এডুকেশন প্রশ্ন উত্তর চতুর্থ সেমিস্টার // Class 12 Education Question Answer 4th Semester // Unit – II Chapter 1
এডুকেশন প্রশ্ন উত্তর
Unit – II – Chapter 1
(১) মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে টীকা লেখো । WHO-এর কয়েকটি কাজ লেখো ।
উত্তর – মানসিক স্বাস্থ্য: আমাদের শরীরের যেমন স্বাস্থ্য আছে, তেমনই মনেরও স্বাস্থ্য আছে। দৈহিক ব্যাধি যেমন স্বাস্থ্যকে ক্ষুণ্ণ করে, তেমনই মানসিক ব্যাধিও আমাদের মনের স্বাস্থ্যকে বিঘ্নিত করে। দেহের বিভিন্ন অংশ যেমন- পাকযন্ত্র, শ্বাসযন্ত্র, হৃদযন্ত্র, স্নায়ুতন্ত্র, মস্তিষ্ক ইত্যাদি যখন সমান ও সম্যকভাবে সক্রিয় থাকবে, তখনই দেহের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত হবে।
আবার মনের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও একই ধারণা পোষণ করা যেতে পারে। আমাদের চিন্তন ক্ষমতা, স্মরণক্ষমতা, কল্পনা প্রবণতা, বিচার ক্ষমতা, আবেগ, অনুভূতি, মানসিকতা, নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা ইত্যাদি যখন সমান সক্রিয় থাকে এবং একে অপরের সহযোগী ও পরিপূরক হয়, তখনই মানসিক স্বাস্থ্য অক্ষুণ্ণ আছে ধরে নেওয়া হয়।
প্রত্যেক ব্যক্তি সর্বদা পরিবর্তিত বিভিন্ন প্রকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে চলার চেষ্টা করে। যখন সে সন্তোষজনকভাবে পরিবেশের সঙ্গে সার্থক সংগতিবিধানে সমর্থ হয়, তখন তার মানসিক স্বাস্থ্য অটুট থাকে। বিপরীতক্রমে সংগতিবিধানে অসমর্থ হলে তার মধ্যে নানাপ্রকার মানসিক উপসর্গ দেখা দেয়। এই প্রসঙ্গে Hadfield বলেছেন- “Mental Health is the full and harmonious functioning of the whole personality.” অর্থাৎ মানসিক স্বাস্থ্য হল সমগ্র ব্যক্তিসত্তার সুস্থ সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রক্রিয়া।
WHO-এর মতে, মানসিক স্বাস্থ্য হল এমন একটি অবস্থান, যেখানে ব্যক্তি তার নিজস্ব ক্ষমতাগুলি বুঝতে পারে, জীবনের স্বাভাবিক চাপ মোকাবিলা করতে পারে এবং সমাজের জন্য কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে।
প্রত্যেক ব্যক্তির কতকগুলি নিজস্ব চাহিদা আছে। যেমন- স্বাধীনতা, নিরাপত্তা, আত্মমর্যাদা, আত্মস্বীকৃতি, প্রাক্ষোভিক প্রভৃতি চাহিদা। এইসব চাহিদা পরিতৃপ্ত হলে ব্যক্তির মানসিক ভারসাম্য বজায় থাকে। কিন্তু পারিপার্শ্বিক পরিবেশ সবসময় এইসকল চাহিদা তৃপ্ত করতে পারে না। ফলে মানসিক দ্বন্দ্ব (conflict) সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ মানসিক স্বাস্থ্য হল পরিবেশের সঙ্গে ও নিজের সঙ্গে যথার্থভাবে সামঞ্জস্য রক্ষা করে চলার ক্ষমতা। নতুন নতুন পরিস্থিতি ও বাস্তব সমস্যার সম্মুখীন হয়ে, সর্বাপেক্ষা কার্যকরী পদ্ধতিতে ও সমাজ অনুমোদিত পথে সমস্যার সমাধান করে। সন্তোষজনক ও আনন্দকর অগ্রগতি নিয়ে আসার ক্ষমতাই হল মানসিক স্বাস্থ্য।
WHO-এর কাজ: WHO বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন কাজ করে থাকে । যেমন – (i) বিশ্বব্যাপী জনগণের স্বাস্থ্য রক্ষা এবং উন্নত করা। (ii) বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলার নেতৃত্ব দেওয়া। (iii) মহামারী, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং মানবিক সংকটসহ স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার জন্য দেশগুলিকে সাহায্য করা। (iv) জনস্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণা করা।

(২) স্বাস্থ্য শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে লেখো।
উত্তর – স্বাস্থ্য শিক্ষার গুরুত্ব: স্বাস্থ্য শিক্ষার গুরুত্বগুলি হল নিম্নরূপ –
(ক) সুস্থতা সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করা: স্বাস্থ্য শিক্ষা মানুষকে কীভাবে সুস্থ রাখা যায়, সে সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করে।
(খ) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: পুষ্টিকর খাদ্য রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। তাই রোগ সম্বন্ধে ধারণা ও রোগের সঙ্গে পুষ্টির সম্পর্ক জানা যায় স্বাস্থ্য শিক্ষা থেকে।
(গ) মানসিক স্বাস্থ্য: শারীরিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত। স্বাস্থ্য শিক্ষার মাধ্যমে জানা যায় কীভাবে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায়।
(ঘ) মানাযোগ বৃদ্ধি : খেলাধুলো, দৌড়-ঝাঁপ ইত্যাদি শিশুর শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার প্রতি শিক্ষার্থীর মনোযোগ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
(ঙ) শারীরিক ও মানসিক বিকাশ সম্পার্ক ধারণা: শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা ছাড়া যথাযথ শিক্ষা সম্ভব হয় না তাই স্বাস্থ্য শিক্ষা শারীরিক ও মানসিক বিকাশ সম্পর্কে ধারণা দেয়।
(চ) দীর্ঘায়ু লাভ: স্বাস্থ্য শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের জীবনযাপনের মানোন্নয়ন সম্ভব। স্বাস্থ্য শিক্ষা শিশু তথা মানুষজনকে বিভিন্ন অসুখের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে যা মানুষের দীর্ঘায়ু লাভে সাহায্য করে।
