জ্ঞানচক্ষু গল্প প্রশ্ন উত্তর  / আশাপূর্ণা দেবী Gyanchakshu Golpo Question Answer Class 10 / WBBSE

জ্ঞানচক্ষু গল্প প্রশ্ন উত্তর (মার্ক – 1, 3, 5) / Gyanchakshu Golpo Question Answer Class 10 / WBBSE

জ্ঞানচক্ষু গল্প প্রশ্ন উত্তর

প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীরা, এই পোস্টটিতে আমি তোমাদের দেখিয়েছি পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদের (WBBSE) মাধ্যমিক / দশম শ্রেণীর বাংলা আশাপূর্ণা দেবীর লেখা জ্ঞানচক্ষু গল্পের কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং পরীক্ষায় কমন পাওয়ার মতো প্রশ্ন উত্তর ও সাজেশন । আর হ্যাঁ, একটা কথা মনে রাখবে যে প্রশ্নগুলির পাশে বেশি স্টার মার্ক (*) সেই প্রশ্নগুলির খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সাজেশনের অন্তর্ভুক্ত । এতো সব প্রশ্নের উত্তর যদি তোমরা না পড়তে পারো , তবে স্টার মার্ক (*) প্রশ্ন উত্তরগুলি পড়লেই হবে । কিন্তু সবচেয়ে বেশি স্টার মার্ক (*) প্রশ্ন উত্তরগুলি আগে পড়বে

মার্ক – 1 ( MCQ )

. কথাটা শুনে তপনের চোখ  – (ক) লাল হয়ে গেল (খ) জ্বালা শুরু হল (গ) মার্বেল হয়ে গেল (ঘ) বুজে গেল

উত্তর (গ) মার্বেল হয়ে গেল

২. তিনি নাকি বই লেখেন।– তিনি হলেন তপনের (ক) মেজোকাকা (খ) ছোটো মেসোমশাই (গ) বড়োমামা (ঘ) ছোটোমাসি

উত্তর (খ) ছোটো মেসোমশাই

. এ দেশের কিছু হবে না বলে তপনের মেসো চলে যান (ক) চায়ের টেবিলে (খ) খবরের কাগজ পড়তে (গ) সিনেমা দেখতে (ঘ) কলেজে

উত্তর (গ) সিনেমা দেখতে

. এ দেশের কিছু হবে না” – কার উক্তি ? – (ক) আশাপূর্ণা দেবীর (খ) তপনের (গ) মেসোমশাইয়ের (ঘ) মাসিমার

উত্তর (গ) মেসোমশাইয়ের

. তপন মূলত মামার বাড়ি এসেছে (ক) গরমের ছুটি উপলক্ষ্যে (খ) বিয়েবাড়ি উপলক্ষ্যে (গ) পুজোর ছুটি কাটাতে (ঘ) সন্ধ্যাতারার প্রকাশ উপলক্ষ্যে

উত্তর (খ) বিয়েবাড়ি উপলক্ষ্যে

. বই লেখা ছাড়া তপনের ছোটো মেসোমশাই  (ক) ডাক্তারি করেন (খ) অধ্যাপনা করেন (গ) সরকারি অফিসে চাকরি করেন (ঘ) ওকালতি করেন

উত্তর (খ) অধ্যাপনা করেন

. তপনের নতুন মেসোমশাই ছিলেন একজন (ক) অভিনেতা (খ) খেলোয়াড় (গ) চিত্রপরিচালক (ঘ) লেখক

উত্তর (ঘ) লেখক

. তপন অবশ্য মাসির এই হইচইতে মনে মনে ক) আনন্দ পায় (খ) উল্লসিত হয় (গ) খুশি হয় (ঘ) পুলকিত হয়

উত্তর (ঘ) পুলকিত হয়

. মেসোমশাইয়ের কলেজের কোন ছুটি চলছে ? (ক) গরমের (খ) পুজোর (গ) বড়োদিনের (ঘ) বিয়ের জন্য নেওয়া ছুটি

উত্তর (ক) গরমের

. রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই। এখানে জহুরি হলেন (ক) মেজো কাকা (খ) বড়ো মেসোমশাই (গ) ছোটোমামা (ঘ) ছোটো মেসোমশাই

উত্তর (ঘ) ছোটো মেসোমশাই

. তপন গল্প লিখে প্রথম জানিয়েছিল (ক) ছোটোমামাকে (খ) ছোটোকাকুকে (গ) ছোটোমাসিকে (ঘ) ছোটোপিসিকে

উত্তর (গ) ছোটোমাসিকে

১১. “রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই।-এখানে রত্নজহুরি হল (ক) তপন ও ছোটোমাসি (খ) তপন ও ছোটোমেসো (গ) তপন ও ‘সন্ধ্যাতারা’-র সম্পাদক (ঘ) তপন ও মেজোকাকু

উত্তর (খ) তপন ও ছোটোমেসো

১২. তপনের লেখা গল্পটা ছোটো মেসোমশাইকে দেখায় (ক) ছোটো পিসেমশাই (খ) ছোটো দিদা (গ) ছোটোমাসি (ঘ) ছোটো ভাই

উত্তর (গ) ছোটোমাসি

১৩. “মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা।” – উপযুক্ত কাজটি হল (ক) গল্প বলা (খ) গল্প লেখা (গ) গল্প ছাপিয়ে দেওয়া (ঘ) কলেজে

উত্তর (গ) গল্প ছাপিয়ে দেওয়া

১৪. তপনের মেসোমশাই কোন পত্রিকার সম্পাদককে চিনতেন ? (ক) শুকতারা (খ) আনন্দমেলা (গ) সন্ধ্যাতারা (ঘ) দেশ

উত্তর (গ) সন্ধ্যাতারা

১৫. চায়ের টেবিলে ওঠে কথাটা।– কোন সময়ে চা পান হচ্ছিল ? (ক) সকালে (খ) বিকেলে (গ) সন্ধ্যায় (ঘ) রাতে

উত্তর (খ) বিকেলে

১৬. তপনের মেসোমশাই কোন পত্রিকায় তপনের লেখা ছাপানোর কথা বলেছিলেন ? (ক) ধ্রুবতারা (খ) শুকতারা (গ) সন্ধ্যাতারা (ঘ) রংমশাল

উত্তর (গ) সন্ধ্যাতারা

১৭. ‘তপনের হাত আছে। এখানে হাত বলতে বোঝানো হয়েছে – (ক) হস্ত (খ) প্রভাব (গ) ক্ষমতা (ঘ) দক্ষতা

উত্তর (ঘ) দক্ষতা

১৮. “কোনোখান থেকে টুকলিফাই করিসনি তো ? এই মন্তব্যটি করেন (ক) তপনের মেজোকাকা (খ) তপনের মা (গ) তপনের ছোটোমাসি (ঘ) তপনের ছোটো মেসোমশাই

উত্তর (গ) তপনের ছোটোমাসি

১৯. প্রথম গল্প লেখার পর নিজের গল্প পড়ে তপনের যা হয়েছিল (ক) আনন্দে আপ্লুত হয়েছিল (খ) গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল (গ) চোখে জল এসেছিল (ঘ) বারুদ্ধ হয়ে পড়েছিল

উত্তর (খ) গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল

২০. তপনের লেখা গল্পটি যে বিষয় নিয়ে, সেটি হল (ক) খুন জখম নিয়ে (খ) অ্যাকসিডেন্ট নিয়ে (গ) না খেতে পেয়ে মরে যাওয়া মানুষ নিয়ে (ঘ) ভরতি হওয়ার অভিজ্ঞতা ও অনুভূতির বিষয় নিয়ে

উত্তর (ঘ) ভরতি হওয়ার অভিজ্ঞতা ও অনুভূতির বিষয় নিয়ে

২১. “শুধু এইটাই জানা ছিল না, যা জানা ছিল না, তা হল (ক) ছোটো মেসোমশাই একজন লেখক (খ) ছোটো মেসোমশাই একজন অধ্যাপক (গ) গল্প সহজ-সাধারণ মানুষেই লিখতে পারে (ঘ) নিজে নিজে ভালো গল্প লেখা যায়

উত্তর (গ) গল্প সহজ-সাধারণ মানুষেই লিখতে পারে

জ্ঞানচক্ষু গল্প প্রশ্ন উত্তর

২২. দুপুরবেলা, সবাই যখন নিথর নিথর, এখানে যে ঋতুর দুপুরের কথা বলা হয়েছে, সেটি হল (ক) শরৎকাল (খ) গ্রীষ্মকাল (গ) বর্ষাকাল (ঘ) বসন্তকাল

উত্তর () গ্রীষ্মকাল

২৩. “বিয়ে বাড়িতেও যেটি মা না আনিয়ে ছাড়েননি।যেটি বলতে কীসের কথা বলা হয়েছে ? (ক) অঙ্কের খাতা (খ) হোম টাস্কের খাতা (গ) ভৌতবিজ্ঞানের খাতা (ঘ) ইতিহাসের খাতা

উত্তর (খ) হোম টাস্কের খাতা

২৪. তপন তার প্রথম গল্পটি লিখেছিল (ক) ঘরে (খ) ছাদে (গ) সিঁড়িতে (ঘ) স্কুলে

উত্তর (গ) সিঁড়িতে

২৫. মামাবাড়ির তিনতলার সিঁড়িতে বসে গল্প লেখার পর তপনের – (ক) চোখে জল এসে যায় (খ) গায়ে কাঁটা দেয় (খ) চারদিক খালি খালি লাগে (ঘ) আনন্দে লাফাতে ইচ্ছা করে

