Madhyamik 2026 Bengali Question Answer & Suggestion / মাধ্যমিক 2026 বাংলা প্রশ্ন উত্তর / WBBSE

Madhyamik 2026 Bengali Question Answer & Suggestion / মাধ্যমিক 2026 বাংলা প্রশ্ন উত্তর / WBBSE

Madhyamik 2026 Bengali Question Answer & Suggestion

প্রশ্ন :     ‘ আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন ‘ – কার কথা বলা হয়েছে  ? সে কিভাবে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে ?   (  +  )

                                                         অথবা    

তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই , তার থেকে অপমানের ‘ – ‘ কার সম্পর্কে একথা বলা হয়েছে ? সে কিভাবে তা অনুভব করেছিল   ?  ( + )

উত্তর :

পরিচয় :

আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘ জ্ঞানচক্ষু ‘ গল্পে  লেখিকা  তপনের সম্পর্কে একথা বলেছেন  ।

প্রসঙ্গ :

নতুন মেসোমশাইযকে দেখে তপনের মনে লেখক হওয়ার স্বপ্ন জাগে ফলে তপন                     ‘ প্রথম দিননামে একটি গল্প লিখে সন্ধ্যাতারাপত্রিকায় ছাপানোর জন্য নতুন মেসোমশাইকে দেয় কিন্তু এদিকে মেসোমশাইকারেকশান করার  নামে সম্পূর্ণ গল্পটাই নতুন করে লিখে দিয়েছেন ফলে তপন মনে খুব দুঃখ পায় তখন লেখিকা তপনের সম্পর্কে এমন কথা বলেছেন

তাৎপর্য বিশ্লেষণ :

তপনের প্রথম লেখা গল্পটি তার নতুন মেসোমশাই সন্ধ্যাতারাপত্রিকায় ছাপিয়ে দিতে চেয়েছিলেন মেসোমশাইয়ের কথায় তপন খুব খুশি হয়েছিল তবে বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হলেও তপন তার গল্প ছাপানোর খোঁজ না পেলে সে প্রায় হতাশ হয়ে পড়েছিল এমন সময় একদিন তার  নতুন মেসোমশাই   ছোটোমাসি হাতে একটি সংখ্যাসন্ধ্যাতারাপত্রিকা নিয়ে তার বাড়িতে পৌঁছান সারা বাড়ির লোক শুধু তপনের কথা তার মেসোমশাইয়ের মহত্ত্বের কথা বলতে থাকে এমন সময় তপনের মা তার লেখা গল্পটা পড়ে শোনাতে বলেন কিন্তু তপন গল্পটা পড়তে গিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে কারণ নতুন মেসোমশাই গল্পটাকারেকশনকরতে গিয়ে সম্পূর্ণ গল্পটাই নতুন করে লিখে দিয়েছেন তাই তপনের কাছে গল্পটা আনকোরা অপরিচিত লাগছিল সে মনের দিক থেকে এতটাই ভেঙে পড়েছিল যে , গল্পটা পড়তেই পারছিল না , বোবা হয়ে গিয়েছিল তাই লেখিকা তপনের সম্পর্কে বলেছেন ——-’ আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন ‘

প্রশ্ন :   গিরীশ মহাপাত্রের বেশভূষার পরিচয় দিয়ে তার চরিত্রটি আলোচনা কর

উত্তর :

গিরীশ মহাপাত্রের বেশভুজার পরিচয় :

গিরীশ মহাপাত্রের মাথার সামনের দিকের চুল ছিল বড়ো বড়ো ; ঘাড় কানের দিকে এত ছোটো করে ছাঁটা ছিল যেন নেই বললেই চলে মাথার চুলে দেওয়া ছিল অপর্যাপ্ত তেল ; তাতে ছিল আবার লেবুর তেলের গন্ধ গায়ে ছিল জাপানি সিল্কের চুড়িদার পাঞ্জাবি , বুকপকেট থেকে বাঘআঁকা একটা রুমালের কিছুটা অংশ দেখা যাচ্ছিল তার পরনে ছিল বিলেতি মিলের কালো মকমল পাড়ের সূক্ষ্ম শাড়ি , পায়ে সবুজ রঙের ফুল মোজা , হাঁটুর ওপরে লাল ফিতে দিয়ে বাঁধা , বার্নিশ করা পাম্পশু , হাতে হরিণের শিঙের হাতল দেওয়া বেতের ছড়ি