(ছ) স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি: যথাযথ স্বাস্থ্য শিক্ষা মানুষকে স্বাস্থ্য সচেতন করে তুলতে সাহায্য করে।
(৩) শারীরশিক্ষা কী ? বিদ্যালয়ের কয়েকটি স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মসূচি সম্পর্কে লেখো ।
উত্তর – শারীরশিক্ষা: শারীরশিক্ষা হল-শারীরিক কার্যকলাপের মাধ্যমে শারীরিক দক্ষতা বাড়ানোর শিক্ষা। এর উদ্দেশ্য স্বাস্থ্যের উন্নতি করা, নিরাপত্তা সম্পর্কে জ্ঞান বাড়ানো এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারার বিকাশ ঘটানো।
বিদ্যালয়ের কয়েকটি স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মসূচি:
(ক) স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশ: ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন সংক্রান্ত নির্দেশ । সুস্বাস্থ্যের জন্য সুষম খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কিত নেশা সম্পর্কিত দ্রব্যের অপকারিতা সম্পর্কিত নির্দেশ।
(খ) বিদ্যালয়ের মাধ্যকার কর্মসূচি: শ্রেণিকক্ষে স্বাস্থ্য শিক্ষা সংক্রান্ত পাঠদান এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশ পালন করতে হবে। স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বক্তৃতা, আলোচনাচক্র, পত্রিকা প্রকাশ ইত্যাদি করতে হবে। স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
(গ) শিক্ষাকর ভূমিকা : দৈহিক আচার-আচরণ, পোশাক-পরিচ্ছদ, দাঁত, কান, নখ, চোখ ইত্যাদি স্বাস্থ্যসম্মত কিনা দেখবেন। শিক্ষার্থীদের দৃষ্টিশক্তি, শ্রমশক্তি ইত্যাদির ত্রুটি রয়েছে কিনা লক্ষ করবেন।
(ঘ) চিকিৎসকের ভূমিকা: মাঝে মাঝে বিদ্যালয়ে চিকিৎসকের চিকিৎসার দ্বারা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
(ঙ) বিদ্যালয় প্রশাসকের ভূমিকা: মিড-ডে মিল প্রকল্প যথাযথভাবে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে কার্যকরী হচ্ছে কিনা সেটা প্রশাসক দেখবেন। পানীয় জল, শৌচালয় ইত্যাদি স্বাস্থ্যসম্মত কিনা খুঁটিয়ে দেখবেন প্রশাসক।
(৪) WHO-এর মতে, স্বাস্থ্য কী ? দৈনন্দিন জীবনে মানসিক স্বাস্থ্যের সুস্থতার সুরক্ষায় কী কী করণীয় হওয়া উচিত ?
উত্তর – WHO-এর মতে, স্বাস্থ্যের সংজ্ঞা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা WHO-এর মতে- “স্বাস্থ্য হল সম্পূর্ণ শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক সুস্থতার একটি অবস্থা এবং শুধু রোগ বা দুর্বলতার অনুপস্থিতি নয়।“
মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় করণীয় বিষয়: মানসিক স্বাস্থ্যের সুস্থতা এবং সুরক্ষায় নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মেনে চলা উচিত। যেমন-
(ক) পর্যাপ্ত ঘুম: ঘুম শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হতাশা, উদ্বেগ, বিষণ্ণতা ইত্যাদি মানসিক সমস্যার ঝুঁকি এড়াতে দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম প্রয়োজন।
(খ) পুষ্টিকর এবং সুষম খাদ্যগ্রহণ: পুষ্টিকর এবং সুষম খাদ্য শরীর এবং মন উভয়ের জন্য খুবই উপকারী। পুষ্টিকর খাবার শরীরের শক্তি যোগানের পাশাপাশি মস্তিষ্ককেও চনমনে রাখে। যেমন- ভিটামিন, আয়রন ইত্যাদি মন এবং মেজাজের নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা পালন করে।
(গ) মাদকদ্রব্য ও ধূমপান পরিহার: মাদকদ্রব্য গ্রহণ এবং ধূমপান একদিকে যেমন মস্তিষ্কের কার্যকারিতা হ্রাস করে, তেমনই বিভিন্নপ্রকার জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। তাই মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতার সুরক্ষায় এগুলি অবশ্যই পরিহার করা প্রয়োজন।
(ঘ) নিয়মিত শরীরচর্চা: নিয়মিত এবং নিয়মতান্ত্রিক শরীরচর্চা এবং খেলাধুলা আমাদের দেহ ও মন উভয়কে সতেজ রাখতে সাহায্য করে, যা মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষায় বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
(ঙ) আত্মসক্রিয় থাকা: আলস্যভাবে জীবন কাটানোর পরিবর্তে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশি সকলের নিয়মিত যোগাযোগ রাখা, প্রাতঃভ্রমণ করা, পাঠাগারে যাওয়া প্রভৃতি মানসিক স্বাস্থ্যরক্ষায় বিশেষ সহায়ক।
(চ) সুশৃঙ্খল জীবনযাপন: সর্বোপরি মানসিক স্বাস্থ্যের সুস্থতা ও সুরক্ষায় শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপন অত্যাবশ্যক। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এর বিকল্প হয় না।
(৫) মানসিক সুস্বাস্থ্যের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো ।
উত্তর – মানসিক সুস্বাস্থ্যের বৈশিষ্ট্য: মানসিক সুস্বাস্থ্যের বৈশিষ্ট্যগুলি হল –
(ক) দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন: সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তির দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন হতে পারে।
(খ) বহুমুখী অভিজ্ঞতা: শিক্ষার্থীকে জীবনের বহুমুখী অভিজ্ঞতায় সাড়া প্রদান করতে হবে।
(গ) সংযমী: শিক্ষার্থী বা ব্যক্তিকে সংযমী হতে হবে এবং কোনো অন্তর্দ্বন্দ্বে ভুগলে হবে না।
(ঘ) অভিযোজন: ব্যক্তি যাতে প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে অর্থাৎ আশেপাশের মানুষ ও পরিবেশের সঙ্গে সহজেই অভিযোজিত হতে হবে।