উত্তর (খ) গায়ে কাঁটা দেয়

২৬. ছোটোমাসি তপনের থেকে কত বছরের বড়ো ? (ক) বছর পাঁচেকের (খ) বছর আষ্টেকের (গ) বছর দশেকের (ঘ) বছর বারোর

উত্তর (খ) বছর আষ্টেকের

২৭. তপনের চিরকালের বন্ধু (ক) মা (খ) বাবা (গ) ছোটোমাসি (ঘ) মেজোকাকু

উত্তর (গ) ছোটোমাসি

২৯. বাড়িতে তপনের নাম হয়েছে (ক) গল্পকার, লেখক (খ) কবি, সাহিত্যিক, কথাশিল্পী (গ) কবি, লেখক (ঘ) কথাশিল্পী, গল্পকার

উত্তর (খ) কবি, সাহিত্যিক, কথাশিল্পী

৩০. “যেন নেশায় পেয়েছে। তপনকে যে নেশায় পেয়েছে, তা হল (ক) টিভি দেখার (খ) গল্পের বই পড়ার (গ) ক্রিকেট খেলার (ঘ) গল্প লেখার

উত্তর () গল্প লেখার

৩১. তপনদের বাড়িতে ছোটোমাসি ও ছোটোমেসো কী হাতে বেড়াতে এল ? (ক) চকোলেট (খ) রসগোল্লার হাঁড়ি (গ) দইয়ের ভাঁড় (ঘ) ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকা

উত্তর (ঘ) ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকা

৩২. “সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়, শোরগোল পড়ে যাওয়ার কারণ (ক) ছুটিতে তপন দু-তিনটে গল্প লিখে ফেলেছে (খ) তপনের লেখা গল্প পত্রিকায় ছাপা হয়েছে (গ) ছোটোমাসি আর মেসো ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকা নিয়ে বাড়িতে বেড়াতে এসেছে (ঘ) মেসোর গল্প কারেকশানের কথা বাড়ির সবাই জেনে ফেলেছে

উত্তর (খ) তপনের লেখা গল্প পত্রিকায় ছাপা হয়েছে

৩৩. “পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে ?-অলৌকিক ঘটনাটি হল (ক) এক লেখকের সঙ্গে তপনের ছোটোমাসির বিয়ে হয়েছে (খ) বাড়িতে তপনের নাম হয়ে গেছে কবি, সাহিত্যিক, কথাশিল্পী (গ) তপনের লেখা গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপা হয়েছে (ঘ) তপন দেখল ছাপানো গল্পের একটি লাইনও তার নিজের নয়

উত্তর (গ) তপনের লেখা গল্প সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপা হয়েছে

৩৪. “সূচিপত্রেও নাম রয়েছে নামটি হল (ক) শ্রীতপন কুমার ঘোষ (খ) শ্রীতপন কুমার রায় (গ) শ্রীতপন কুমার দাস (ঘ) শ্রীতপন কুমার পাল

উত্তর (খ) শ্রীতপন কুমার রায়

৩৫. ‘সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় প্রকাশিত তপনের গল্পের নাম (ক) প্রতিদিন (খ) একদিন (গ) কোনোদিন (ঘ) প্রথম দিন

উত্তর (ঘ) প্রথম দিন

৩৬. তপনের গল্পটি একটু আধটু কারেকশান করে দিয়েছেন (ক) মেজোকাকু (খ) ছোটো মেসোমশাই (গ) সেজদা (ঘ) বড়ো জ্যাঠা

উত্তর (খ) ছোটো মেসোমশাই

৩৭. ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে। যে কথা ছড়িয়ে পড়ে, সেটি হল (ক) তপনের গল্প লেখার কথা (খ) তপনের গল্প সন্ধ্যাতারায় ছেপে বেরোনোর কথা (গ) তপনের লেখা ছোটোমেসোর কারেকশান করে দেওয়ার কথা (ঘ) তপনের পরীক্ষায় পাসের কথা

উত্তর (গ) তপনের লেখা ছোটোমেসোর কারেকশান করে দেওয়ার কথা

৩৮. আমাদের থাকলে আমরাও চেষ্টা করে দেখতাম। উক্তিটির বক্তা হলেন(ক) ছোটোমাসি (খ) ছোটোমেসো (গ) তপনের বন্ধুরা (ঘ) মেজোকাকু

উত্তর () মেজোকাকু

৩৯. ডিম ভাজা আর চা খায়, কে ? (ক) তপনের মেজোকাকা (খ) তপনের বাবা (গ) তপনের ছোটোমাসি (ঘ) তপনের মামা

উত্তর (গ) তপনের ছোটোমাসি

৪০. তা ওরকম একটি লেখক মেসো থাকা মন্দ নয়। বক্তা হলেন (ক) তপনের বাবা (খ) তপনের কাকা (গ) তপনের মাসি (ঘ) তপনের মামা

উত্তর (খ) তপনের কাকা

৪১. তপনকে নিজের লেখা গল্পটি পড়ে শোনাতে বলেন (ক) মেজোমাসি (খ) ছোটোমাসি (গ) ছোটো মেসোমশাই (ঘ) তপনের মা

উত্তর () তপনের মা

৪২. বাবা, তোর পেটে পেটে এত। ক্তা কে ?  (ক) তপনের বাবা (খ) তপনের কাকা (গ) তপনের মাসি (ঘ) তপনের মা

উত্তর (ঘ) তপনের মা

৪৩. এর মধ্যে তপন কোথা ? কার মধ্যে ? (ক) লেখকের নামের তালিকায় (খ) পত্রিকায় (গ) ছাপা গল্পের লেখনীতে ঘ) সাহিত্য-সমালোচনায়

উত্তর (গ) ছাপা গল্পের লেখনীতে

৪৪. তপন আর পড়তে পারে না। কারণ (ক) তার ঘুম পাচ্ছিল (খ) তার রাগ হচ্ছিল (গ) তার কষ্ট হচ্ছিল (ঘ) চোখে কম দেখছিল

উত্তর (গ) তার কষ্ট হচ্ছিল

৪৫. তপনের লেখা গল্পটি পড়ে সকলে ধন্য ধন্য করলে তপন (ক) মনে শাস্তি পেল (খ) আনন্দে লাফাতে লাগল (গ) মনে খুব দুঃখ পেল (ঘ) হি-হি করে হাসতে লাগল

উত্তর (গ) মনে খুব দুঃখ পেল

৪৬. “অমুক তপনের লেখা ছাপিয়ে দিয়েছে।অমুক হলেন (ক) প্রকাশক (খ) সম্পাদক (গ) ছোটোমেসো (ঘ) ছোটোমাসি

উত্তর – (ঘ) ছোটোমাসি

মার্ক – 1 ( SAQ )

১. “কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল।” – কোন কথা শুনে তপনের চোখ মার্ব হয়ে গেল ? *

উত্তর তপনের ছোটো মেসোমশাই বই লেখেন এবং সেই বই ছাপা হয় – এ কথা শুনে তপনের চোখ মারবেল হয়ে গিয়েছিল।

. “সেই তিনি নাকি বই লেখেন।” – এখানে কার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তর এখানে তপনের নতুন মেসোমশাইয়ের কথা বলা হয়েছে।

৩. “এবিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের।” – কোন বিষয়ে তপনের সন্দেহ ছিল ? **

উত্তর লেখকরা যে তপনের বাবা, ছোটোমামা বা মেজোকাকুর মতো একজন সাধারণ মানুষ এই বিষয়টি তপন বিশ্বাস করত না, তাই তার সন্দেহ ছিল ।

. কাকে দেখে তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল ?

উত্তর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে নতুন মেসোকে দেখে তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল ।

৫. তপনের নতুন মেসো কোন পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ? **

উত্তর তপনের নতুন মেসো অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

. ‘একেবারে নিছক মানুষ– কী দেখে মেসোমশাই সম্পর্কে তপনের এই ধারণা হয়েছিল ?

উত্তর সাধারণ মানুষ যেমন রোজদিনের প্রয়োজনীয় কাজগুলি করার পাশাপাশি খেতে বসে সাধারণ কথা বলেন, স্নানের সময় স্নান করেন ও ঘুমের সময় ঘুমোন তপনের মেসোমশাইও তাই করতেন, যা দেখে তপনের উক্ত ধারণাটি হয়েছিল।

. “সত্যিকার লেখক। সত্যিকারের লেখকের কোন পরিচয় তপনের কাছে প্রকাশ পেল ?

উত্তর সত্যিকারের লেখক যেমন বই লেখেন এবং সেই বই ছাপাও হয়, তপনের নতুন মেসোর লেখা অনেক বই তেমনি ছাপা হয়। তাই তপন তার নতুন মেসোর মধ্যে সত্যিকারের লেখকের পরিচয় পায়।

৮. তপন প্রধানত কী উপলক্ষ্যে মামার বাড়ি এসেছে ? ***

উত্তর তপন প্রধানত ছোটোমাসির বিয়ে উপলক্ষ্যে মামার বাড়ি এসেছে ।

. “আর সেই সুযোগেই দেখতে পাচ্ছে তপন, তপন কী দেখতে পেয়েছিল ?