গিরীশ মহাপাত্রের চরিত্র :

গিরীশ মহাপাত্রের যে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি খুঁজে পাওয়া যায় সেগুলি নীচে আলোচনা করা হল ——-

. রুগ্ন দুর্বল রূপে প্রকাশ : গিরীশ মহাপাত্র নিমাইবাবুর কাছে উপস্থিত হয় কাশতে কাশতে সে নিজেকে বোঝাতে চেষ্টা করে যে , সে কত রুগ্ন দুর্বল সে  দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ছিল

. পরোপকারী ভাব প্রকাশ : গিরীশ মহাপাত্রকে তল্লাশি করে প্রাপ্ত জিনিসের মধ্যে পাওয়া গিয়েছিল গাঁজার কলকে সে আবার গাঁজা খায় না সেটা সে অন্যের প্রয়োজনে কাছে রেখেছিল পরোপকারী ভঙ্গিটি সে প্রকাশ করতে চেয়েছিল

. শান্ত ভাব প্রকাশ : গিরীশ ছিল খুব শান্ত প্রকৃতির লোক পুলিশ কর্মচারী জগদীশবাবু রেগে গিয়ে মিথ্যাবাদীবললে বা ব্যঙ্গ করেদয়ার সাগরবললেও সে কিন্তু নীরব থেকেছে , কোনো প্রতিবাদ করেনি

. বিদায় গ্রহণ অভিনব :  ছদ্মবেশে সব্যসাচী যেভাবে গিরীশের অভিনয় করেছিল তা ছিল প্রশংসার যোগ্য ভাঙা টিনের তোরঙ্গ , চাটাই জড়ানো বিছানার বান্ডিল বগলে চেপে ধীর পায়ে বেরিয়ে যাওয়া দেখলে কেউ তাকে সন্দেহ করবে না যেসে একজন বিপ্লবী

                                           উপসংহারে বলা যায় যে , গিরীশ মহাপাত্রের দেশপ্রেম , পরোপকারী , শান্ত মেজাজি , সাহস প্রতিবাদী স্বভাব ইত্যাদি তাকে পথের দাবীগল্পে প্রধান চরিত্রের দিকে নিয়ে যায়

Madhyamik 2026 Bengali Question Answer & Suggestion / মাধ্যমিক 2026 বাংলা প্রশ্ন উত্তর / WBBSE

প্রশ্ন :   ‘ ইহা যে কতবড়ো ভ্রম তাহা কয়েকটা স্টেশন পরেই সে অনুভব করিল ‘ – ভ্রমটি কি ? কে , কিভাবে তা অনুভব করেছিল ?  ( + )

উত্তর :

ভ্রমটি :

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিতপথের দাবীগল্পে উল্লেখিত অপূর্ব প্রথম শ্রেণির ট্রেনের কামরায় একাই ছিল রাত্রের খাওয়া সেরে শুয়ে পড়ার পর ভেবেছিল যে , সকাল পর্যন্ত তার ঘুম কেউ ভাঙাবে না এটাই ছিল অপূর্বর ভ্রম বা ভুল ধারনা

প্রসঙ্গ :

অপূর্বর অফিসের বড়োসাহেব একসময় অপূর্বকে ভালো নগরের অফিসে যাওয়ার কথা বলেছিল তারপরের দিনই ট্রেনে চেপে বসে ভামো যাওয়ার জন্য সে ভেবেছিল সকাল পর্যন্ত তার  ঘুম কেউ ভাঙাবে  না তখন লেখক আলোচ্য মন্তব্যটি করেন

ভ্রম অনুভবের কৌশল :