(ঙ) হাসিখুশি ভাব: শান্তিপূর্ণ ও আনন্দপূর্ণ অবস্থায় থাকতে হবে অর্থাৎ সে সর্বদা হাসিখুশি থাকবে। শ্রদ্ধাশীল ও সমব্যাথি ব্যক্তি সংবেদনশীল হবেন। একজন মানসিক সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তি অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন বা সমব্যাথি হবেন।
(চ) আবেগ দমন: ব্যক্তিকে নিজের আবেগ দমনে সমর্থ হতে হবে।
(ছ) মূল্যাবাধ: সুস্থ মানসিকতাসম্পন্ন ব্যক্তি সামাজিক মূল্যবোধ, নৈতিক মূল্যবোধ, বৃত্তিগত মূল্যবোধ, অর্থনৈতিক মূল্যবোধ ইত্যাদির উপর যথাযথ গুরুত্ব দেবেন।
(জ) অটুট আত্মবিশ্বাস: মানসিক স্বাস্থ্যসম্পন্ন ব্যক্তি কখনোই তার আত্মবিশ্বাস হারায় না। পরিপূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে প্রতিকূল পরিবেশে সংগ্রাম চালিয়ে যায়।
(ঝ) জীবনাদর্শ: সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষার্থীকে আত্মোপলব্ধিতে সাহায্য করে এবং এটি সুস্থ জীবনাদর্শ গড়ে তোলার সহায়ক।
(৬) মানসিক স্বাস্থ্যের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে লেখো ।
উত্তর – মানসিক স্বাস্থ্যের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য: মানসিক স্বাস্থ্যের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলি হল –
(ক) ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবান : শান্তি নিয়ে আসা ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনে আনন্দ ও শান্তি আনা, যাতে সুস্থ পারিবারিক পরিবেশ শিশুর সুষম ব্যক্তিত্ব গঠনে সাহায্য করে।
(খ) অন্তর্নিহিত সম্ভাবনার বিকাশসাধন: শিশুর অন্তর্নিহিত সম্ভাবনাগুলির পরিপূর্ণ বিকাশসাধন করা, যাতে শিশু ইতিবাচক ও নেতিবাচক পরিবেশ চিহ্নিত করতে পারে এবং জীবন-অভিজ্ঞতাকে সঙ্গে নিয়ে সার্থক অভিযোজনে সক্ষম হয়।
(গ) নেতিবাচক মানসিকতা দূরীকরণ: সমাজের অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা, উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন লক্ষ করা যায়। অপরাধপ্রবণতা ও উচ্ছৃঙ্খল মানসিকতা দূরীকরণে মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষা সাহায্য করে।
(ঘ) মানসিক বিকৃতি ও রোগ নিরাময়: মানসিক অক্ষমতাযুক্ত শিশু তথা মানুষজনদের মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত রোগ নিরাময়ে মানসিক স্বাস্থ্য সাহায্য করে।
(ঙ) মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে জ্ঞান দান: বিজ্ঞানভিত্তিক ও মনোবিজ্ঞানভিত্তিক শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষাদানের জন্য মানসিক স্বাস্থ্য সম্বন্ধে যথাযথ জ্ঞানের প্রয়োজন।
(চ) মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশ ও সংরক্ষণ : কিশোর ও বয়ঃসন্ধিকালীন শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশ ও সংরক্ষণের প্রয়োজন।
(ছ) মূল্যবোধের সামঞ্জস্যপূর্ণ বিকাশসাধন: মানসিক স্বাস্থ্যের উদ্দেশ্য হল ব্যক্তির শারীরিক ক্ষমতা, মানসিকতা ও আধুনিক মূল্যবোধের সামঞ্জস্যপূর্ণ বিকাশসাধন।
(৭) মানসিক স্বাস্থ্যের নির্ধারক বা উপাদানসমূহ সম্পর্কে লেখো ।
উত্তর – মানসিক স্বাস্থ্যের নির্ধারক বা উপাদানসমূহ: ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য যেসব বিষয় দ্বারা নির্ধারিত হয়, সেগুলি হল –
(ক) দৈহিক সুস্থতা : দৈহিক সুস্থতা মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। স্বাস্থ্য সম্পর্কিত উপযুক্ত মনোভাবের অভাব মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের অন্তরায়।
(খ) উন্নত গৃহ পরিবেশ: পারিবারিক অশান্তি শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। তাই গৃহ পরিবেশ এমন হওয়া প্রয়োজন, যাতে শিশুরা কোনোভাবেই বাবা-মা ও বয়স্কদের স্নেহ-ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত না হয় এবং শিশুদের মৌলিক চাহিদাগুলি যথাযথভাবে পরিতৃপ্ত হয়।
(গ) উন্নত বিদ্যালয় পরিবেশ: বিদ্যালয়ে শিশুর ব্যবহার, শিক্ষায় পারদর্শিতা, সহপাঠীদের সঙ্গে আচরণ, বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে প্রভাব বিস্তার করে।
(ঘ) উন্নত সামাজিক পরিবেশ : উন্নত সামাজিক পরিবেশ থেকে শিশুরা বয়স্কদের অনুকরণ করে। ফলে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটে। যদি সামাজিক পরিবেশ উন্নত না হয়, তবে শিক্ষার্থীদের সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের অন্তরায় হয়।
(ঙ) ব্যক্তির আত্মোপলব্ধির বিকাশ : ব্যক্তির সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন আত্মোপলব্ধির বিকাশ। আত্মোপলব্ধি হল নিজের সক্ষমতা ও দুর্বলতা সম্পর্কে সচেতন হওয়া। যথাযথ আত্মোপলব্ধির মাধ্যমে শিক্ষার্থী তার হতাশা ও ব্যর্থতাকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারে।
(চ) জাতীয়তাবোধ: শিক্ষার্থীর মধ্যে জাতীয়তাবোধ গড়ে তুলতে প্রয়োজন – দেশের প্রতি সেন্টিমেন্ট গঠন, দেশপ্রীতি ও ভালোবাসা। যথাযথ জাতীয়তাবোধ জাগ্রত করতে পারলে দেশের জন্য শিক্ষার্থী বিভিন্ন ধরনের কাজে উৎসাহ পায়, যা মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির সহায়ক।
(৮) মানসিক অসুস্থতার কারণগুলি কী কী ?