উত্তর তপন দেখতে পেয়েছিল লেখক কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব নয়, তারাও তপনদের মতোই সাধারণ মানুষ।

১০. ‘প্রবল আপত্তি তোলে, কে, কীসে আপত্তি তোলে ?

উত্তর তপনের লেখা গল্পটি তার ছোটোমাসি দিবানিদ্রারত মেসোমশাইকে দেখানোর জন্যে দ্রুততার সঙ্গে অগ্রসর হলে তপন প্রবল আপত্তি তোলে।

১১. “তপন অবশ্য মাসির এই হইচইতে মনে মনে পুলকিত হয়।” – তপন কেন মনে মনে পুলকিত হয়েছিল ? ****

উত্তর ছোটোমাসির হইচইয়ের ফলে তপনের লেখাটি লেখক ছোটোমেসোর হাতে পৌঁছোলে লেখাটির প্রকৃত মূল্য তিনি বুঝতে পারবেন-এই ভেবেই তপন মনে মনে পুলকিত হয়েছিল।

১২. “রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই।”- এখানে ‘রত্ন’ ও ‘জহুরি’ কে ? ****

উত্তর এখানে ‘রত্ন’ হল তপনের লেখা গল্প ও ‘জহুরি’ হল তপনের নতুন মেসোমশাই।

১৩. ‘নতুন মেসোই বুঝবে। কী বুঝবে ?

উত্তর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপনের নতুন মেসোমশাই একজন লেখক হওয়ার দরুন তার লেখা গল্পের প্রকৃত মূল্য বুঝবে।

১৪. ‘তখন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়।’ – তপন কখন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায় ? **

উত্তর নতুন মেসোর মুখে করুণার ছাপ দেখে তপন আহ্লাদে কাঁদো কাঁদো হয়ে যায়।

১৫. “একটু কারেকশান করে ইয়ে করে দিলে ছাপতে দেওয়া চলে।”- কে, কী ছাপানোর কথা বলেছেন ?

উত্তর আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপনের লেখা গল্প তার লেখক ছোটো মেসোমশাই ছাপানোর কথা বলেছেন।

১৬. ‘তপন প্রথমটা ভাবে ঠাট্টা, কোন কথাটা তপন ঠাট্টা ভেবেছিল ?

উত্তর নতুন মেসোমশাই তপনের লেখা গল্পটি ছাপিয়ে দেবেন বলায় প্রথমে কথাটা তপন ঠাট্টা ভেবেছিল।

১৭. তপনের গল্পটি ছোটো মেসোমশাই কোন পত্রিকায় ছাপতে দেন ? *****

উত্তর তপনের গল্পটি ছোটো মেসোমশাই ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপতে দেন।

১৮. মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা। উক্তিটি কার ?

উত্তর আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে গৃহীত আলোচ্য উদ্ধৃতিটি তপনের ছোটোমাসির উক্তি ।

১৯. “ওর হবে। এখানে কার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তর এখানে ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপনের কথা বলা হয়েছে।

২০. মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা।” – বক্তা কোন কাজটিকে ‘উপযুক্ত কাজ’ বলেছে ? *****

উত্তর তপনের লেখা প্রথম গল্পটি ছোটোমাসি যখন তার লেখক স্বামীকে দেখান তখন তিনি তপনের লেখাটি দেখে প্রশংসা করেন ও গল্পটি একটু কারেকশানের পর ছাপার যোগ্য বলে জানান। এই কথা শুনে ছোটোমাসি তার লেখক স্বামীকে তপনের লেখা গল্পটি ছাপিয়ে দিতে বলেন এবং এই কাজটিকেই মেসো হিসেবে তাঁর উপযুক্ত কাজ হবে বলে উল্লেখ করেন।

২১. শুধু এইটাই জানা ছিল না,’- কোন বিষয়টি কার জানা ছিল না ? *****

উত্তর তপনের বাবা-কাকা-মামার মতো একজন সাধারণ মানুষও যে লেখক হতে পারে এই বিষয়টি তপনের নতুন মেসোকে না দেখা অবধি জানা ছিল না।

২২. “নতুন মেসোকে দেখে জানল সেটা। কী জানল ?

উত্তর তপন অনেক গল্প শুনেছে আর পড়েছেও; তাই গল্প সম্পর্কে তার ধারণা ছিল পরিষ্কার। শুধু সে জানত না যে গল্প লেখকরাও সাধারণ মানুষ। তার সেই সংশয় কেটে গেল তার লেখক ছোটোমেসোকে দেখে।

২৩. কোন খাতায় তপন লুকিয়ে গল্প লিখত ? ***

উত্তর স্কুলের হোম টাস্কের খাতায় তিনতলার সিঁড়িতে লুকিয়ে তপন গল্প লিখত।

২৪. ‘দুপুরবেলা, সবাই যখন নিথর– তখন তপন কী করেছিল ?

উত্তর নিস্তব্ধ দুপুরবেলায় তপন আস্তে আস্তে একটা খাতা ও কলম নিয়ে তিনতলার সিঁড়িতে উঠে যায় আর একাসনে বসে একটা গল্প লিখে ফেলে।

২৫. ‘আর তোমরা বিশ্বাস করবে কিনা জানি না, এরূপ কথা কী প্রসঙ্গে বলা হয়েছে ?

উত্তর তপন একদিন দুপুরবেলা তিনতলার সিঁড়িতে গিয়ে একাসনে বসে আস্ত একটা গল্প লিখে ফেলে-এই ঘটনা সকলে বিশ্বাস করবে কিনা সে প্রসঙ্গে সন্দেহ প্রকাশ করতে এরূপ কথা বলা হয়েছে।

২৬. গল্প লেখার পর তপন প্রথমে সেই গল্প কাকে দেখায় ?

উত্তর গল্প লেখার পর তপন প্রথমে সেই গল্প তার ছোটোমাসিকে দেখায় ।

২৭. “তপনকে এখন লেখক বলা চলে।– কখন তপনকে লেখক বলা চলে ?

উত্তর উৎসাহিত তপন তার মামার বাড়ির তিনতলার সিঁড়িতে একাসনে বসে একটা গল্প লিখে ফেলে। লেখার পর যখন সে বুঝতে পারে যে, সে সত্য সত্যই একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলেছে তখন তার নিজেকে ‘লেখক’ বলা চলে বলে মনে হয়।

২৮. তপনের গল্প পড়ে ছোটোমাসি কী বলেছিল ?

উত্তর তপনের লেখা গল্প পড়ে ছোটোমাসি প্রশংসা করলেও গল্পটি টুকলি করে লেখা কিনা জানতে চেয়েছিল ।

২৯. “তপন কৃতার্থ হয়ে বসে বসে দিন গোনে।” – তপন কৃতার্থ হয়েছিল কেন ? *****

উত্তর তপনের আনকোরা হাতে লেখা একটি গল্পকে ছাপানোর প্রতিশ্রুতি দেন তার লেখক মেসোমশাই। তাই তপন কৃতার্থ হয়েছিল।

৩০. “হঠাৎ ভয়ানক একটা উত্তেজনা অনুভব করে তপন, এখানে কোন উত্তেজনার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তর – তপন তার লেখক ছোটোমেসোকে দেখে নিজেও গল্প লিখতে পারে বলে ভাবে। এরপর একদিন সে তিনতলার সিঁড়িতে বসে একটা গোটা গল্প লিখে ফেলে। নতুন গল্প লেখার ফলে সৃষ্ট আনন্দজনিত উত্তেজনার কথাই এখানে বলা হয়েছে।

৩১. ‘এদিকে বাড়িতে তপনের নাম হয়ে গেছে,’- কী কী ? ****

উত্তর তপনের বাড়িতে নাম হয়ে গিয়েছিল কবি, সাহিত্যিক, কথাশিল্পী।

৩২. ‘গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল তপনের,’-তপনের গায়ে কাঁটা দেওয়ার কারণ কী ? ****

উত্তর তপন সবার অলক্ষে তিনতলার সিঁড়িতে বসে একদমে একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলে। তারপর সেটা নিজেই পড়ে এবং নিজের কৃতিত্বের কথা ভেবে তপনের গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে।

৩৩. “যেন নেশায় পেয়েছে। কার, কোন্ নেশার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তর নতুন লেখক মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তপন একটি গল্প লিখে ফেললে ছোটোমাসির উৎসাহে ছোটোমেসো সেটা ছাপিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর থেকে তপনের গল্প লেখাটা নেশা হয়ে দাঁড়ায়।

৩৪. তপন প্রথম গল্পটি ছাপানোর আশা একেবারে ছেড়ে দিয়েছিল কেন ?

