ: সেসব দিন হারিয়ে যাওয়ার কারণ-দোয়াত-কলমের ব্যবহার লোপ পাওয়া। ফাউন্টেন পেনে কালি ভরার জায়গা থাকে। বারবার দোয়াতে কলম ডোবানোর প্রয়োজন হয় না। তাই দোয়াত-কলমকে পিছনে ফেলে ফাউন্টেন পেন এবং পরে ডট পেন বা বল পেন তার জায়গা দখল করেছে। দোয়াতের দিন হারিয়ে গেছে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরেই।
৭. “জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন।”– আগে ফাউন্টেন পেনের নাম কী ছিল ? ফাউন্টেন পেন কে, কীভাবে আবিষ্কার করেছিল ? ১+৪ [ অথবা], “জন্ম নিল ফাউন্টেন পেন।” -ফাউন্টেন পেনের স্রষ্টা কে ? কীভাবে জন্ম হয়েছিল ? ১+৪
উত্তর – ফাউন্টেন পেনের আদি নাম: ফাউন্টেন পেনের আদি নাম হল-‘রিজার্ভার পেন।‘
ফাউন্টেন পেন আবিষ্কার ও তার আবিষ্কারক: ফাউন্টেন পেন আবিষ্কার করেন-লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান। ওয়াটারম্যান যেভাবে ফাউন্টেন পেন আবিষ্কার করেন, তা এক গল্পের মতো । প্রয়োজন না হলে কোনো কিছুই সৃষ্টি হয় না। প্রয়োজনে পড়েই ওয়াটারম্যান আবিষ্কার করেন ঝরনা কলম বা ফাউন্টেন পেন।
সেসময় ব্যবসায়ীরা দোয়াত ও কলম নিয়ে কাজে বের হতেন। ওয়াটারম্যান ছিলেন ব্যবসায়ী। তাই তিনিও দোয়াত-কলম নিয়ে সেদিন কাজে বের হয়েছিলেন। একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে চুক্তিপত্র সই করার প্রয়োজন হয়েছিল। দলিল কিছুটা লেখা হয়েছে। এমন সময় হঠাৎ দোয়াত উপুড় হয়ে কালি পড়ে যায় কাগজে। ওয়াটারম্যান ছোটেন কালির সন্ধানে। ফিরে এসে শোনেন, আর একজন চতুর ব্যবসায়ী সইসাবুদ শেষ করে চুক্তিপত্র পাকা করে চলে গেছেন। হতাশ এবং দুঃখিত ওয়াটারম্যান মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেন এর একটা বিহিত করতেই হবে। আবিষ্কৃত হয় ফাউন্টেন পেন।
৮. “আমার মনে পড়ে প্রথম ফাউন্টেন কেনার কথা।” – বক্তার আসল নাম কী ? তার ফাউন্টেন কেনার ঘটনাটি সংক্ষেপে বিবৃত করো । ১+৪
উত্তর – বক্তার আসল নাম: শ্রীপান্থ ওরফে নিখিল সরকারের ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে ‘আমার’ বলতে প্রাবন্ধিক স্বয়ং নিজেকেই বুঝিয়েছেন। সুতরাং বক্তার আসল নাম নিখিল সরকার।
ফাউন্টেন পেন কেনার অভিজ্ঞতা: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে। কয়েক বছর পরে প্রাবন্ধিক কলম কিনতে গেছেন কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের এক নামি দোকানে। পার্কার, শেফার্ড, ওয়াটারম্যান, সোয়ান, পাইলট-এদের মধ্যে কোন্ কলমটি কিনতে চান, দোকানি তা জানতে চাইলে প্রাবন্ধিক ভ্যাবাচাকা খেয়ে যান। তাঁর পকেটের অবস্থা বুঝতে