উত্তর – ব্যক্তিভেদে মানসিক অসুস্থতার কারণগুলি ভিন্ন ভিন্ন। মানুষ যে সমাজের মধ্যে রয়েছে, তার দ্বারাও মানসিক অসুস্থতা প্রভাবিত হয়ে থাকে। মানসিক অসুস্থতার কারণগুলির কয়েকটি উপাদান হল-
জন্মগত কারণ, বৌদ্ধিক কারণ ও পরিবেশগত কারণ। মোটামুটি এই তিনটি কারণের উপর ভিত্তি করেই মানসিক স্বাস্থ্য বিঘ্নিত হয়।
(ক) জন্মগত কারণ : কিছু শিশু থাকে, যারা জন্মগতভাবে শারীরিক দুর্বলতা বা অসম্পূর্ণতা নিয়ে জন্মায় অর্থাৎ মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে। কারণ গর্ভবতী অবস্থায় মায়ের পুষ্টির অভাব, অতিরিক্ত ওষুধ সেবন, শারীরিক যত্ন না নেওয়া, আঘাত লাগা, প্রচুর পরিশ্রম করা প্রভৃতি। এই সকল কারণে শিশুর অসুস্থতা লক্ষ করা যায়।
(খ) বৌদ্ধিক কারণ: শিশু জন্ম থেকেই মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মগ্রহণ করে কিংবা বুদ্ধ্যঙ্ক (IQ) স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক নীচে থাকে। ফলে স্বাভাবিক বিচারবুদ্ধিও অনেক কম থাকে। ফলে স্বাভাবিক শ্রেণি শিখন এরা গ্রহণ করতে পারে না। আবার সমাজের সঙ্গে সংগতিবিধান করতে পারে না। এইসকল কারণে শিশুর মধ্যে অসুস্থতার লক্ষণগুলি লক্ষ করা
(গ) পরিবেশগত কারণ: পরিবার, বিদ্যালয় এবং সমাজ পরিবেশ নানাভাবে ব্যক্তির সুস্থ জীবনবিকাশে প্রভাব বিস্তার করে থাকে। যেমন- পরিবার: দরিদ্রতা, অপুষ্টি, অস্বাস্থ্যকর পারিবারিক পরিবেশ শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের বিঘ্ন ঘটায়। পিতা-মাতার অশিক্ষা, পারিবারিক অশান্তি, বিশৃঙ্খলা, সন্তানদের প্রতি অধিক ভালোবাসা বা অধিক শাসন, সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে মানসিক অসুস্থতা সৃষ্টি করে।
বিদ্যালয়: অস্বাস্থ্যকর বিদ্যালয় প্রশাসন, ত্রুটিপূর্ণ পাঠক্রম, অতিরিক্ত শাসন অনেকসময়ে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে সহায়ক হয় না।
সমাজ: সামাজিক পরিবেশের কোনো নির্দিষ্ট সীমারেখা টানা যায় না। -বন্ধুবান্ধব, খেলার সাথী, বৃহত্তর সমাজ পরিবেশের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক -গোষ্ঠী, ধর্মীয় গোষ্ঠী এইসব উপাদানের বা সামাজিক সংস্থার কোনো অবাঞ্ছিত ক্রিয়াকলাপ ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে।
এগুলি ছাড়াও মানসিক অসুস্থতার অন্যান্য কারণগুলি হল – মস্তিষ্কে আঘাত, মাদকাসক্তি, দীর্ঘ অসুস্থতা বা রোগে ভোগা প্রভৃতি ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যকে বিঘ্নিত করে। শব্দদূষণ, জলদূষণ, বায়ুদূষণ, দৃশ্যদূষণ প্রভৃতি পরিবেশ দূষণ মানসিক স্বাস্থ্যকে বিঘ্নিত করে।
সচেতনতার অভাব আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের দৈনন্দিন সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি করে। অক্ষমতা, কুসংস্কার, ভ্রান্তবিশ্বাস বা গোঁড়ামি যেমন কোনো মানুষের সুস্থ জীবনকে বিপন্ন করে তোলে, তেমনই মানসিক স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি করে।
(৯) বয়ঃসন্ধিকালকে কেন ঝড়ঝঞ্ঝার কাল বলা হয় ?