উত্তর ছোটোমেসো গল্পটি নিয়ে যাওয়ার পর তপনের ছুটির সময় শেষ হয়ে এসেছিল অর্থাৎ অনেক দিন অতিবাহিত হয়ে যাওয়ায় তপন প্রথম গল্পটি ছাপানোর আশা একেবারে ছেড়ে দিয়েছিল।

৩৫. “বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের।” – বুকের রক্ত ছলকে ওঠার কারণ কী ? ****

উত্তর মামাবাড়ি থেকে ফেরার বেশকিছু দিন বাদে ছোটোমাসি ও মেসো তপনদের বাড়ি বেড়াতে আসে। তাদের হাতে ছিল ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকা। সেটা দেখে তপনের মনে হয়েছিল বুঝি তার গল্প ছাপা হয়েছে, তাই তার বুকের রক্ত ছলকে ওঠে।

৩৬. ‘এমন সময় ঘটল সেই ঘটনা কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তর মামার বাড়ি থেকে ফেরার বেশকিছু দিন বাদে ছোটোমাসি ও মেসো হঠাৎ উপস্থিত হন তপনদের বাড়িতে, তাদের হাতে ছিল তপনের দীর্ঘ প্রতীক্ষার ফল সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় প্রকাশিত গল্পটি। এখানে সেই ঘটনার কথাই বলা হয়েছে।

৩৭. “পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে?”- কোন ঘটনাকে ‘অলৌকিক’ বলা হয়েছে ? ****

উত্তর তপনের লেখা গল্পটি তার নামসহ ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হওয়ার ঘটনাটিকে ‘অলৌকিক’ বলা হয়েছে।

৩৮. সূচিপত্রেও নাম রয়েছে। সূচিপত্রে কী লেখা ছিল ? [অথবা], সূচিপত্রেও নাম রয়েছে। কী নাম রয়েছে ?

উত্তর ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকার সূচিপত্রে লেখা ছিল-“ ‘প্রথম দিন’ (গল্প) শ্রীতপন কুমার রায়।”

৩৯. “সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়,”- কেন ? *****

উত্তর তপনের লেখা গল্প ছাপার অক্ষরে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে দেখে বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়।

৪০. “মেসো অবশ্য মৃদু মৃদু হাসেন,”- মেসোর মৃদু হাসির কারণ কী ? ****

উত্তর তপনের লেখা গল্প দেখে সকলে যখন প্রশংসায় পঞ্চমুখ, তখন মেসো মৃদু মৃদু হাসছিলেন, কারণ তিনি গল্পটা কারেকশান করে দিয়েছেন ।

৪১. “ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে। এখানে কোন কথার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তর তপনের লেখা গল্পটা ছোটো মেসোমশাই কারেকশান করে দেওয়ার পর ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপার কথা, অর্থাৎ ছোটো মেসোমশাইয়ের ‘কারেকশান’ করার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ার কথা বলা হয়েছে।

৪২. গল্প ছাপা হলে যে ভয়ংকর আহ্লাদটা হবার কথা, সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না। উদ্দিষ্ট ব্যক্তির আহ্লাদিত হতে না পারার কারণ কী ?

উত্তর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের তপনের লেখা গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকাতে ছাপা হলেও সে আহ্লাদিত হতে পারে না, কারণ তার গল্পটা কারেকশান করতে গিয়ে ছোটোমেসো সেটি কারেকশান করে দিয়েছিলেন পরে কথা প্রসঙ্গে সে কথা তিনি সবার সামনে বলে দিলে সবার কাছে তপনের লেখার গুরুত্ব কমে যায় ও মেসোর মহত্ত্ব বড়ো হয়ে ওঠে।

৪৩. তপন বইটা ফেলে রেখে চলে যায়, তপনের বই ফেলে রেখে যাওয়ার কারণ কী ?

উত্তর তপন নিজে গল্পটা পড়তে গিয়ে যখন দেখে ছোটো মেসোমশাই আগাগোড়া গল্পটি কারেকশান করেছেন, তখন নিজের গল্পে তপন নিজেকে না খুঁজে পেয়ে চরম আঘাত পেয়েছিল। আর তাই সে বইটি ফেলে রেখে চলে গিয়েছিল।

৪৪. “বাবা, তোর পেটে পেটে এত!” কে, কোন প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন ?

উত্তর  ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপনের মা তপনের গল্প লেখার প্রতিভা ছাপার অক্ষরে প্রকাশ্যে আসার প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন।

৪৫. “তপন আর পড়তে পারে না। তপনের পড়তে না পারার কারণ কী ? [অথবা], “বোবার মতো বসে থাকে। কে, কেন বোবার মতো বসে থাকে ?

উত্তর ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়া যে লেখার মধ্যে তপন নিজেকে, নিজের সত্তাকে খুঁজে পেতে চেয়েছিল সে লেখা তার লেখক মেসোর দক্ষ লেখনীর স্পর্শে পরিবর্তিত রূপ লাভ করে। যার ফলে তপন প্রচণ্ড কষ্ট অনুভব করায় আর পড়তে পারে না। বোবার মতো বসে থাকে।

৪৬. “এর মধ্যে তপন কোথা?” – এরকম বলার কারণ কী ? ***

উত্তর তপন নিজের লেখা যে গল্পটি ছোটো মেসোমশাইকে ছাপানোর জন্য দিয়েছিল আর যে গল্পটি ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপা হয়-দুটির মধ্যে মিল ছিল না। অর্থাৎ, তপনের গল্প বলে যেটি ছাপা হয়েছিল তাতে তপনের লেখা ছিল না, ছিল ছোটোমেসোর লেখা।

৪৭. দুঃখের মুহূর্তে তপনের সংকল্প কী ছিল ? [অথবা], ‘শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে’- কে, কী সংকল্প করে ? *****

উত্তর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে চরম দুঃখের মুহূর্তে তপন সংকল্প করে যদি কখনও নিজের লেখা ছাপতে দেয় তবে কারওর মাধ্যমে নয়, নিজে গিয়ে পত্রিকা অফিসে দিয়ে আসবে, যদি তাতে তার গল্প ছাপা নাও হয় তবুও সে কারওর সাহায্য নেবে না।

৪৮. ‘আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন।’-বক্তার কোন দিনটি সবচেয়ে দুঃখের ? *****

উত্তর যেদিন তপনের ছোটোমাসি ও মেসোমশাই তপনের গল্প যে পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল সেই ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকা নিয়ে তপনদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল, সেদিনটিকে সবচেয়ে দুঃখের বলা হয়েছে।

৪৯. তপনের জীবনে সবচেয়ে সুখের দিন এবং সবচেয়ে দুঃখের দিন কোনটি ? [অথবা] ‘তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই,’ এখানে কোন দুঃখের কথা বলা হয়েছে ?

উত্তর – তপনের লেখা গল্পটি ছোটো মেসোমশাই সুপারিশ করে ছাপানোর ব্যবস্থা করেন এবং লেখাটি প্রকাশের সময় তিনি কারেকশান স্বরূপ গল্পটি একপ্রকার নতুন করে লেখেন, যার দ্বারা তপন উপলব্ধি করে অন্যের দয়ায় গল্প ছাপানো যেমন অপমানের তেমনি গল্পের মধ্যে নিজের লেখা খুঁজে না পাওয়াও চরম দুঃখের। সেই দুঃখের কথাই এখানে বলা হয়েছে।

মার্ক – 3 প্রশ্ন উত্তর

১. “কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল।” – তপন কে ? তপনের চোখ মারবেল হয়ে যাওয়ার কারণ কী ? ১+২ ****

উত্তর – তপনের পরিচয়: ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হল তপন।

চোখ মার্বেল হওয়ার কারণ: তপন তার ছোটোমাসির বিয়ে উপলক্ষ্যে মামার বাড়ি এসেছিল। সেখানেই সে জানতে পারে তার ছোটো মেসোমশাই বই লেখেন এবং তাঁর বেশ কয়েকটা বই ছাপাও হয়েছে। ইতোপূর্বে তপন কোনো লেখককে স্বচক্ষে দেখেনি। তাই একজন সত্যিকারের লেখককে এত কাছ থেকে দেখে তার মনে বিস্ময় জাগায় চোখ মারবেল হয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। আসলে লেখকদের সম্পর্কে সে অনেক অবাস্তব কল্পনা করত যা ভেঙে যাওয়ায় তার চক্ষুস্থির হয়ে যায়।

২. “এবিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের।”কীভাবে তপনের সন্দেহ নিরসন হল ?

উত্তর – তপনের সন্দেহ নিরসন: তপন জানত না যে লেখকরাও তার বাবা, কাকা কিংবা মামার মতো একজন সাধারণ মানুষ হয়। তার সন্দেহ নিরসন হয় তার ছোটো মেসোমশাইকে দেখে। তিনি একজন লেখক অথচ অন্য সাধারণ মানুষের মতোই দাড়ি কামান, সিগারেট খান, খাবার অতিরিক্ত হলে ফিরিয়ে দেন, স্নান করেন, ঘুমোন। এমনকি আর সকলের মতো খবরের কাগজের খবর নিয়ে গল্প কিংবা তর্ক করেন, অবসর সময়ে সিনেমা দেখেন কিংবা বেড়াতেও যান। এসব দেখে তপনের সন্দেহ নিরসন হয় ও সে বিশ্বাস করে যে লেখকরাও সাধারণ মানুষ।

৩. “রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই।”উক্তিটির প্রসঙ্গ নির্দেশ করো । কে, কখন এ কথা ভেবেছে ? ২+১

উত্তর – প্রসঙ্গ: লেখকদের সম্পর্কে তপনের অন্যরকম ধারণা ছিল। লেখকরাও যে সাধারণ মানুষের মতোই এই উপলব্ধি তপনের হয় নতুন মেসোমশাইকে দেখে। তখনই তপনের লেখক হওয়ার স্বপ্ন ডানা মেলে-লেখক হতে আর বাধা থাকে না। এই উপলব্ধি থেকে সে একটা আস্ত ছোটোগল্প লিখে ফেলে। এরপর তার চেয়ে বছর আক্টেকের বড়ো ছোটোমাসিকেই প্রথম সে গল্পটা দেখায়। গল্পটি ছোটোমাসি ছোটোমেসোকে দেখাতে চলে গেলে তপন প্রথমে একটু লজ্জা পেলেও পরক্ষণেই তার মধ্যে এই আপ্তবাক্যটি জেগে ওঠে যে ‘রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই’। তপন বোঝে যে একজন লেখকই তার লেখার প্রকৃত মূল্যায়ন করতে পারবে।

বক্তা ও বক্তব্যের সময়: ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপন এ কথা বলেছে যখন ছোটোমাসি তপনের লেখা গল্পটি ছোটোমেসোকে দেখানোর জন্য হইচই করে তার ঘুম ভাঙিয়ে দেয়।

৪. “মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা।”বক্তা কে? উপযুক্ত কাজটি কী ?