পেরে দোকানি প্রাবন্ধিককে একটি সস্তার পাইলট কেনার প্রস্তাব দেন। জাপানি পাইলট কতটা মজবুত তা বোঝানোর জন্য দোকানি একটি মকটেস্টও দেন। কলমের ঢাকনা খুলে সেটিকে ছুঁড়ে দেন টেবিলের একপাশে দাঁড় করানো একটা কাঠের বোর্ডের উপর। তারপর কলমটি বোর্ড থেকে খুলে নিয়ে দেখান কলমের নিব অক্ষত রয়েছে। দু-এক ছত্র লিখেও দেখিয়ে দেন দোকানদার। লেখক জাপানি পাইলটের জাদুশক্তিতে মুগ্ধ হয়ে একটি কলম কিনে বাড়ি ফিরে যান। নামীদামি ফাউন্টেন পেনের ভিড়ে লেখক সেই জাদু পাইলটকে বহুদিন পর্যন্ত বাঁচিয়ে রেখেছিলেন।
৯. “সব মিলিয়ে লেখালেখি রীতিমতো ছোটোখাটো একটা অনুষ্ঠান।”- কোন প্রসঙ্গে প্রাবন্ধিক এরূপ মন্তব্য করেছেন ? সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
উত্তর – প্রসঙ্গ: প্রাবন্ধিক শ্রীপান্থ ওরফে নিখিল সকারের সমকালে লেখার জগৎ ধীরে ধীরে দখল করে নিচ্ছিল ডট পেন বা বল পেন। কিন্তু তাঁর ছেলেবেলায় ছিল কঞ্চির কলম, খাগের কলম। কালি তৈরি করতে হত নিজেদেরই। মাটির দোয়াতে কালি ভরে বাঁশের কলম দিয়ে কলাপাতায় লেখালিখি চলত। পরে ফাউন্টেন পেন আসে বাজারে। এই পেনের কালি ভরলেই তা দিয়ে অনর্গল লেখা যায়। বারবার দোয়াতে ডোবানোর প্রয়োজন হয় না। ঝরনার মতো কালি ঝরতেই থাকে।
তাৎপর্য বিশ্লেষণ : প্রাবন্ধিক হলেন দোয়াত আর নিবের কলমের ভক্ত। কাচের দোয়াতে পরবর্তীকালে তিনি কালি বানাতেন কালি ট্যাবলেট বা বড়ি-গুলি দিয়ে। লাল-নীল দু-রকমের বড়ি পাওয়া যেত। অবশ্য তৈরি কালিও পাওয়া যেত দোয়াতে, বোতলে। ফাউন্টেন পেনের নিব এবং হ্যান্ডেলও ছিল রকমারি। ছুঁচোলো মুখের মতো চওড়া মুখের নিবও পাওয়া যেত। বিদেশে গোরুর শিং এবং কচ্ছপের খোল কেটে তৈরি মজবুত নিবও পাওয়া যেত। প্ল্যাটিনাম, সোনা, হিরে – দিয়েও মুড়ে দেওয়া হত ফাউন্টেন পেনকে। দোয়াত কলম ব্যবহারকারীরা লিখতে বসলে হাতের কাছে রাখতেন কালির আধার এবং ব্লটিং পেপার। এক সময় লেখা শুকোনো হত বালি দিয়ে।
১০. “মুঘল দরবারে একদিন তাঁদের কত না খাতির, কত না সম্মান!”– ‘তাঁদের’ বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে ? তাঁদের খাতির ও সম্মানের পরিচয় দাও । ১+৪
উত্তর – ‘তাঁদের’ পরিচয়: শ্রীপান্থ ওরফে নিখিল সরকারের ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে ‘তাঁদের’ বলতে ‘ক্যালিগ্রাফিস্ট’ বা ‘লিপি-কুশলী’-দের বোঝানো হয়েছে।