উত্তর – বয়ঃসন্ধিকাল হল ঝড়ঝঞ্ঝার কাল: বাল্যকাল এবং প্রাপ্তবয়স্ক কালের মধ্যবর্তী সময়কাল হল বয়ঃসন্ধিকাল বা নবযৌবন কাল। AT Jersild -এর মতে, “নবযৌবন কাল বা কৈশোরকাল হল এমন একটি বয়স স্তর, যে সময় ছেলেমেয়েরা দৈহিক, মানসিক, সামাজিক, প্রাক্ষোভিক ও বৌদ্ধিক দিক দিয়ে শৈশব থেকে প্রাপ্তবয়স্কতার দিকে এগিয়ে চলে।“ যেহেতু শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, প্রাক্ষোভিক, বৌদ্ধিক ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন আসে, হঠাৎ এই পরিবর্তন তারা সহজে মেনে নিতে পারে না। ফলে তাদের জীবন এক সংকটময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়। কোনো কোনো মনোবিদ এই কারণে এই স্তরকে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের স্তর, গৌণ পরিণতির স্তর ইত্যাদি হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন।
Adolescence কথাটি ল্যাটিন শব্দ Adolescere থেকে এসেছে। যার অর্থ হল পরিণমনের পথে বিকাশ। এই অর্থে বয়ঃসন্ধিকাল হল মানবজীবনের এমন একটি সময়, যখন সমাজে উপযুক্ত জীবনযাপনের জন্য কৌশল মানুষ আয়ত্ত করে।
বয়ঃসন্ধিকালে কিশোর-কিশোরীদের মনে একদিকে যেমন নানান প্রশ্ন জাগে, অন্যদিকে কিছু অভূতপূর্ব ইচ্ছার সৃষ্টি হয়। কিন্তু সামাজিক সমর্থনের অভাবে তারা তাদের সেই ইচ্ছাকে দমন করতে বাধ্য হয়। ফলে তাদের মধ্যে তৈরি হয় নানা জটিলতা। বিশেষ করে যৌন চাহিদাকে কেন্দ্র করে নব যুবক-যুবতীদের মধ্যে নানা ধরনের প্রশ্নের উদ্রেক হয় কিন্তু সেইসমস্ত প্রশ্নের সদুত্তর তারা বয়স্কদের কাছ থেকে পায় না, তারা ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করে, এইসমস্ত বিক্ষিপ্ত এবং ভ্রান্ত ধারণাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে মানসিক দ্বন্দ্ব (Conflict) সৃষ্টি হয় এবং তা থেকে সৃষ্টি হয় মানসিক জট (Complex) ও পাপবোধ।
এইসময় যুবক-যুবতীরা সামাজিক দায়িত্বপালনে আগ্রহী হয়ে ওঠে। তারা নিজেকে বুদ্ধি, চেতনা, বিবেচনাতে বয়স্কদের সমকক্ষ মনে করে, বয়স্কদের ভূমিকাও পালন করতে চায়। কিন্তু সমাজ তাদের উপর অতটা আস্থা রাখতে পারে না, বয়স্করা তাদের এই আচরণকে ‘জ্যাঠামো’, ‘ইঁচড়ে পাকামো’ বলে মন্তব্য করেন। এইসমস্ত কারণের জন্য মনোবিদ G { Shall কৈশোরকালকে ‘ঝড়ঝঞ্ঝা বা পীড়ন কষ্টের কাল’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
(১০) উদবেগ কাকে বলে ? উদ্বেগের কারণগুলি আলোচনা করো ।
উত্তর – উদ্বেগ: উদ্বেগ বা Anxiety একটি মানসিক ব্যাধি। সাধারণত ভয় থেকে উদ্বেগের উৎপত্তি হয়। অত্যধিক স্নেহ অথবা স্নেহের অভাব থেকে নিউরোসিসের উদ্ভব হয়। নিউরোসিসের একটি বিভাগ হল উদ্বেগ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর মতে, উদ্বেগ হল এমন একটি মানসিক অবস্থা, যা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, ভয় এবং মানসিক অস্থিরতার কারণে সৃষ্টি হয়। এটি ব্যক্তির দৈনন্দিন কাজকর্মে প্রভাব ফেলতে পারে এবং বিভিন্ন শারীরিক লক্ষণ, যেমন- হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি, অতিরিক্ত ঘাম এবং শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে।
উদ্বেগের কারণ: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মতে, উদ্বেগের প্রধান কারণগুলি হল-
(ক) চরম মানসিক চাপ: অতিরিক্ত কাজের চাপ, পড়াশোনার চাপ বা ব্যক্তিগত জীবনের সমস্যা উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে।
(খ) অর্থনৈতিক সমস্যা: অর্থনৈতিক সমস্যা বা ঋণের বোঝা উদ্বেগ বাড়াতে পারে।
(গ) শারীরিক অসুস্থতা: কঠিন অসুখ, দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতা বা পরিবারের কারও অসুস্থতা ব্যক্তিকে বিষণ্ণ, চিন্তিত, ভীত বা ক্রুদ্ধ করে তুলতে পারে। আর এর ফলেই ব্যক্তির মধ্যে উদ্বেগজনিত বিশৃঙ্খলা জন্ম নেয়।
(ঘ) সামাজিক বিচ্ছিন্নতা: পরিবার, বন্ধু বা সমাজ থেকে ব্যক্তি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে উদ্বেগের মাত্রা বেড়ে যায়। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ চাকরি, সম্পর্ক বা জীবনের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অনিশ্চয়তা উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে।
এগুলো ছাড়াও ব্যক্তির জীবনযাত্রা, অতীত অভিজ্ঞতা, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, শৈশবে নির্যাতিত হওয়ার ইতিহাস, অ্যালকোহলে আসক্তি ইত্যাদি কারণে ব্যক্তির মধ্যে উদ্বেগজনিত বিশৃঙ্খলা জন্ম নেয়।
(১১) মানসিক চাপ কাকে বলে ? বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক চাপের কারণগুলি আলোচনা করো ।
উত্তর – মানসিক চাপ: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর মতে, স্ট্রেস বা মানসিক চাপ হল এমন একটি শারীরিক ও মানসিক প্রতিক্রিয়া, যা তখন সৃষ্টি হয়, যখন কেউ চাপে পড়ে বা কোনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। এটি শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অংশ, যা ব্যক্তি যখন কোনো বিপদ বা অতিরিক্ত কাজের চাপ অনুভব করে, তখন সক্রিয় হয়।