ভামো নগরে যাওয়ার জন্য অপূর্ব  অপরাহ্নে ট্রেনে চেপে বসে কামরায় অন্য কোনো যাত্রী ছিল না সন্ধ্যা হলে জামার মধ্য থেকে পৈতা বের করে জল ছাড়াই সে সন্ধ্যাহ্নিক সেরে ফেলে দেরি না করে রাতের খাবার যে সমস্ত এনেছিল তা খেয়ে নিয়ে খাওয়া দাওয়ার কাজ শেষ করে অপূর্ব বেশ পরিতৃপ্ত হয়ে জল পান করে রাতের মতো শুয়ে পড়ল অপূর্ব নিশ্চিত ছিল যে রাতে কেউই তার ঘুম ভাঙাবে না কিন্তু অপূর্বর ধারণাটাই ছিল ভূল কারণ সেই রাতে পুলিশ এসে অপূর্বর তিনবার ঘুম ভাঙায় এবং নাম , ধাম , ঠিকানা লিখে নিয়ে গিয়েছে একবার সে বিরক্ত হয়ে প্রতিবাদও করেছে তাতে তাকে বর্মা  সাবইনস্পেক্টর সাহেবের কটু কন্ঠের জবাব শুনতে হয়েছে , ‘ তুমি তো ইউরোপিয়ান নও এইভাবে কয়েকটা স্টেশন পরেই অপূর্ব তার ভ্রমটি অনুভব করেছিল

প্রশ্ন :   ‘ আদর বদল গল্পে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিচয় দাও

উত্তর :

কাহিনীর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা :

পান্নালাল প্যাটেল রচিতঅদলবদলগল্পে অমৃত ইসাব ছিল পরষ্পরের বন্ধু তারা একদিন হোলির দিনে বিকেলে বাড়ির বাইরে  খেলতে যায় কালিয়া নামে ছেলেটি জোর করে অমৃতাকে মাঠে টেনে নিয়ে তার সাথে কুস্তি লড়তে বাধ্য করলে ইসাব নিজে কালিয়ার সাথে কুস্তি লড়ে  কুস্তি  লড়তে গিয়ে হঠাৎ ইসাবের নতুন জামার পকেটটি ছিঁড়ে যায় ঘটনাক্রমে অমৃত তার বন্ধু ইসাবকে বাঁচানোর জন্য সে তার নিজের ভালো জামাটি ইসাবকে দিয়ে দেয় পরষ্পর জামা অদলবদল করে তারা পরিস্থিতি সামাল দেয় গল্পটার মধ্যে জামা অদল বদলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শেষে গ্রামের প্রধান অমৃত আর ইসাবের নাম বদল করে দেয়

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিচয় :

অমৃত ও ইসাব  ছিল ভিন্ন সম্প্রদায়ের দুটি ছেলে অর্থাৎ অমৃত জাতিতে ছিল হিন্দু আর ইসাব ছিল মুসলিম লেখক দেখলেন মানুষ ধর্ম নিয়ে বড়াই করে , সম্প্রদায়কে ধর্ম মনে করে ; আসলে ধর্ম একটাই সেটা হল মানবধর্ম , সম্প্রদায় কোনো ধর্ম নয় অমৃত ইসাব দুই ভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ হতে পারে , কিন্তু তাদের চিন্তায় , কর্মে , ভাবনায় কোনো পার্থক্য ছিল না লেখক  তাদের চিন্তার মধ্য দিয়ে মানবধর্মের জয়গান ঘোষণা করেছেন মানুষ সম্প্রদায়কে সামনে রেখে কঠিন লড়াইয়ে সামিল হয় ; হিংসা , বিদ্বেষ , হানাহানিতে নিজেদের যুক্ত করে সমাজকে অস্থিরতায় ফেলে দেয় সেটাতো কখনোই করা ঠিক নয় লেখক আলোচ্য গল্পে  সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদহীন মানবধর্মের প্রতিষ্ঠার ইঙ্গিত দিয়ে গভীর সমাজ সচেতনতার পরিচয় দিয়েছেন

প্রশ্ন :   ‘ অমৃত ইসাবের পরষ্পরের প্রতি ভালোবাসার গল্প শুনে তাঁদেরও বুক ভরে গেল ‘ — গল্পটি কি ? তা শুনে কাদের , কেন বুক ভরে গিয়েছিল ?   (   +    +  )

উত্তর :

গল্পটি :