খাতির ও সম্মানের পরিচয়: লিপি-কুশলী সম্পর্কিত তথ্য: লিপি-কুশলীরা হলেন ওস্তাদ কলমবাজ। ইংরেজিতে তাঁদের বলা হয় ‘ক্যালিগ্রাফিস্ট’। মোগল দরবারসহ সারা বিশ্বের সমস্ত দরবারেই একদিন তাঁদের খাতির ছিল চোখে পড়ার মতো। আমাদের বাংলা মুলুকেও রাজা-জমিদাররা লিপি-কুশলীদের গুণী বলে সম্মান করতেন, তাঁদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করতেন। সাধারণ গৃহস্থেরাও তাঁদের ডেকে পুথি নকল করাতেন। সেসব পুথি দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। লিপিকরদের হাতের লেখা ছিল মুক্তোর মতো। সমস্ত অক্ষর সমান, প্রতিটি ছত্র সুশৃঙ্খল, পরিচ্ছন্ন।
খুব সামান্য মজুরিতেই এই লিপি-কুশলীরা নিজেদের শিল্পচর্চা বজায় রেখেছিলেন। চারখন্ড রামায়ণ কপি করে একজন লেখক অষ্টাদশ শতাব্দীতে পেয়েছিলেন নগদ সাত টাকা, কিছু কাপড় আর মিঠাই। এক সাহেবের লিখিত বয়ান অনুযায়ী ঊনবিংশ শতাব্দীতে বারো আনায় বত্রিশ হাজার অক্ষর লেখানো যেত। পুথিকে ঘিরে লিপিকরদের গর্ব ছিল অসীম। তবে কলমের ক্রম-অবলুপ্তির কারণে ইতিহাসে এই লিপিকরদের আসন পাকা।
১১. “যাঁরা ওস্তাদ কলমবাজ তাঁদের বলা হলো ‘ক্যালিগ্রাফিস্ট’ বা লিপি-কুশলী।”- লিপি-কুশলীদের কাজ কী ছিল ? তাঁদের সম্পর্কে যা জানো লেখো । ১+৪
উত্তর – লিপি-কুশলীদের কাজ: লিপি-কুশলীদের কাজ ছিল পুথি নকল করা।
লিপি-কুশলী সম্পর্কিত তথ্য: লিপি-কুশলীরা হলেন ওস্তাদ কলমবাজ। ইংরেজিতে তাঁদের বলা হয় ‘ক্যালিগ্রাফিস্ট’। মোগল দরবারসহ সারা বিশ্বের সমস্ত দরবারেই একদিন তাঁদের খাতির ছিল চোখে পড়ার মতো। আমাদের বাংলা মুলুকেও রাজা-জমিদাররা লিপি-কুশলীদের গুণী বলে সম্মান করতেন, তাঁদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করতেন। সাধারণ গৃহস্থেরাও তাঁদের ডেকে পুথি নকল করাতেন। সেসব পুথি দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। লিপিকরদের হাতের লেখা ছিল মুক্তোর মতো। সমস্ত অক্ষর সমান, প্রতিটি ছত্র সুশৃঙ্খল, পরিচ্ছন্ন ।
খুব সামান্য মজুরিতেই এই লিপি-কুশলীরা নিজেদের শিল্পচর্চা বজায় রেখেছিলেন। চারখন্ড রামায়ণ কপি করে একজন লেখক অষ্টাদশ শতাব্দীতে পেয়েছিলেন নগদ সাত টাকা, কিছু কাপড় আর মিঠাই। এক সাহেবের লিখিত বয়ান অনুযায়ী ঊনবিংশ শতাব্দীতে বারো আনায় বত্রিশ হাজার অক্ষর লেখানো যেত। পুথিকে ঘিরে লিপিকরদের গর্ব ছিল অসীম। তবে কলমের ক্রম-অবলুপ্তির কারণে ইতিহাসে এই লিপিকরদের আসন পাকা।
১২. “আশ্চর্য, সবই আজ অবলুপ্তির পথে।”– কোন জিনিস আজ অবলুপ্তির পথে ? এই অবলুপ্তির কারণ কী ? এ বিষয়ে লেখকের মতামত কী ? ১+১+৩
উত্তর – অবলুপ্তির পথে থাকা জিনিস: শ্রীপান্থ ওরফে নিখিল সরকারের ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে লেখালিখির বিভিন্ন উপাদান বিশেষত কালি-কলম আজ অবলুপ্তির পথে।