মানসিক চাপের কারণসমূহ: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুসারে, কৈশোরে মানসিক চাপের মূল কারণগুলি হল-
(ক) শারীরিক পরিবর্তন: দেহের দ্রুত পরিবর্তন, যেমন- বয়ঃসন্ধিকালীন হরমোনের পরিবর্তন ও গঠনগত পরিবর্তনের কারণে ছেলে-মেয়েরা মানসিক চাপের শিকার হয়।
(খ) শিক্ষাগত চাপ: পরীক্ষার ফলাফল, পড়াশোনার চাপ এবং ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে উদ্বেগ কিশোর-কিশোরীদের মানসিক চাপের অন্যতম একটি কারণ।
(গ) পারিবারিক সমস্যা: বাবা-মায়ের মধ্যে মতবিরোধ, আর্থিক অসুবিধা বা পরিবারের প্রত্যাশার চাপ ছেলেমেয়েদের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে।
(ঘ) সামাজিক চাপ: বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক, সামাজিক স্বীকৃতি পাওয়ার চেষ্টা এবং সহপাঠীদের প্রভাব কখনো কখনো মানসিক চাপ সৃষ্টি করে থাকে।
(ঙ) মানসিক ও আবেগগত পরিবর্তন: আত্মপরিচয় গঠনের সংগ্রাম, আত্মবিশ্বাসের অভাব এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণের সমস্যা কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে।
কৈশোরকালীন মানসিক চাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা শারীরিক, মানসিক, শিক্ষাগত, পারিবারিক ও সামাজিক কারণে সৃষ্টি হতে পারে। সুতরাং বাবা-মা, শিক্ষক ও সমাজের দায়িত্ব হল কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করা।
(১২) হতাশা বা বিষণ্ণতা কাকে বলে ? বিষণ্ণতার কারণগুলি আলোচনা করো ।
উত্তর – হতাশা বা বিষণ্নতা: Depression বা বিষণ্ণতা হল একটি মানসিক অবস্থা, যেখানে একজন ব্যক্তি দীর্ঘ সময় ধরে অতিরিক্ত দুঃখ, আগ্রহহীনতা এবং নেতিবাচক চিন্তাধারায় ভুগে থাকেন। এটি তার দৈনন্দিন কার্যকলাপ, আবেগ, আচরণ এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর গুরুতর প্রভাব ফেলে। অন্যভাবে বলা যায়, হতাশা বলতে লক্ষ্যাভিমুখী আচরণের পথে বাধাকে বোঝায়। হতাশা এমন একটি মানসিক অবস্থা, যখন আত্মমর্যাদাবোধ ও আত্মপ্রত্যয় দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যখন কোনো ব্যক্তির দুঃখজনক মেজাজ অনেক বেশি সময় স্থায়ী হয়, তখন তার হতাশাজনিত দুশ্চিন্তা আসতে পারে।
বিষন্নতার কারণ: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিষণ্ণতার বিভিন্ন কারণ চিহ্নিত করেছে। সেগুলি হল-
(ক) জিনগত কারণ: পারিবারিক ইতিহাসের কারণে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বিষণ্ণতা সৃষ্টি হতে পারে।
(খ) ব্যক্তিগত সমস্যা: পরীক্ষার ফলাফল, পড়াশোনার চাপ এবং ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে উদ্বেগ বিষণ্ণতা সৃষ্টি করতে পারে।
(গ) পারিবারিক সমস্যা: বাবা-মায়ের মধ্যে বিবাদ, বিচ্ছেদ বা পারিবারিক সহিংসতা কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, তারা বিষণ্ণ হয়ে পড়ে।
(ঘ) সামাজিক সম্পর্কের জটিলতা: বন্ধুত্বে বিচ্ছেদ, প্রেমঘটিত সমস্যা বা সামাজিক প্রত্যাখ্যান বিষণ্ণতা সৃষ্টি করতে পারে।
(ঙ) সামাজিক বৈষম্য ও দারিদ্র: নিম্ন আয়ের পরিবারে বেড়ে ওঠা কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বিষণ্ণতার ঝুঁকি বেশি থাকে।
(চ) হরমোনের পরিবর্তন: কৈশোরে শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মানসিক অস্থিরতা বেড়ে যায়, যা বিষণ্ণতার কারণ হতে পারে।
(ছ) নেশা : ধূমপান, মদ্যপান বা মাদকের প্রতি আসক্তি বিষণ্ণতার কারণ হতে পারে।
কিশোর-কিশোরীদের বিষণ্ণতা একটি গুরুতর মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা যা সময়মতো সঠিক চিকিৎসা ও মানসিক সহায়তা না পেলে আত্মহত্যার ঝুঁকি পর্যন্ত বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই পরিবার ও শিক্ষক শিক্ষিকাদের উচিত কিশোর-কিশোরীদের বোঝার চেষ্টা করা এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা।
(১৩) আচরণগত সমস্যা কাকে বলে ? এই সমস্যার কারণগুলি উল্লেখ করো ।
উত্তর – আচরণগত সমস্যা: আচরণগত সমস্যা বলতে এমন আচরণগত প্রবণতাকে বোঝায়, যা সমাজ, পরিবার বা ব্যক্তিগত জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি সাধারণত অনিয়ন্ত্রিত আবেগ, অসংগত আচরণ, আক্রমণাত্মক মনোভাব, সামাজিক নিয়ম না মানা কিংবা অতিরিক্ত উদ্বেগ বা অবসাদের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে এটি বেশি দেখা যায়, তবে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও এই সমস্যা হতে পারে।
আচরণগত সমস্যার কারণ: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুযায়ী, আচরণগত সমস্যার প্রধান কারণগুলি হল-
জিনগত কারণ: জিনগত বিভিন্ন কারণে আচরণগত সমস্যা দেখা
দিতে পারে। যেমন- মস্তিষ্কের কার্যকারিতায় সমস্যা থাকলে শিশু বা ব্যক্তি অস্বাভাবিক আচরণ করতে পারে। নিউরোট্রান্সমিটারের ভারসাম্যহীনতা মানসিক ও আচরণগত সমস্যার কারণ হতে পারে।