পান্নালাল প্যাটেল রচিতঅদল বদলগল্পে অমৃত ইসাব ছিল অন্তরঙ্গ বন্ধু হোলির দিনে তাদের একই রকম পোশাক দেখে একজন বলে যে , তারা যদি কুস্তি লড়ে তাহলে তাদের শক্তি বোঝা যাবে অমৃতের কুস্তি  লড়ার ইচ্ছা ছিল না কিন্তু কালিয়া অমৃতের গলা ধরে  তাকে ছুঁড়ে ফেলে দিলে ইসাবও বন্ধুর জন্য কালিয়ার সাথে কুস্তি লড়াই করে তারপর অমৃত হঠাৎ দেখে যে , ইসাবের জামার পকেটটি ছিঁড়ে গেছে অমৃত তখন ইসাবকে বাবার মারের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য নিজের ভালো জামাটি  ইসাবকে দেয় আর ইসাবের ছেঁড়া জামাটি নিজে পরে ইসাব যখন অমৃতকে বলেছিল যে , তাকেও তার বাবা মারতে পারে ; তখন অমৃত বলেছিল যে , তাকে বাঁচানোর জন্য তার মা আছে এখানে এই গল্পটির কথা বলা হয়েছে

পরিচয় :

পাড়াপড়শি মায়ের দল ইসাবের বাবা পাঠানের কাছ থেকে এই গল্পটি শুনেছিল   এই গল্পটি শুনে  পাড়াপড়শি মায়েদের বুকের ভরে গিয়েছিল

বুক ভরে যাওয়ার কারণ :

পাড়াপড়শি মায়ের দল জানত যে , অমৃত জাতিতে ছিল হিন্দু , আর ইসাব ছিল মুসলিম তারা এইটাও শুনেছিল যে ,  অমৃত তার গায়ের নতুন জামাটি ইসাবকে দিয়ে দেয় , আর অমৃতের গায়ে থাকা ছেঁড়া জামাটি নিজের গায়ে পরে কারণ অমৃত চেয়েছিল ইসাব যেন তার বাবার কাছ থেকে  মার না খায় শুধু তাই নয় , অমৃত ইসাব কে বলেছিল যে তাকে বাঁচানোর জন্য তার মা আছে ইসাবের  তো বাবা নেই অর্থাৎ পাড়াপড়শি মায়ের দল বুঝতে পারলো যে , আলাদা সম্প্রদায় হওয়া সত্ত্বেও তারা তাদের মানবিক অনুভূতি বন্ধুত্বকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে তাই গল্প শুনে তাদের বুক ভরে গিয়েছিল

প্রশ্ন :   ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ – কবিতায়বেঁধে বেঁধে থাকিবলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ? কবি এমন কথা বলেছেন কেন ?  ( + )

উত্তর :

বেঁধে বেঁধে থাকার অর্থ :

শঙ্খ ঘোষ রচিতআয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকিকবিতায় কবিআমাদেরবলতে কবি সমাজের সাধারণ অসহায় মানুষদের কথা বলেছেন কবি তাদের উদ্দেশ্যে এই ডাক দিয়েছেন তিনি দেখেছেন পৃথিবীর বুকে ঘটে যাওয়া তাদের  নানান দুঃসহ চিত্র তার ফলে সাধারণ অসহায় মানুষ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে তিনি তাদের এমন অবস্থায় দেখতে চান না তিনি চান তারা অসহায় বিচ্ছিন্নভাবে না থেকে একজায়গায় বসবাস করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকুক বেঁধে বেঁধেথাকা বলতে কবি একত্রে চলা বা ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকার কথা বলেছেন

একথা বলার কারণ :

কবি শঙ্খ ঘোষ আলোচ্য কবিতায় বলেছেন যে সমাজে যারা সাধারণ অসহায় মানুষ , তারা চলার পথে ধস , গিরিখাত , বোমারু , হিমানীর বাঁধ ইত্যাদির দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয় শুধু তাই নয়  — তাদের পথ না থাকা , ঘরবাড়ি উড়ে যাওয়া , দোরে দোরে ফেরা , শিশুদের শব কাছে দূরে পড়ে থাকা ইত্যাদির মতো তাদের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছেন অর্থাৎ তারা পৃথিবীর বুকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসনে জর্জরিত , অবহেলিত , এমনকি মৃত্যুর পথে পতিত তাই কবি বলেছেন —  ‘   আমাদের শিশুদের শব