উত্তর – বক্তা: উদ্ধৃতাংশটির বস্তা হলেন ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপনের ছোটোমাসি।

উল্লিখিত কাজ: তপনের সাহিত্যপ্রীতির বহিঃপ্রকাশ স্বরূপ যখন তার লেখা প্রথম গল্পটি ছোটোমাসির হাতে এসে পৌঁছোয় তখন তিনি সেটা তার লেখক স্বামীকে দেখান। তপনের লেখক ছোটোমেসো তপনের লেখাটি দেখে প্রশংসা করেন ও গল্পটি একটু কারেকশানের পর ছাপার যোগ্য বলে জানান। এই কথা শুনে ছোটোমাসি তার লেখক স্বামীকে তপনের লেখা গল্পটি ছাপিয়ে দিতে বলেন এবং এই কাজটিকেই মেসো হিসেবে তাঁর উপযুক্ত কাজ হবে বলে উল্লেখ করেন। এখানে এই কাজটির কথাই বলা হয়েছে।

৫. “… তপনকে এখন ‘লেখক’ বলা চলে।”এ কথা মনে হওয়ার কারণ কী ?

উত্তর – তপনের বোধ ও উপলব্ধি: ছোটোবেলা থেকেই তপনের সাহিত্যের প্রতি আকর্ষণ ছিল। তাই গল্প সম্পর্কে তার ধারণা ছিল স্বচ্ছ; শুধু সে জানত না যে সাধারণ মানুষই তা লিখতে পারে। লেখক ছোটো মেসোমশাইকে দেখে তার সেই ভুল ভেঙেছে। উৎসাহিত তপন নির্জন দুপুরবেলায় মামা বাড়ির তিনতলার সিঁড়িতে একাসনে বসে একটা গল্প লিখে ফেলেছিল। লেখা সম্পূর্ণ হওয়ার পর তার সারা শরীরে উত্তেজনায় কাঁটা দিয়ে উঠেছিল। নিজের লেখার প্রতি তার আত্মবিশ্বাস জন্মেছিল আর নিজেকে ‘লেখক’ বলে ভেবে সে তৃপ্ত হয়েছিল।

৬. “হঠাৎ ভয়ানক একটা উত্তেজনা অনুভব করে তপন,” – কখন ? এরপর সে কী করে ? ২+১ ***

উত্তর – উত্তেজনা অনুভবের সময়: একদিন দুপুরবেলা মামা বাড়ির তিনতলার সিঁড়িতে বসে তপন তার হোম টাস্কের খাতায় আস্ত একখানা গল্প লিখে ফেলে। লেখার পর গল্পটা যখন সে নিজে পড়ে দেখে তখন তার গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে, মাথার চুল খাড়া হয়ে যায়। হুবহু গল্পের মতোই লাগে তার সবকিছু। নিজেকে সে ‘লেখক’ বলে ভাবতে থাকে। আর তখনই সে ভয়ানক এক উত্তেজনা অনুভব করে।

এরপরের ঘটনা: এরপর তাড়াতাড়ি নীচে নেমে এসে তপন তার সবচেয়ে বড়ো বন্ধু ছোটোমাসিকে গল্পের কথাটা অর্থাৎ গল্প লেখার ব্যাপারটা জানায়।

৭. “বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের।”- কখন এবং কেন তপনের এরকম অনুভূতি হয়েছিল ? [অথবা], “বুকের রক্ত ছলকে উঠে তপনের।”- কী কারণে বুকের রক্ত ছলকে ওঠে ? *****

উত্তর – তপনের অনুভূতির দিনক্ষণ: গরমের ছুটির অনেকদিন পর ছোটোমাসি আর মেসোমশাই হাতে একখানা ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকা নিয়ে যেদিন তপনদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন, সেই দিন তপনের এইরকম অনুভূতি হয়েছিল।

এমন অনুভূতির কারণ: সাহিত্য রচনা এবং প্রকাশ সম্পর্কে তপনের দারুণ কৌতূহল ছিল। তাই ছোটো মেসোমশাই তার লেখা গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপানোর জন্য যখন নিয়ে গিয়েছিলেন তখন তপন উৎসাহিত হয়। তবে অপেক্ষা করতে করতে তপন গল্প প্রকাশের আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিল। ঠিক সেই সময়েই ছোটোমাসি আর মেসোমশাই ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকা নিয়ে তাদের বাড়িতে আসায় তার গল্প প্রকাশের আবেগ-উৎকণ্ঠায় তপনের এইরকম অনুভূতি হয়েছিল।

৮. “পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে?”- কোন অলৌকিক ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে  ?

উত্তর – তপনের ভাবনা: সাহিত্যস্রষ্টাদের প্রতি তপনের বরাবরই অন্যরকম ধারণা ছিল। তাই যখন সে জানতে পারল তার নতুন ছোটো মেসোমশাই একজন স্বনামধন্য সাহিত্যিক তখন সে তার বিস্ময় অবদমিত করে রাখতে পারেনি।

অলৌকিক ঘটনাঃ তপনের ছোটো মেসোমশাইয়ের বদান্যতায় তার লেখা গল্প ‘প্রথম দিন’ ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকাতে ছাপা হয়। ছোটোমাসি ও মেসোর হাতে থাকা পত্রিকাতে তপন নিজের লেখা গল্প ছাপার অক্ষরে দেখে বিহ্বল হয়ে পড়ে। এই ঘটনাকেই তপন ‘অলৌকিক ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেছে।

(৯) ‘পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে’- কার মধ্যে এমন ভাবনার উদয় হয়েছিল ? এমন ভাবার কারণ কী ? [অথবা], “পৃথিবীতে এমন অলৌকিকঘটনাও ঘটে?”-অলৌকিক ঘটনাটি কী ? তাকে অলৌকিক বলার কারণ ব্যাখ্যা করো । ১+২ *****

উত্তর – ভাবনার উদয়: প্রখ্যাত কথাশিল্পী আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপনের মধ্যে এমন ভাবনার উদয় হয়েছিল। তপন তার গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হতে দেখে সেটিকে ‘অলৌকিক ঘটনা’-র শামিল বলে মনে করে।

ভাবনার কারণ: তপনের প্রথমে লেখকদের সম্পর্কে একটা অস্পষ্ট ধারণা ছিল। লেখকদের সে রক্তমাংসের জীব বা সাধারণ কোনো মানুষ বলে ভাবতে পারেনি কোনোদিন। কিন্তু ছোটোমেসোকে দেখে তার এই ধারণা বদলায়। আর সেই ছোটোমেসোর প্রভাবেই তার নিজের লেখা গল্প ছাপা হলে সে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ব্যাপারটিকে ‘অলৌকিক’ বলে আখ্যা দেয়।

০. “ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে।”– কোন কথাটা ছড়িয়ে পড়ে ? ছড়িয়ে পড়ার ফল কী হয়েছিল ? ১+২ [অথবা], “ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে।” – কোন কথা ? উত্ত বিষয়ে বাবা ও মেজোকাকুর প্রতিক্রিয়া কী ছিল ? ১+২

উত্তর –  ‘কথা’ প্রসঙ্গ: তপনের প্রকাশিত গল্পটি ছাপতে দেওয়ার আগে ছোটো মেসোমশাই কিছুটা কারেকশান করে দিয়েছেন-এই কথাটা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে বাড়িতে।

ছড়িয়ে পড়ার পরের প্রতিক্রিয়া: ছোটো মেসোমশাইয়ের কারেকশানের কথা বাড়ির সবাই জেনে গেলে তপনের গল্প লেখার কৃতিত্ব খানিকটা ম্লান হয়ে পড়ে। তপনের বাবা, মেজোকাকা ছোটো মেসোমশাইয়ের হাতের ছোঁয়াকেই বেশি গুরুত্ব দিতে চান। সেদিন পারিবারিক আলোচনায় তপনের গল্পের কথা উঠলেও নতুন মেসোর মহত্ত্বের কথাই ঘুরে-ফিরে আসে।

১১. “… যে ভয়ংকর আহ্লাদটা হবার কথা, সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না।” – ‘আহ্লাদ’ হওয়ার কথা ছিল কেন ? ‘আহ্লাদ খুঁজে’ না পাওয়ার কারণ কী ?[অথবা], “… যে ভয়ংকর আহ্লাদটা হবার কথা, সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না।”- কে, কেন ‘ভয়ংকর আহ্লাদ’ খুঁজে পায় না ? *****

উত্তর – আহ্লাদের কারণ: ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপনের লেখা গল্প প্রথমবার ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হয়েছিল। তাই সেটা দেখে তপনকে নিয়ে আহ্লাদ হওয়ার কথা ছিল।