অবলুপ্তির কারণ: যন্ত্রযুগের হাত ধরে এসেছে কম্পিউটার। মানুষের হাত থেকে কলম কেড়ে নিতে উদ্যত হয়েছে সে। আধুনিক লেখকেরা কম্পিউটার স্ক্রিনে লেখালিখিতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন তাই কলম অবলুপ্তির পথে।
লেখকের মতামত: বিজ্ঞান দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে আবেগ। কম্পিউটারও মানুষের জীবন থেকে আবেগ-অনুভূতিকে অপহরণ করতে উদ্যত হয়েছে। হাতের লেখায় যে শিল্পীর দক্ষতা, সৌন্দর্যচেতনা মমত্ববোধ, ভালোলাগা যাকে, তা কম্পিউটারে লিখে কী পাওয়া যায়? এ যেন দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো। এ প্রসঙ্গে লেখক বলেছেন যে, কম্পিউটার ছবি আঁকতে পারে, কিন্তু তা কতটা যন্ত্রের আর কতটা শিল্পীর সে বিষয়ে সন্দেহ আছে। বাঁশের কঞ্চির কলম, খাগের কলম, ফাউন্টেন পেন, বল পেন-সবই কম্পিউটারের কল্যাণে আজ অবলুপ্তির পথে। যন্ত্রযুগের সিনিক কম্পিউটার যেন তার নির্মম নীরস তরবারি দিয়ে মানুষের শিল্পচেতনাকেই ছিন্ন করতে উদ্যত হয়েছে। তাই কালি-কলমের অবলুপ্তিতে লেখক যারপরনাই বিপন্ন, বিষাদগ্রস্ত।
১৩. ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে যে নানা রকমের কলমের বর্ণনা আছে তা সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
[অথবা], ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধ অনুসরণে কলমের বিবর্তনের ইতিহাসটি বিবৃত করো ।
উত্তর – শ্রীপান্থ ওরফে নিখিল সরকার তাঁর ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে আদি যুগ থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের কলম ও তার বিবর্তনের রূপরেখা চিত্রিত করেছেন।
হাড়: প্রাগৈতিহাসিক যুগে ফিনিসীয়দের লেখার উপকরণ ছিল হাড়। বনপ্রান্ত থেকে কুড়িয়ে পাওয়া হাড় দিয়ে তারা গুহার দেয়ালে আঁচড় কাটত।
নল-খাগড়া: প্রাচীন সুমেরীয়রা নীলনদের তীর থেকে ভেঙে নিয়ে আসত নল-খাগড়া। সেটিকে ছুঁচোলো করে কলম বানিয়ে বা ভোঁতা করে তুলি বানিয়ে তাদের লেখালেখি চলত।
স্টাইলাস: প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যে শ্রেষ্ঠ কারিগরদের হাতের তৈরি স্টাইলাস বা ব্রোঞ্জের শলাকা দিয়ে লেখার কাজ চলত। স্বয়ং জুলিয়াস সিজারও স্টাইলাস ব্যবহার করতেন।
তুলি: চিনারা চিরকাল তুলিকেই কলম হিসেবে ব্যবহার করে আসছে ।
কঞ্চির কলম: প্রাবন্ধিকের ছেলেবেলায় পাড়াগ্রামে লেখার জন্য ব্যবহৃত হত বাঁশের কঞ্চির কলম। রোগা বাঁশের কঞ্চি কেটে তার মুখটি চিরে দিয়ে কলম তৈরি হত। কলমকে ছুঁচোলো করার পাশাপাশি মুখটিকে এমনভাবে চিরে দিতে হত যাতে লেখার পাতায় কালি পড়ে চুঁইয়ে চুঁইয়ে।