                                                           ছড়ানো রয়েছে  কাছে দূরে  ‘

সমাজে মানুষ একা বাঁচতে পারে না , প্রয়োজন আর পাঁচ জনের সহযোগিতা কবি সেই সত্যটিকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন পৃথিবীর বুকে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দ্বারা সমাজের সাধারণ মানুষের জীবনে বিপন্নতার সৃষ্টি হয় কবি সেই বিপন্নতার পথ থেকে বেরিয়ে আসার পথ নির্দেশ করেছেন সাধারণ মানুষের একমাত্র শক্তি হল মানুষের ঐক্য , মৈত্রী সহাবস্থান সাধারণ মানুষই সমাজের শক্তি , তাদের চিরদিন দুর্বল করে রাখা যায় না কবি সেই সাধারণ মানুষকে সাহস  দিতে পথের দিশা দেখাবার জন্য হাতে হাত রেখে ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকার কথা বলেছেন তাই কবি বলেছেন —-

                                                       ‘ আয় আরো হাতে হাত রেখে

                                                         আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি

প্রশ্ন :     সমুদ্রনৃপতি  সুতা কে ? ‘ সিন্ধুতীরে’ কবিতা অবলম্বনে সমুদ্রনৃপতি সুতার চরিত্র আলোচনা করো ?  (  অথবা  ) ‘ সিন্ধুতীরেকবিতা অবলম্বনে পদ্মার চরিত্রটি লেখো         (     +    )

উত্তর :

পরিচয় :

সৈয়দ আলাওল  রচিত পদ্মাবতীনামক কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গতসিন্ধুতীরেকবিতায় সমুদ্রনৃপতি সুতা হলেন পদ্মা

পদ্মাবতীর চরিত্র :

সিন্ধুতীরেপদ্যাংশে প্রধান চরিত্র তথা সমুদ্রের রাজার কন্যা ছিলেন পদ্মা তার যে চরিত্রগুলি ফুটে উঠেছে সেগুলি নীচে আলোচনা করা হল ————

. সৌন্দর্যপিয়াসী : পদ্মা ছিলেন সৌন্দর্যপিয়াসী তাই প্রকৃতির সৌন্দর্য প্রথমেই  তাঁর চোখে ধরা পড়ে প্রকৃতির বুকে সিন্ধতীরের স্থানটি দেখে পদ্মা মুগ্ধ হয়েছিলেন তাকে দিব্যস্থান বলে চিহ্নিত করেছেন সেখানে গড়ে তুলেছেন নানা ফুলফল গাছের সমাহার নির্মাণ করেছেন রত্নখচিত প্রাসাদ

. হাসিখুশি মনের মানুষ :  পদ্মা ছিলেন হাসিখুশি মনের মানুষ সখীদের নিয়ে তাঁর দিন হাসিখুশিতে চলে যায় তাছাড়া পদ্মা ছিলেন কৌতূহলী চঞ্চলা যখনই ব্যতিক্রমী কিছু তাঁর সামনে এসেছে , তখনই পদ্মা তাঁর কৌতূহলের অবসান ঘটিয়েছে তাই তো সিন্ধুতীরে মান্দাস দেখামাত্র সে সখীদের নিয়ে তাড়াতাড়ি সেখানে পৌঁছেছিলেন

. মানবিক গুণ সম্পন্না : পদ্মা ছিলেন মানবিক গুণ সম্পন্না এক নারী অজানা অপরিচিত হলেও অচেতন কন্যা পদ্মাবতীর কিছুটা শ্বাস পড়ছে দেখে তাঁকে সেবা করতে তৎপর হয়েছিলেন

. সেবাপরায়ণা : পদ্মার এক বিশেষ গুণ ছিল সেবাপরায়ণতা পদ্মা চেয়েছিলেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পঞ্চকন্যার জ্ঞান ফেরানো যায় , ততই ভালো হয় তাই সে সেই কাজে ব্যস্ত ছিলেন দেহকে তপ্ত করা , তন্ত্রমন্ত্র মহৌষধি প্রয়োগ করা , ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানানো —কোনো কিছুই করতে পদ্মা বাদ রাখেননি

. পিতার প্রতি শ্রদ্ধাশীলা : পদ্মা ছিলেন পিতার প্রতি শ্রদ্ধাশীলা তাই তিনি পিতৃগৃহে  হাসিখুশিতে রাত্রিযাপন করেন , অচৈতন্য পদ্মাবতীর চেতনা ফেরাতে পিতার পুণ্যের কথা বলেন পদ্মা সেদিক থেকেও ছিলেন অনন্যা