আহ্লাদ থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণ: তপনের লেখা প্রথম গল্পটি পুস্তক আকারে ছাপার সার্থকতা লাভ করে তার লেখক মেসোর সহায়তায়। সেই সঙ্গে ছাপার প্রাক্কালে তপনের কাঁচা হাতে লেখা গল্পটির মান উন্নয়নে ছোটোমেসোর ‘একটু-আধটু কারেকশান’-এর প্রসঙ্গটি ক্রমশ সকলের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সকলে যখন মেসোর সহায়তা আর কারেকশান করার কথা জানতে পারে তখন তপনের প্রথম গল্প প্রকাশের জন্য প্রাপ্ত আহ্লাদ ক্রমে ম্লান হতে থাকে। বস্তুত, ছোটোমেসোর সাহায্য ছাড়া যে তপনের প্রতিভার কোনো মূল্য নেই-এই কথাটিকেই সকলে মান্যতা দেয়। তাই বাড়ির সকলের কাছ থেকে তপন যে আহ্লাদ প্রাপ্তির প্রত্যাশা করেছিল, তার থেকে সে বঞ্চিত হয়।

২. “তপন গড়গড়িয়ে পড়ে যায়। তপনের মাথায় ঢোকে না-সে কী পড়ছে।”তপন কী পড়ছিল ? তার সেটি মাথায় ঢুকছিল না কেন ?১+২

উত্তর – তপনের পড়ার বিষয়: ছোটোমেসোর কারেকশান করে দেওয়া তপনের নিজের লেখা ‘প্রথম দিন’ নামক গল্পটি তপন পড়ছিল।

বোধগম্য না হওয়ার কারণ: তপন যে গল্পটি নিজের সৃষ্টি বলে মনে করেছিল সেটা প্রকৃতপক্ষে ছিল তার লেখক মেসোর কারেকশান করে দেওয়া এক নবনির্মিত গল্প। তপনের ছোটোমেসো গল্পের লাইনগুলি এমনভাবে কারেকশান করেছিলেন যা তপনের পরিচিত লাইনগুলির থেকে ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। যে লেখার মধ্যে তপন নিজেকে, নিজের সত্তাকে খুঁজে পেতে চেয়েছিল সে লেখা তার লেখক মেসোর দক্ষ লেখনীর স্পর্শে পরিবর্তিত রূপ লাভ করে। যার ফলস্বরূপ নিজের লেখা পাঠের মধ্যে যে সাবলীলতা থাকা দরকার তার অভাব তপনের গল্প পাঠে লক্ষিত হয়। অন্যের লেখনভঙ্গি ও বিষয় উপস্থাপনা তপনের কাছে দুর্বোধ্য হয়ে ওঠে। সে শুধুমাত্র গড়গড়িয়ে লেখাটি পাঠ করে, লেখার বিষয় বা সে কী পড়ছে তা আর তার মাথায় ঢোকে না।

১৩. “শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন”, – তপনের সংকল্পের কারণ কী ? ***

উত্তর – সংকল্পের কারণ: তপনের লেখা গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপানোর পিছনে ছিল ছোটোমেসোর অতি সক্রিয় ভূমিকা। তবে গল্পটিকে আগাগোড়া কারেকশান করেন তপনের মেসো। এইজন্য তপন অত্যন্ত মর্মাহত হয় এবং ওই দিনটিকে তার জীবনের অন্যতম দুঃখের দিন বলে গণ্য করে। তপন তার শার্টের তলাটা তুলে চোখের জল মোছে আর সংকল্পবদ্ধ হয় যে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি সে হতে দেবে না। নিজে গিয়ে প্রকাশকের কাছে সে নিজের লেখা দিয়ে আসবে বলে প্রতিজ্ঞা করে। তাতে তার গল্প ছাপা হোক বা না হোক। আত্মসম্মানবোধই তার বড়ো হয়ে দাঁড়ায়।

৪. “শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন”,- কোন দুঃখের মুহূর্তের কথা বলা হয়েছে ? ওই মুহূর্তে তপন কী সংকল্প নিয়েছিল ? [অথবা],”… গভীরভাবে সংকল্প করে তপন,”- কখন, কী সংকল্প করে ?

উত্তর – দুঃখের মুহূর্ত: ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় নিজের ছাপা গল্প পড়তে গিয়ে তপন যখন বুঝল গল্পটি ছোটো মেসোমশাই আগাগোড়া কারেকশান করে দিয়েছেন, তখন নিজের গল্পে নিজেকে খুঁজে না পেয়ে তপন খুব দুঃখ পেয়েছিল।

তপনের সংকল্প: এই দুঃখের মুহূর্তে তপন সংকল্প করে যদি কখনও নিজের লেখা ছাপতে দেয় তবে কারওর মাধ্যমে নয়, নিজে গিয়ে পত্রিকা অফিসে দিয়ে আসবে। যদি তাতে তার গল্প ছাপা নাও হয় তবুও সে নিজে দেবে। কারণ, কেউ সুপারিশ করে তার লেখা ছেপে দিয়েছেন এমন কথা যেমন অপমানের, তেমনি কষ্টের বিষয় হল নিজের লেখা পড়তে গিয়ে অন্যের লেখা লাইন পড়তে বাধ্য হওয়া।

১৫. তপনের জ্ঞানচক্ষু কীভাবে খুলে গিয়েছিল ? **

উত্তর – জ্ঞানচক্ষুর উন্মোচন: প্রখ্যাত কথাশিল্পী আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে লেখক সম্বন্ধে তপনের মনে এক ভ্রান্ত ধারণা ছিল। ছোটোমেসোকে দেখে সেই ধারণার পরিবর্তন হয়। তপন উপলব্ধি করে লেখকরা তার বাবা, কাকা, মামার মতোই সাধারণ মানুষ। এভাবে তার ‘জ্ঞানচক্ষু’ উন্মীলিত হয়। এরপর তপনের লেখা গল্প পত্রিকায় ছাপা হলেও তপন মর্মাহত হয় এটা দেখে যে গল্পে তপনের লেখা সৃষ্টিটি আর অবশিষ্ট নেই। তখন তার পুনর্বার জ্ঞানচক্ষু খুলে গিয়েছিল। সে বুঝতে পেরেছিল নিজের কাজ নিজেকেই করতে হয়। তাই এরপর থেকে নিজের লেখা গল্প অন্যের সাহায্য ছাড়া নিজেকেই ছাপতে দিতে হবে, তা সে ছাপা হোক বা না হোক।

৬. “তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই, তার থেকে অপমানের!”– কোন দুঃখ ও অপমানের কথা এখানে বলা হয়েছে বুঝিয়ে দাও । ১+২

উত্তর – দুঃখ ও অপমান: বিশিষ্ট কথাশিল্পী আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপনের লেখা গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশের সবরকমের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন তপনের লেখক তথা অধ্যাপক মেসো। লেখা প্রকাশের পর পত্রিকায় নিজের নাম ও লেখা ছাপার অক্ষরে দেখে তপন প্রথমে খুব খুশি হলেও পরে তার আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়।

তপন দেখে তার লেখা প্রায় আগাগোড়াই কারেকশান করেছেন তার লেখক মেসো। পড়তে গিয়ে পদে পদে হোঁচট খায় তপন। এক্ষেত্রে অন্যের লেখা নিজের নামে পড়াটাকেই তপন দুঃখের ও অপমানের বলে মনে করেছে।

মার্ক – 5 প্রশ্ন উত্তর

১. “লেখক মানে কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব নয়, তপনদের মতোই মানুষ।”- কার, কীভাবে এই বিশ্বাস জন্মায় ? এই বিশ্বাস তার জীবনে কী প্রভাব ফেলেছিল ? ১+২+২ [অথবা], “লেখক মানে কোনো আকাশ থেকে পড়া জীব নয়,” -এই উপলব্ধি কার ? এমন উপলব্ধির কারণ কী ? ‘লেখক’ সম্পর্কে তার এই মনোভাবের প্রভাব তার কাছে কীভাবে ধরা পড়েছিল তা নিজের ভাষায় লেখো । *****

উত্তর – যার বিশ্বাস জন্মায়: আশাপূর্ণা দেবী রচিত ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র তপনের এই বিশ্বাস জন্মায়।

বিশ্বাস জন্মানোর প্রক্রিয়া: তপন বিভিন্ন পত্রিকা কিংবা বইয়ের পাতায় অনেক গল্প পড়েছে। আর এগুলো পড়ে তার লেখকদের সম্পর্কে ধারণা জন্মেছিল যে, তারা অসাধারণ মানুষ বিশেষ। কিন্তু তপন যখন জানল তার নতুন মেসোমশাই একজন লেখক, তখন থেকেই তার ধারণার পরিবর্তন হতে শুরু করে। জলজ্যান্ত একজন লেখককে এত কাছ থেকে দেখে তপনের ভুল ধারণা ভাঙতে শুরু করে। তপন জানতে পারে যে তার ছোটো মেসোমশাই তার বাবা, ছোটোমামা বা মেজোকাকুর মতোই-‘একেবারে নিছক মানুষ’। তিনিও তাদের মতোই দৈনন্দিন কাজকর্ম করেন, স্নান করেন ও ঘুমোন। নিজের চোখে খুব কাছ থেকে লেখক মেসোমশাইকে দেখেই তপনের এই বিশ্বাস জন্মেছিল।