পারিবারিক কারণ: পারিবারিক বিভিন্ন কারণে আচরণগত সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন- শৈশবে পর্যাপ্ত ভালোবাসা বা যত্ন না পেলে আচরণগত সমস্যা দেখা দিতে পারে। পরিবারে সহিংসতা, বিচ্ছেদ কিংবা অস্থির পরিবেশ শিশুর আচরণগত সমস্যার কারণ হতে পারে। অভিভাবকদের অত্যধিক শাসন অথবা শাসনে শিথিলতা শিশুর মধ্যে আচরণগত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
সামাজিক কারণ : দরিদ্রতা ও সামাজিক যোগাযোগের অভাবের কারণে আচরণগত সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
মানসিক চাপ: ভয়াবহ দুর্ঘটনার অভিজ্ঞতা থাকলে, মানসিক নির্যাতনের শিকার হলে, অতিরিক্ত পড়ার চাপ থাকলে আচরণগত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
WHO এই সমস্যাগুলোর প্রতিরোধে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা, পারিবারিক সহযোগিতা ও সামাজিক সচেতনতার উপর গুরুত্ব দিয়েছে।
(১৪) বদমেজাজ কী ? শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বদমেজাজের কারণগুলি লেখো ।
উত্তর – বদমেজাজ অল্পতেই রেগে যাওয়াকে বদমেজাজ বলে। কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে বদমেজাজ লক্ষ করা যায়।
বদমেজাজের কারণ :
পিতা-মাতার অবহেলা : বদমেজাজের প্রধান কারণ হল পিতা-মাতার অবহেলা। মা-বাবার থেকে যথেষ্ট ভালোবাসা ও গুরুত্ব না পেলে শিক্ষার্থীরা বদমেজাজি হয়ে ওঠে। শিক্ষক-শিক্ষিকার থেকে অবহেলিত হলেও এরূপ ঘটে।
স্বাধীনভাবে কাজ করাত না পারা: শিক্ষার্থীদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে না দিলে তারা রেগে যায়।
তিরস্কার: শিক্ষার্থীকে কাজে উৎসাহ না দিয়ে প্রতিটি কাজে তিরস্কার করলে শিশু বদমেজাজি হয়ে ওঠে।
চাহিদাপূরণ না হওয়া: শিক্ষার্থীর আকাঙ্ক্ষা বা চাহিদাপূরণ না হলে শিক্ষার্থী মেজাজ হারিয়ে ফেলে।
আত্মপ্রকাশের সুযোগের অভাব: শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থী যদি আত্মপ্রকাশের সুযোগ না পায়, তাহলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই ধরনের আচরণ পরিলক্ষিত হয়।
(১৫) স্কুল-পালানো কী ? এর কারণগুলি আলোচনা করো ।
উত্তর – স্কুল-পালানো: নির্দিষ্ট সময়ের আগে স্কুলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে স্কুলত্যাগকে বলে স্কুল-পালানো। বারবার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে এটি অপরাধমূলক আচরণের পর্যায়ে পড়ে।
কারণ:
অভিযোজান অক্ষম: বিদ্যালয়ের পরিবেশের সঙ্গে সংগতির অভাব।
কম আর্কষণীয়: পঠনপাঠনের প্রতি আকর্ষণ কম।
গতানুগতিক পাঠদান পদ্ধতি: একঘেয়ে শিক্ষণ পদ্ধতি ভালো না লাগা।
শিক্ষকের আচরণ : শিক্ষকের কঠোর শাসন, পড়া তৈরি না হলে কঠোর শাস্তি দেওয়া ইত্যাদি বিষয়গুলি শিক্ষার্থীদের স্কুল-পালানোর অন্যতম কারণ।
অবাঞ্ছিত কাজে লিপ্ত: ক্লাসে সহপাঠীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব না হওয়া, সহপাঠীদের উপহাস, সিনেমা দেখতে যাওয়া, ক্লাসে পড়া তৈরি না করা, অবাঞ্ছিত কাজ ইত্যাদির ফলে শিক্ষার্থীদের স্কুল-পালানোর প্রবণতা বাড়ে।
বিদ্যালয়ের নিয়মনীতি: বিদ্যালয়ের নিয়মনীতি, শৃঙ্খলার সঙ্গে অভিযোজন করতে না পারলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্কুল-পালানোর প্রবণতা দেখা যায়।
(১৬) বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যাসমাধানে পিতা-মাতার ভূমিকা আলোচনা করো ।
উত্তর – বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যাসমাধানে পিতা-মাতার কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নীচে আলোচনা করা হল –
(ক) সমর্থন: নব যুবক-যুবতীদের বয়ঃসন্ধিকালীন শারীরিক, মানসিক এবং আবেগিক পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং সেই বিষয়ে সহানুভূতিশীল হয়ে খোলামেলা আলোচনার জন্য শিক্ষার্থীর অভিভাবক একটি সুন্দর এবং নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করবেন।
(খ) শিক্ষাগত এবং পেশাগত সঠিক নির্দেশনা: বাবা-মায়ের উচিত তাদের সন্তানদের সঠিক পথনির্দেশ করা। তারা সন্তানদের পড়াশোনা এবং ভবিষ্যৎ জীবিকা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ দান করবেন এবং কাঙ্ক্ষিত পথে পরিচালিত করবেন।
(গ) যৌন পাঠ: পিতা-মাতার উচিত নিজেদের সন্তানদের যৌনতা সম্পর্কে উদ্ভূত প্রশ্নের বাস্তবসম্মত জ্ঞান দান করা। এতে তাদের যৌন চাহিদা পরিতৃপ্ত হবে এবং সেই সংক্রান্ত সমস্যা সহজেই দূর হবে।
(ঘ) পারস্পরিক নির্ভরশীলতা: এইসময় সন্তানদের সঙ্গে পিতা-মাতার সম্পর্ক হবে বন্ধুত্বের এবং নির্ভরযোগ্য, যাতে তারা তাদের সমস্যা এবং ভাবনাগুলোকে সহজে পিতা-মাতার সঙ্গে মত বিনিময় করতে পারে।
(ঙ) শারীরিক এবং মনস্তাত্ত্বিক স্বাস্থ্য : পিতা-মাতা সর্বদাই সন্তানদের শারীরিক এবং মনস্তাত্ত্বিক স্বাস্থ্যের প্রতি সতর্ক খেয়াল রাখবেন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তির পরামর্শ নেবেন।
(চ) দায়িত্বজ্ঞান বৃদ্ধি: পিতা-মাতা সন্তানদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করবেন, তাদের স্বাধীনতা দেবেন কিন্তু তা যেন স্বেচ্ছাচারিতার পর্যবসিত না হয় তার জন্য নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ করে দেবেন।