Madhyamik 2026 Bengali Question Answer & Suggestion / মাধ্যমিক 2026 বাংলা প্রশ্ন উত্তর / WBBSE

প্রশ্ন :   ‘ শোনামাত্র প্রণবেন্দু দপ্ করে জ্বলে উঠেছিল ‘ — প্রণবেন্দু কে ? সে দপ্ করে জ্বলে উঠেছিল কেন ?  ( + )    (  অথবা )

কোনির জীবনে প্রণবেন্দুর অবদান কতটা ছিল তা সংক্ষেপে লেখো      

উত্তর :

প্রণবেন্দু :

মতি নন্দী রচিতকোনি ‘  উপন্যাসে প্রণবেন্দুর আসল নাম ছিল প্রণবেন্দু বিশ্বাস তিনি ছিলেন বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের ট্রেনার এবং হিয়া মিত্রের কোচ

প্রসঙ্গ :

মাদ্রাজে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়নশিপে ২০০ মিটার ৪০০ মিটার প্রতিযোগিতায় হিয়া মিত্রের নামার কথা ছিল কিন্তু প্রণবেন্দু শেষ মুহূর্তে হিয়ার নাম তুলে নিলে হরিচরণ রেগে যায় হরিচরণের যুক্তি এই যে , হিয়ার দুটি ব্রোঞ্জ পাওয়া তো নিশ্চিত ছিল সে বলে ওঠে প্রণবেন্দু কেবল হিয়ার কথাই ভাবলবাংলার নয় তখন আলোচ্য মন্তব্যটি করা হয়

দপ্ করে জ্বলে ওঠার কারণ :

 মাদ্রাজের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে হিয়ার  ২০০ মিটার ৪০০ মিটারে নামার কথা ছিল কিন্তু যে ইভেন্টগুলিতে হিয়ার সোনা পাওয়ার নিশ্চয়তা আছে সেগুলিতে যাতে ক্ষতি না হয় , তার জন্য প্রণবেন্দু ওই ইভেন্টগুলি থেকে হিয়ার নাম তুলে নেয় হলে হরিচরণ প্রণবেন্দুর সঙ্গে তর্ক শুরু করে এবং তাতে উদ্দেশ্য করে বলে যে , হিয়া নামলে দুটি ব্রোঞ্জ আসত বাংলা দুপয়েন্ট পেত এবং চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলার সুযোগ ছিল কিন্তু প্রণবেন্দু কেবল হিয়ার কথা ভেবেছে , বাংলার কথা ভাবছে না আর তাতেই প্রচন্ড রাগে প্রণবেন্দু দপ্ করে ওঠে হরিচরণের কথা প্রণবেন্দুর আত্মসম্মানে আঘাত আনে তাই হরিচরণের কথা শোনামাত্র প্রণবেন্দু দপ্ করে জ্বলে উঠেছিল

প্রশ্ন :   ‘ কোনি তুমি আনস্পোর্টিং—বক্তা কে ? কোন প্রসঙ্গে একথা বলেছেন ? তিনি কোনিকে আনস্পোর্টিং বলেছেন কেন ?   (   +    +  )

উত্তর :

পরিচয় :

মতি নন্দী রচিতকোনিউপন্যাসে আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন  বালিগঞ্জ সুইমিং ক্লাবের সুদক্ষ সাঁতারু হিয়া

প্রসঙ্গ :

প্রণবেন্দু বিশ্বাসের চেষ্টায় কোনি বাংলার জাতীয় দলের সদস্য হয়ে মাদ্রাজে যান   কিন্তু ধীরেন ঘোষ হরিচরণের চক্রান্তে কোনিকে সেখানে গ্যালারির দর্শক হতে হয় মনে তীব্র জ্বালা নিয়ে সে চুপ করে বসে থাকে অবশেষে প্রতিযোগিতার শেষ ইভেন্টে অমিয়া অসুস্থ হয়ে পড়ে ফলে সুযোগ পায় কোনি হিয়া তখন কোনির কাছে  ছুটে এসে তাকে কস্টিউম পরে নেওয়ার কথা বলে কিন্তু এতদিনের বঞ্চনা আর অভিমান নিয়ে কোনি তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় তখন হিয়া কোনিকে উদ্দেশ্য করে আলোচ্য মন্তব্যটি করেন