তপনের জীবনে এর প্রভাব: তপন যখন জানতে পারল যে লেখকরা ‘তপনদের মতোই মানুষ’, অর্থাৎ সাধারণ মানুষও লেখক হতে পারে তখন তার মনে আত্মবিশ্বাস জন্মায় যে, সেও একজন লেখক হতে পারে। উৎসাহভরে তপন একখানি গল্প লিখে ফেলে, আর সেটা ছোটোমাসির হাতঘুরে পৌঁছে যায় ছোটো মেসোমশাইয়ের হাতে। তিনি সেটা পড়ে তপনের লেখার প্রশংসা করেন এবং সেটা কোনো পত্রিকাতে ছাপানোর জন্য তিনি চেষ্টা করবেন-এই প্রতিশ্রুতিও দেন। তপনের গল্প পড়ে মামার বাড়িতে সবাই হাসিঠাট্টা করলেও ছোটো মেসোমশাই তপনের লেখার প্রশংসা করেন।

আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি: রাশি রাশি গল্প পড়ে গল্প সম্পর্কে তপনের পরিষ্কার ধারণা ছিল, শুধু নতুন মেসোকে দেখে তপনের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। সেই আত্মবিশ্বাসে ভর করে তপন গল্প লেখার নেশায় মেতে ওঠে। আর ছোটো মেসোমশাইয়ের সহযোগিতায় সেই গল্পেরই ‘ছাপার অক্ষরে গাঁথা চেহারাটি’ দেখার প্রত্যাশায় সে উন্মুখ হয়ে থাকে।

২. “রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই।”- ‘রত্ন’ ও ‘জহুরি’ বলতে আলোচ্য রচনায় কী বোঝানো হয়েছে ? উদ্ধৃত উক্তিটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও । ২+৩ **

উত্তর –  ‘রত্ন’ ও ‘জহুরি’-র তাৎপর্য: অভিজ্ঞতা-ঋদ্ধা প্রখ্যাত সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে ‘রত্ন’ বলতে তপনের লেখা প্রথম গল্পকে বোঝানো হয়েছে। আবার ‘জহুরি’ বলতে বোঝায় যিনি জহর বা রত্ন চেনেন। এখানে ‘জহুরি’ বলতে তপনের লেখক তথা প্রফেসার মেসোমশাইকে বোঝানো হয়েছে।

উদ্ধৃত উক্তির তাৎপর্য: ছোটোবেলা থেকেই তপনের মনে সুপ্ত বাসনা ছিল সে সত্যিকারের লেখককে নিজের চোখে দেখবে। লেখকদের সম্পর্কে তপনের খুব উচ্চ ধারণা ছিল। লেখকরাও যে সাধারণ মানুষের মতোই এই উপলব্ধি তপনের হয় নতুন মেসোমশাইকে দেখে। তখনই তপনের লেখক হওয়ার স্বপ্ন ডানা মেলে-লেখক হতে আর বাধা থাকে না। এই উপলব্ধি থেকে সে একটা আস্ত ছোটোগল্প লিখে ফেলে। এরপর তার চেয়ে বছর আষ্টেকের বড়ো ছোটোমাসিকেই প্রথম সে গল্পটা দেখায়। গল্পটি ছোটোমাসি ছোটোমেসোকে দেখাতে চলে গেলে তপন প্রথমে একটু লজ্জা পেলেও পরক্ষণেই তার মধ্যে এই আপ্তবাক্যটি (“রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই।”) জেগে ওঠে। তপন বোঝে যে একজন লেখকই তার লেখার প্রকৃত মূল্যায়ন করতে পারবে।

জহুরি যেমন জহর বা রত্ন চেনেন তেমনি একজন লেখক বা জ্ঞানী ব্যক্তিই কোনো লেখার সঠিক মূল্যায়ন করতে পারেন। তপনের ছোটো মেসোমশাই একজন প্রফেসার ও দক্ষ লেখক, তাই সে অর্থে তিনিই ‘জহুরি’ আর তপনের লেখা গল্পটি ‘রত্ন’।

৩. “সত্যিই তপনের জীবনের সবচেয়ে সুখের দিনটি এল আজ?”তপনের জীবনের সুখের দিন কোনটি ? এই সুখের দিনের শেষ পরিণতি কী ঘটেছিল ? ২+৩

[অথবা], “সত্যিই তপনের জীবনের সবচেয়ে সুখের দিনটি এল আজ?”– কোন দিনের কথা বলা হয়েছে ? এই দিনটি তপনের জীবনে কীভাবে স্মরণীয় হয়ে থেকে যায় ? ১+৪

উত্তর – সুখের দিন: আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের তপন মামাবাড়ির থেকে ফেরার পর তার প্রথম গল্পটি ছাপার অক্ষরে প্রকাশ পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়ে দিয়েছিল, ঠিক সেই সময় হঠাৎ একদিন ছোটোমাসি আর মেসোমশাই তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। তাদের সঙ্গে ছিল একটি ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকা। যে পত্রিকাতে তপনের লেখা প্রথম গল্পটি ছোটো মেসোমশাই ছেপে দিতে চেয়েছিলেন।

স্বপ্নপূরণ: তপন নিজের লেখা গল্প ছাপার অক্ষরে আঁটোসাঁটো চেহারায় দেখার আশায় বিভোর হয়ে ছিল। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবে ঘটতে চলেছে এমন বিশ্বাস হয় ছোটোমেসোর হাতে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকা দেখে। অর্থাৎ, নিজের লেখা গল্প পত্রিকায় ছাপার অক্ষরে দেখার দিনটিই ছিল তপনের কাছে ‘সবচেয়ে সুখের দিন’।

৪. “পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে?”- কোন ঘটনাকে অলৌকিক বলা হয়েছে ? এই ঘটনাকে অলৌকিক বলার কারণ কী ? ১+৪

[অথবা], “পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে?”- কোন অলৌকিক ঘটনার কথা বলা হয়েছে ? ওই অলৌকিক ঘটনা তপনের জীবনে কীরূপ প্রভাব ফেলেছিল ? ২+৩ *****

উত্তর – তপনের ভাবনা: সাহিত্যস্রষ্টাদের প্রতি তপনের বরাবরই অন্যরকম ধারণা ছিল। তাই যখন সে জানতে পারল তার নতুন ছোটো মেসোমশাই একজন স্বনামধন্য সাহিত্যিক তখন সে তার বিস্ময় অবদমিত করে রাখতে পারেনি।

অলৌকিক ঘটনাঃ তপনের ছোটো মেসোমশাইয়ের বদান্যতায় তার লেখা গল্প ‘প্রথম দিন’ ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকাতে ছাপা হয়। ছোটোমাসি ও মেসোর হাতে থাকা পত্রিকাতে তপন নিজের লেখা গল্প ছাপার অক্ষরে দেখে বিহ্বল হয়ে পড়ে। এই ঘটনাকেই তপন ‘অলৌকিক ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেছে।

ভাবনার কারণ: তপনের প্রথমে লেখকদের সম্পর্কে একটা অস্পষ্ট ধারণা ছিল। লেখকদের সে রক্তমাংসের জীব বা সাধারণ কোনো মানুষ বলে ভাবতে পারেনি কোনোদিন। কিন্তু ছোটোমেসোকে দেখে তার এই ধারণা বদলায়। আর সেই ছোটোমেসোর প্রভাবেই তার নিজের লেখা গল্প ছাপা হলে সে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ব্যাপারটিকে ‘অলৌকিক’ বলে আখ্যা দেয়।

৫. “তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন।”-দিনটিকে তপনের ‘সবচেয়ে দুঃখের দিন’ বলে মনে হয় কেন? দিনটি তপনের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ? ৩+২ *****

উত্তর – তপনের চূড়ান্ত উপলব্ধি: ছোটোমাসির বিয়ের পর লেখক মেসোমশাইকে দেখে উৎসাহিত হয়ে তপন একটি গল্প লেখে। ছোটো মেসোমশাই তপনকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য গল্পটি ছাপিয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। তপনের গল্পটি ছোটো মেসোমশাইয়ের উদ্যোগে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশ পায়। কিন্তু ছোটো মেসোমশাই যখন পরিবারের সকলের সামনে বলে যে, গল্পটা একটু-আধটু কারেকশান করতে হয়েছে তখন সবাই ছোটো মেসোমশাইয়ের মহত্ত্বকে বড়ো করে দেখে, এক্ষেত্রে তপন ছোটো মেসোমশাইয়ের বদান্যতায় গল্পটা ছাপাতে পেরেছে-এটা তার কাক্ষ্মে ছ অপমানজনক মনে হয়েছিল। এরপর তপন নিজে গল্পটা পড়তে গিয়ে যখন দেখে ছোটো মেসোমশাই আগাগোড়া গল্পটি কারেকশান করেছেন, তখন নিজের গল্পে নিজেকে না খুঁজে পেয়ে সে চরম আঘাত পেয়েছিল। এই কারণে তপনের এরূপ মনে হয়েছিল।

উদ্দিষ্ট দিনটির গুরুত্ব: এই দিনটি ছিল তপনের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই দিনটি হল তার প্রত্যাশা পূরণের দিন। তার লেখক হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার প্রথম ধাপ। তপন তার লেখা প্রথম গল্পটিকে এই দিনটিতেই ছোটোমাসির উৎসাহে ও ছোটোমেসোর চেষ্টায় ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় মুদ্রিত আকারে দেখার সৌভাগ্য লাভ করে। এই ঘটনাকে সে অলৌকিকতার পর্যায়ে ফেলতে চায়।