খাগের কলম: খাগ বা শরের কলমও এক সময় লেখার উপকরণ ছিল। তবে বর্তমানে এই কলমের দেখা পাওয়া যায় একমাত্র সরস্বতী পুজোর সময়। কাচের দোয়াতে কালির বদলে দুধ দিয়ে খাগের কলম রেখে দেওয়া হয়।
পালকের কলম: বিভিন্ন পাখির পালককে কলম হিসেবে ব্যবহার করা হত। এর ইংরেজি নাম ‘কুইল’। সাহেবরা পালক কেটে কলম তৈরি করার জন্য পেনসিল সার্পনারের মতো একটি ছোটো যন্ত্রও তৈরি করেছিলেন।
দোয়াত-কলম: দোয়াতে কালি রেখে তাতে কলম ডুবিয়ে লেখালেখি চলত এক দীর্ঘ সময়। ফাউন্টেন পেনের আবিষ্কারক ওয়াটারম্যানও একদা দোয়াত-কলমে লিখতেন।
ফাউন্টেন পেন: লুইস অ্যাডসন ওয়াটারম্যান হলেন ফাউন্টেন পেনের উদ্ভাবক। এর বাংলা নাম ঝরনা কলম। এই কলমের পেটে কালি জমিয়ে রাখার ব্যবস্থা থাকত। পার্কার, শেফার্ড, ওয়াটারম্যান, সোয়ান, পাইলট প্রভৃতি বিভিন্ন ধরনের ফাউন্টেন পেন বাজারে বিক্রি হত। গোরুর শিং কিংবা কচ্ছপের খোল কেটে কলমের নিবকে পোক্ত ও টেকসই করা হত।
ডট পেন: পঁচাত্তর বছর আগে বাজারে আসে বল পেন বা ডট পেন। এই পেনের কালি সহজে শুকিয়ে যায়। সরু রিফিলে কালি ভরা থাকে। সস্তা হওয়ায় এই কলম বাজারে ব্যাপকভাবে বিক্রি হতে থাকে। প্রায় সবার কাছেই সহজলভ্য হয়ে ওঠে এই পেন।
১৪. কালিকলমের প্রতি ভালোবাসা এবং তা হারানোর বেদনা ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধে কীভাবে প্রকাশ পেয়েছে ?
উত্তর – কালিকলমের প্রতি শ্রীপান্থ ওরফে নিখিল সরকারের ভালোবাসা এবং তা হারানোর বেদনায় ঋদ্ধ হয়ে উঠৈছে ‘হারিয়ে যাওয়া কালি কলম’ প্রবন্ধটি।
কালিকলমের প্রতি ভালোবাসা: “আমার আমি হারিয়ে খোঁজে আমার ছেলেবেলা।” ছেলেবেলার স্মৃতির সমুদ্রে ডুব দিয়ে প্রাবন্ধিক তুলে এনেছেন কালিকলম তৈরির মণিমুক্ত। নিজ হাতেই কালি এবং কলম বানিয়েছেন লেখক। বাঁশের কঞ্চি কেটে বানানো হত কলম। মুখটা ছুঁচোলো করা হত এবং মাঝখানে চিরে দেওয়া হত। এতে কালি পড়ত চুঁইয়ে চুঁইয়ে। রান্নার কড়াইয়ের নীচের ভুসোকালি লাউপাতা দিয়ে ঘষে তুলে পাথরের বাটিতে রাখা জলে গুলে নিয়ে কালি তৈরি হত। কখনো-কখনো প্রাবন্ধিক তাঁর মাকে দিয়ে আতপ চাল ভেজে পুড়িয়ে তা বেটে তার সঙ্গে মিশিয়ে দিতেন। খুন্তির গোড়ার দিকটা পুড়িয়ে সেই জলে ছ্যাঁকা দেওয়া হত।
এরপর ফাউন্টেন পেন বাজারে এলে লেখক তাতে লিখে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পরে কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের নামি দোকান থেকে জাদু পাইলট কেনার স্মৃতির রোমন্থন করেছেন তিনি। পরে নামীদামি আরও নানা জাতের ফাউন্টেন পেন তাঁর হাতে এসেছে। কিন্তু সেই পাইলট পেনটিকে তিনি বাঁচিয়ে রেখেছিলেন বহুদিন। সেকালের পয়সাওয়ালা লেখকদের মতো প্রাবন্ধিককেও নেশাগ্রস্ত করেছিল এই ফাউন্টেন পেন।