আনস্পোর্টিং বলার কারণ :

কোনো খেলোয়াড়ের মনোভাবের মধ্যে ব্যক্তিগত আবেগ , ক্ষোভ , হতাশা রাখতে নেই হিয়া এই বিষয়টি বুঝলেও কোনির পক্ষে তা বোঝা সহজ ছিল না এতদিন পর্যন্ত যেআচরণ কোনি  পেয়েছে , তাতে ইভেন্ট রিলেতে নামতে নাচাওয়ার পেছনে তার যুক্তিসংগত কারণও ছিল তাছাড়া হিয়ার কাছে ব্যক্তিগত সাফল্যের চেয়ে বাংলার স্বার্থই বড়ো হয়ে উঠেছে তাই কোনির হাতে চড় খাওয়ার পরেও সমস্ত অভিমান ভুলে হিয়া তার কাছে ছুটে এসেছে কারণ হিয়া জানত বাংলাকে চ্যাম্পিয়ন করার জন্য এই মুহূর্তে কোনিকেই একমাত্র প্রয়োজন সে জাতীয় ভাবাবেগে কোনিকে উপলব্ধি করতে চায় ফলে কোনির মধ্যে এক আবেগ সঞ্চিত হয় তাই  হিয়া কোনিকেআনস্পোর্টিংবলেছিল

Madhyamik 2026 Bengali Question Answer & Suggestion / মাধ্যমিক 2026 বাংলা প্রশ্ন উত্তর / WBBSE

প্রশ্ন : ১০ প্রশ্ন :-  ‘ আয় আরো বেঁধে বেধেঁ থাকিকবিতায় কবির সমাজভাবনার যে প্রকাশ ঘটেছে তা নিজের ভাষায় লেখো  অথবা ) ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকিকবিতায় কবি বেঁধে বেঁধে থাকার কথা বলেছেন কেন ?  ( অথবা )  “ আমাদের শিশুদের শব / ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে “ – প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কবির মানবধর্মের পরিচয় দাও ?

উত্তর :- শঙ্খ ঘোষ রচিত ‘ জলই পাষাণ হয়ে আছে ‘ নামক কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি ‘ কবিতায় কবি সমাজব্যবস্থার এক সংকটপূর্ণ মুহূর্তের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরেছেন । এই কবিতায় কবি বিপন্ন মানুষদের কথা বলেছেন , যারা সামাজিক , রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিপন্ন । এইসব মানুষদের ডানদিকের পথ ধ্বসে রুদ্ধ  আর বামদিক গভীর গিরিখাতের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত । আশ্রয়হারা এইসব মানুষদের মাথার উপরের আকাশও নিরাপদ নয় , সেখানে রয়েছে বোমারু বিমানের আনাগোনা । এগিয়ে যাওয় র জন্য যে পদক্ষেপ ফেলতে হয় সে স্থানটুকুও নিরাপদ নয় । এমনি দুর্দশাগ্রস্থ মানুষেরা আজ গৃহহারা । তাদের শিশুদের শব চারিদিকে ছড়ানো রয়েছে । তাই কবি বলেছেন —”

                             “  আমাদের শিশুদের শব

                               ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে “

সাধারন মানুষ যখন এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিজের টিকে থাকার সংশয় প্রকাশ করেছে তখন কবি তাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য ডাক দিয়েছেন —-

                           “ আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি “

কিন্তু কেবল সমাজের বাহ্যিক অবক্ষয় নয় , বিপন্ন মানুষ আজ মানসিকভাবেও দুর্বল হয়ে হয়ে পড়েছে । কারন , তাদের নিজেদের কোনো ইতিহাস নেই , যদিও -বা থাকে সেই ইতিহাসে প্রকৃত সত্যের উম্নোচন ঘটেনি । তাই কবি বলেছেন —–