(১৭) অপসংগতি নিরাময়ে শিক্ষকের ভূমিকা লেখো ।
উত্তর – অপসংগতি নিরাময়ে শিক্ষকের ভূমিকা: অপসংগতি দূরীকরণে শিক্ষকের ভূমিকা হল-
সুন্দর বিদ্যালয় পরিবেশ রচনা: বিদ্যালয় পরিবেশ যাতে সুন্দর, আনন্দময় এবং আকর্ষণীয় হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা শিক্ষক/শিক্ষিকার প্রধান দায়িত্ব।
শিশু মনস্তাত্ব জ্ঞান: শিক্ষণ পদ্ধতি যাতে আকর্ষণীয় করা যায়, তার জন্য শিক্ষকের শিশু মনস্তত্বের জ্ঞান থাকা দরকার। প্রয়োজনে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
শরীরচর্চার ব্যবস্থা করা: সুস্থ দেহে সুস্থ মনের বাস। এ কথা মাথায় রেখে শিক্ষার্থীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনমাফিক সুষম খাদ্য সরবরাহ করতে হবে এবং বিদ্যালয়ে নানাপ্রকার খেলাধুলা এবং ব্যায়ামের ব্যবস্থা করতে হবে।
কৌতূহল নিবৃত্তি: বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর স্বাভাবিক কৌতূহল প্রবৃত্তি অবদমন না করে কাঙ্ক্ষিত পথে সেগুলিকে প্রকাশের সুযোগ করে দিতে হবে।
নিরাপত্তা: বিদ্যালয়ে অনেকসময় শিক্ষার্থীরা সামাজিক নিরাপত্তার অভাব বোধ করে। বিদ্যালয়ে যাতে এই ধরনের পরিবেশ সৃষ্টি না হয়, সেদিকে শিক্ষককে নজর রাখতে হবে।
স্বীকৃতিলাভের চাহিদাপূরণ: শিক্ষার্থীর আত্মস্বীকৃতির চাহিদা তৃপ্তির জন্য নানাপ্রকার সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি আয়োজন করতে হবে।
(১৮) শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার্থে বিদ্যালয়ের ভূমিকা লেখো ।
উত্তর – শিশুর বিভিন্নরকম চাহিদাপূরণের মধ্য দিয়ে বিদ্যালয় তার মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে সদর্থক ভূমিকা পালন করতে পারে। নীচে তা আলোচনা করা হল-
বিদ্যালয়ের সামাজিক ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিদ্যালয়ে আদর্শ : সামাজিক পরিবেশ রচনার জন্য সমস্তরকমের জাত-পাত, ধর্মীয় বিভেদ, আর্থসামাজিক অবস্থার বৈষম্য ইত্যাদি থেকে বিদ্যালয়কে মুক্ত রাখতে হবে এবং নিরাপত্তার বাতাবরণ তৈরি করে শিখনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। বিদ্যালয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে চলবে।
শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতা দান: বক্তব্য প্রকাশে শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতা দিতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে নির্ভয়ে উচিত কথা বলতে পারে, সেইরকম আবহাওয়া বিদ্যালয়ে সৃষ্টি করতে হবে।
শ্রেণিকাল্ড মানবিক সম্পর্ক গঠন: শিক্ষার্থীদের প্রতি শিক্ষকের গভীর ভালোবাসা ও স্নেহ থাকা দরকার। তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে ছাত্র-ছাত্রী সুসম্পর্ক যাতে তৈরি হয়, তার জন্য শ্রেণিকক্ষে মানবিক সম্পর্ক সম্বন্ধীয় তাত্ত্বিক আলোচনার ব্যবস্থা, দৈনন্দিন জীবনের সমস্যাগুলির চরিত্র ও সেগুলি সমাধানের পথনির্দেশ ইত্যাদি আলোচনা করা দরকার। 4 বিভিন্ন দিকে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ জাগানোর জন্য সহপাঠক্রমিক কার্যাবলি
সম্পাদনের ব্যবস্থা: শিক্ষার্থীদের emotionগুলি যাতে মুক্ত হওয়ার পথ পায় এবং সহজাত প্রবৃত্তির উদ্দ্গমন (sublimation) হয়, তার জন্য বিদ্যালয়ে খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিতর্কসভা, আলোচনাচক্র, সমাজসেবামূলক কাজ রাখবেন, যার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের বহুমুখী চাহিদার পরিতৃপ্তি ঘটে।
নৈতিকতা ও যৌনশিক্ষা : বিদ্যালয়ে নৈতিকতা ও যৌনশিক্ষা তথা জীবনশৈলীর শিক্ষা শিক্ষার্থীদের কাছে উত্তম সমস্যার সমাধান ও অন্তর্দ্বন্দ্বের অবসানে খুব কার্যকরী ভূমিকা নেয়। তাই বিদ্যালয়কে এসবের ব্যবস্থা করতে হবে।
শিল্প ও সাহিত্য সৃষ্টি : শিক্ষকগণ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের শিল্প ও সাহিত্য সৃষ্টিতে উৎসাহ দেবেন। কারণ শিল্প ও সাহিত্য সৃষ্টির মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা মানসিক চাপ মুক্ত হতে পারে।
নির্দেশনা: শিক্ষার্থীদের নিজের চাহিদামতো শিক্ষাগ্রহণ ও বৃত্তি নির্বাচনের জন্য বিদ্যালয়কে নির্দেশনা কার্যসূচি সংগঠন করতে হবে।
শিক্ষকের ভূমিকা শিক্ষক হলেন শিক্ষার্থীদের বন্ধু, জীবনাদর্শ গঠনকারী এবং পথনির্দেশক। তাই তিনি অবশ্যই শিক্ষার্থীদের পাঠদানকালে নিষ্ঠাবান হবেন এবং তাদের শুভানুধ্যায়ী হবেন। শিক্ষার্থীর জীবনদর্শন গঠনে তাঁকে উদ্যোগী হতে হবে।
আরও পড়ুন –
এডুকেশন – তৃতীয় অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 5 Mark)
এডুকেশন – দ্বিতীয় অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 2 Mark)
এডুকেশন – প্রথম অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর (2 mark)
এডুকেশন – প্রথম অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 10 Mark )
YouTube – Samim Sir