এরপর বল পেন বা ডট পেন বাজারে এলে লেখক তার কাছে আত্মসমর্পণ করেন। কিন্তু আদতে তিনি কালি-খেকো কলমেরই ভক্ত।
কলম হারানোর বেদনা: যন্ত্রসভ্যতার সরণী বেয়ে কম্পিউটার এসেছে। মানুষের হাত থেকে কলম কেড়ে নিতে উদ্যত হয়েছে সে। লাঠির মতোই কলমেরও দিন ফুরিয়ে এসেছে। কম্পিউটারের কি-বোর্ডে টাইপ করে লিখে তার প্রিন্ট বের করার সুবিধা থাকায় লোকে সে দিকেই ঝুঁকে পড়েছে। কিন্তু প্রাবন্ধিক প্রাচীনপন্থী। তাই কলমের পিছু হঠার দিনে লেখক নস্টালজিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। কালিকলমকে ঘিরে ছেলেবেলার নানা স্মৃতির রোমন্থন করেছেন। হারিয়ে যাওয়ার কালিকলমের প্রতি নিখাদ ভালোবাসায় বিষাদগ্রস্ত হয়েছেন।
১৫. “নামটা রবীন্দ্রনাথের দেওয়াও হতে পারে।”– কোন নামটা? কলমের দুনিয়ায় কে বিপ্লব ঘটায় এবং কীভাবে ?
[অথবা], “পণ্ডিতরা বলেন কলমের দুনিয়ায় যা সত্যিকারের বিপ্লব ঘটায় তা ফাউন্টেন পেন।”– ফাউন্টেন পেন কলমের দুনিয়ায় কীভাবে বিপ্লব ঘটিয়েছিল তা লেখো ।
উত্তর – উল্লিখিত নাম: ফাউন্টেন পেনের বাংলা নাম ঝরনা কলমের কথা এখানে বলা হয়েছে। নামটি সম্ভবত রবীন্দ্রনাথের দেওয়া বলে মনে করেছেন প্রাবন্ধিক নিখিল সরকার।
কলমের দুনিয়ায় যে, যেভাবে বিপ্লব ঘটায়: কলমের দুনিয়ায় বিপ্লব ঘটায় ফাউন্টেন পেন। আগে ছিল কঞ্চির কলম, খাগের কলম, পালকের কলম আর দোয়াত ভরা কালি। লেখার কাজ তখন ছিল সময়সাপেক্ষ। লেখার সরঞ্জাম স্থানান্তরিত করার ক্ষেত্রেও অসুবিধা ছিল। লেখার পরে কালি শুকোনো, দোয়াত উলটে পড়ার সম্ভাবনা-সবই ছিল সমস্যা। ওয়াটারম্যান ফাউন্টেন পেন আবিষ্কার করে সেইসব সমস্যার সমাধান করে ফেললেন।
ফাউন্টেন পেনে কালি ভরার ব্যবস্থা থাকে। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার সমস্যা নেই। নিব বেয়ে কালি এমনভাবে চুঁইয়ে পড়ে যে লেখা প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই শুকিয়ে যায়। অফুরন্ত কালির ফোয়ারা খুলে দেয় ফাউন্টেন পেন।
পার্কার, শেফার্ড, ওয়াটারম্যান, সোয়ান, পাইলটের মতো বিদেশি নামি কোম্পানির কলম বাজারে আসে। গোরুর শিং কিংবা কচ্ছপের খোল কেটে তৈরি নিব আরও পোক্ত ও মজবুত হয়ে ওঠে। রকমারি চেহারার সস্তা কিংবা দামি ফাউন্টেন পেন বাজার ছেয়ে ফেলে। সংগীতশিল্পী, শ্রুতিলেখক থেকে শুরু করে বাঁ হাতি সবার জন্য তৈরি হয় ফাউন্টেন পেন। লেখকদের নেশাগ্রস্ত করে তোলে এই কলম। এভাবেই কলমের দুনিয়ায় বিপ্লব ঘটায় ফাউন্টেন পেন।
আরও পড়ুন –
অসুখী একজন কবিতার প্রশ্ন উত্তর
আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি প্রশ্ন উত্তর