দীর্ঘ প্রত্যাশার পর একপ্রকার ছেড়ে দেওয়া আশা যখন পূরণ হয় তখন তার গুরুত্ব অনেকাংশে বেড়ে যায়। তেমনটাই হয়েছিল তপনের ক্ষেত্রে।তবে এই দিনটি তপনের কাছে শুধুমাত্র আনন্দের দিন হিসেবেই গুরুত্ব পায়নি। তবে শুধু আনন্দই নয় চরম দুঃখলাভের মধ্য দিয়ে তপনের কাছে শিক্ষামূলকও হয়ে ওঠে দিনটি। তপনের লেখায় ছোটোমেসোর নির্বিচার কলম চালানোয় তার শিল্পীসত্তা আঘাত পায় এবং তার ফলে স্বনির্ভর হওয়ার মন্ত্রে দীক্ষিত হয় তপন।

৬. “তপন আর পড়তে পারে না। বোবার মতো বসে থাকে।” – তপনের এরকম অবস্থার কারণ বর্ণনা করো । *****

উত্তর – আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপনের লেখা গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হলে তার ছোটোমাসি ও মেসোমশাই তা নিয়ে তপনদের বাড়িতে উপস্থিত হয়। একজন স্রষ্টা হিসেবে তপনের কাছে এই স্বীকৃতির মূল্য ছিল অপরিসীম। তাই ছাপার অক্ষরে নিজের লেখা দেখার আগ্রহ তথা উৎসাহ তার অন্তরে লাভার মতো উৎসারিত হচ্ছিল।এমতাবস্থায় পরিবারের সকলের হাতে হাতে ঘুরে সেটা যখন তপনের হাতে পৌঁছোয় এবং মায়ের অনুরোধে তপন যখন সেটা পড়তে শুরু করে তখন তার বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস গল্পপাঠের মধ্য দিয়ে অভিব্যক্ত হতে চায়। কিন্তু গল্পটি পড়তে পড়তে তপন বুঝতে পারে সে যে গল্পটি লিখেছিল আর যে গল্পটি সে পড়ছে তা সম্পূর্ণই আলাদা।– “এর প্রত্যেকটি লাইন তো নতুন আনকোরা, তপনের অপরিচিত।“

তপনের ছোটো মেসোমশাই প্রবল উচ্ছ্বাসে তপনকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য তার গল্প ছাপিয়ে দেবে বলেন। কিন্তু গল্পটি পড়ে তার ছাপানোর যোগ্য বলে মনে না হওয়ায় তপনের অজান্তেই তিনি গল্পটির ‘একটু-আধটু কারেকশান’ করে দেন। তার ওই ‘একটু-আধটু কারেকশান’-এর কারণেই তপনের মনে হয়- “এর মধ্যে তপন কোথা?” ছোটো মেসোমশাই নিজের মহত্ত্ব প্রকাশ করতে গিয়ে তপনের লেখক সত্তাকে আঘাত করে ফেলেন। বস্তুত, ছোটো মেসোমশাইয়ের এই কাজ তপনের অপমানজনক বলে বোধ হয়, চরম মানসিক আঘাত, নিজের স্রষ্টাসত্তার অবমাননা, নিজের সৃষ্টিতে অপরের হস্তক্ষেপ তাকে মর্মে মর্মে আঘাত করতে থাকে। তাই রাগে, অপমানে, কষ্টে, অভিমানে তার কণ্ঠস্বর বুজে আসে। আবেগের বাঁধ-না-মানা প্রাবল্য সে প্রকাশ করতে না পারায় তার বোবার মতো অবস্থা হয়, সে আর পড়তে পারে না।

৭. “তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই, তার থেকে অপমানের!”কার এই ভাবনা ? কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সে এমন ভেবেছিল ?১+৪

উত্তর – ভাবনার স্রষ্টা: প্রখ্যাত লেখিকা আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের নায়ক তপনের এই ভাবনা হয়েছিল।

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত: তপনের কাছে লেখক সম্পর্কে একটা অলীক কল্পনার জগৎ ছিল। ছোটোমেসোকে দেখে তার এই ভুল ভাঙে। তার লেখক হওয়ার স্বপ্ন ছিল প্রথম থেকেই। প্রফেসার তথা লেখক মেসোকে দেখে তপন আরও অনুপ্রাণিত হয়। আত্মবিশ্বাসে ভর করে তার স্বপ্ন বাস্তবতা পায়। সে আস্ত একটা গল্প লিখে ফেলে। তার সবচেয়ে কাছের মানুষ ছোটোমাসিকে গল্পখানা সর্বপ্রথম দেখাতে যায়। ছোটোমাসির হাত ঘুরে সে গল্প পৌঁছোয় লেখক মেসোর কাছে। মাসির প্রশ্রয় ও মেসোর প্রভাবে সে গল্প প্রকাশিত হয় ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায়। স্বাভাবিকভাবেই তপনের আনন্দ আর ধরে না। মনে মনে যথেষ্ট গর্বও অনুভব করে সে। কিন্তু মায়ের নির্দেশে গল্পপাঠের সময় তার ভাবান্তর ঘটে। তপন দেখতে পায় সংশোধন করতে গিয়ে ছোটোমেসো গল্পের সবকিছুই প্রায় বদলে দিয়েছেন। নির্বিচারে কলম চালানোয় তপন ওই গল্পে আর নিজেকে খুঁজে পায় না। নিজের সৃষ্টির অবমাননা তপনকে আঘাত করে-ছাদে গিয়ে অপমানে কেঁদে ফেলে সে। তখনই তপন সংকল্পবদ্ধ হয় ভবিষ্যতে নিজের লেখা সে নিজেই ছাপতে দেবে। এর ফলে যদি তার লেখা ছাপা নাও হয় সে তা মেনে নেবে। নিজের মর্যাদা ও মৌলিকতার সঙ্গে সে আপস করবে না।

৮. ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের তপন চরিত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো। [অথবা], ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প অবলম্বনে তপন চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো । ***

উত্তর – তপনের পরিচয়: আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের তপন একটি অল্পবয়সি ছেলে। সদ্য বিবাহিত ছোটোমাসির থেকে সে প্রায় আট বছরের ছোটো। বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যের জন্য তপন আর পাঁচটা ছেলের থেকে একটু আলাদা –

(ক) সাহিত্যপ্রীতি: তপন ছেলেবেলা থেকে অনেক গল্প শুনেছে, আর এখন গাদা গাদা গল্প পড়ে। অর্থাৎ, বরাবরই তার সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসা রয়েছে।

(খ) শিশুসুলভ কল্পনা: লেখকরা অসাধারণ মানুষ-এরকম ধারণা ছিল তপনের। কিন্তু ছোটো মেসোমশাই আর পাঁচ জনের মতো স্নান, খাওয়াদাওয়া করেন, ঘুমোন, খবরের কাগজ পড়ে তর্ক করেন, এমনকি সিনেমাও দেখেন-এসব দেখে তপনের মনের সন্দেহ দূর হয় এবং সে বুঝতে পারে যে লেখকরাও সাধারণ মানুষ।

(গ) আত্মবিশ্বাসী: গল্প পড়া ও শোনার প্রতি তপনের আগ্রহ ছিল, লেখক মেসোমশাইকে দেখে তার নিজের লেখার ক্ষমতা সম্পর্কে বিশ্বাস জন্মায়- ‘লেখক হতে বাধা কী?’ প্রথম লেখা গল্পটি দেখে ছোটো মেসোমশাই প্রশংসা করে সেটি ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে তপন আরও উৎসাহিত হয়ে একের পর এক গল্প লেখার নেশায় মেতে ওঠে।

(ঘ) অভিমানী: ছোটোমাসির সঙ্গে তপনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক, তাই সে তার প্রথম লেখা গল্প তাকেই দেখায়। কিন্তু গল্পটি ছোটোমাসি “কোনোখান থেকে টুকলিফাই করিসনি তো?” বললে তপন অভিমানী হয়ে পড়ে।

(ঙ) বাস্তববোধ: ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় তপনের লেখা গল্প দেখে পরিবারের সবাই প্রশংসা করে। কিন্তু মেসোমশাই কারেকশানের কথা বললে তপনের কৃতিত্ব ছোটো হয়ে যায়, বরং মেসোমশাইয়ের বদান্যতার কথাই বারবার উঠে আসে। নিজের গল্প নিজে পড়তে গিয়ে তপন লক্ষ করে যে, গল্পের প্রায় প্রতিটি লাইনই মেসোমশাইয়ের তৈরি করা। বাড়ির অন্যরা বিষয়টি বুঝতে না পারলেও তপন নিজের লেখার পরিবর্তিত রূপটি বুঝতে পারে। এরপর সে প্রতিজ্ঞা করে নিজের লেখা অন্য কারওর মাধ্যমে আর ছাপতে দেবে না, তাতে “ছাপা হয় হোক, না হয় না হোক।

আরও পড়ুন –

মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2026

বাংলা ব্যাকরণ: সমাস

প্রতিবেদন ও সংলাপ রচনা সাজেশন 2026

রচনা লেখার নিয়ম

Leave a Comment