                           “ আমাদের ইতিহাস নেই

                             অথবা এমনই ইতিহাস

                            আমাদের চোখমুখ ঢাকা “

এই সকল মানুষেরা সহানুভূতির কাঙাল । তাদের কথা পৃথিবীর অন্যান্য মানুষ মনে রাখে না ‌ কবি চান সমাজে এখনও কিছু মানুষ রয়েছে যারা বিবেকবান , মনুষ্যত্ব নিয়ে চলতে চায় । তাই তিনি তাদেরকে উজ্জীবিত করে মনে শক্তি – সাহস – উদ্দীপনা  দিয়ে নতুন করে বাঁচার পথ দেখিয়েছেন । যে বাঁচার পথ হল ঐক্য – মৈত্রী ও সংবদ্ধ জীবন । তিনি জগৎ জুড়ে বিদ্যমান থাকা বিপন্নতাকে কাটিয়ে চলতে মানুষকে দিশা দেখিয়েছেন । তাই কবি বলেছেন —–               

“ আয় আরো হাতে হাত রেখে

                      আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি “ ।

প্রশ্ন : ১১ ‘ হরিদার জীবনে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য আছে ‘ –  হরিদা কে ? তার জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্যের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও ?                 ( ১ + ৪ )

উত্তর :  

  পরিচয়  : 

সুবোধ ঘোষ রচিত ‘ বহুরূপী ‘ গল্পে হরিদা হলেন গল্পের প্রধান চরিত্র তথা গল্পকারের প্রিয় এক বন্ধু , যার জীবনের পেশা ছিল বহুরূপী সাজা ।

  নাটকীয় বৈচিত্র্য  :

আলোচ্য গল্পে লেখক আমাদের জানিয়েছেন যে হরিদার জীবনে সত্যিই একটা নাটকীয় বৈচিত্র্য আছে । হরিদার জীবনের যে নাটকীয় বৈচিত্র্যের পরিচয় পাওয়া যায় সেগুলি হল —–

 ( উম্দাদ পাগল  :

         একদিন চকের বাস স্ট্যান্ডের কাছে দুপুরবেলা হঠাৎ হল্লা বেজে ওঠে । একটা উম্দাদ পাগল , মুখ থেকে লালা ঝরছে , চোখ দুটো কটকটে লাল । কোমরে ছেঁড়া কম্বল জড়ানো , গলায় টিনের কৌটার একটা মালা । পাগলটা একটা থান ইট হাতে তুলে নিয়ে বাসের ওপরে বসা যাত্রীদের দিকে তেড়ে যাচ্ছিল । যাত্রীরাও পাগলকে বহুরূপী জেনে কেউ হাসে , কেউ বা বিরক্ত হয় ।

 ( ) রূপসি বাইজি  : 

        কোনোদিন হরিদা ঘুঙুর পরে রূপসি বাইজি সেজে পথে বের হন । সন্ধ্যার আলোয় দোকানে দোকানে যখন লোকজনের ব্যস্ততা থাকে তখন হরিদা রাস্তায় নাচতে নাচতে চলে যায় । দোকানদাররা জানে যে , এই হরির কান্ড । বাইজির ছদ্মবেশে ফরিদা সেদিন আট টাকা দশ আনা পেয়েছিলেন ।

  ( নকল পুলিশ :

         একবার হরিদা নকল পুলিশ সেজে দয়ালবাবুর লিচুবাগানে দাঁড়িয়েছিলেন । এমনকি স্কুলের চারটি ছেলেকেও ধরেছিলেন । শেষপর্যন্ত হরিদা আট – আনা ঘুষ নিয়ে মাস্টারমশাইয়ের অনুরোধ রক্ষা করেছিলেন ।

 ( ) সন্ন্যাসী রূপে আগন্তুক   :  

              সর্বশেষে হরিদা  সন্ন্যাসীর রুপে আগন্তুক হিসেবে এক সন্ধ্যায় জগদীশবাবুর বাড়িতে উপস্থিত হয়েছিলেন । তার উদ্দেশ্য ছিল জগদীশবাবুর সমস্ত ধন সম্পদ লুট করা । কিন্তু তা সফল হয় নি । পরে অবশ্য হরিদা জগদীশবাবুর বাড়ি থেকে তার বকশিশটা নিয়ে আসে ।

                                এছাড়াও হরিদা কখনো বাউল , কাপালিক , কাবুলিওয়ালা , ফিরিঙ্গি কেরামিন সাহেব ইত্যাদি সেজে তার জীবনের নাটকীয় বৈচিত্র্যের পরিচয় দিয়েছেন

আরও পড়ুন :

মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2026

Leave a Comment