Class 12 Education Chapter 6 (2 Mark)। 4th Semester । দ্বাদশ শ্রেণী এডুকেশন প্রশ্ন উত্তর ষষ্ঠ অধ্যায় চতুর্থ সেমিস্টার
Class 12 Education Chapter 6
ষষ্ঠ অধ্যায় – মানসিক স্বাস্থ্য ও মানবকল্যানে জীবন দক্ষতাসমূহ
Mark – 2
(১) জীবন দক্ষতা বলতে কী বোঝো ?
উত্তর – জীবন দক্ষতা হল পরিবর্তিত সবরকম পরিবেশের এবং পরিস্থিতির সঙ্গে অভিযোজন ক্ষমতা এবং ইতিবাচক আচরণের দক্ষতা, যা ব্যক্তিকে জীবনের চাহিদা এবং চ্যালেঞ্জগুলির সঙ্গে কার্যকরীভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম করে।
(২) শৈশব থেকেই জীবন দক্ষতা শেখানো উচিত কেন ?
উত্তর – আজকের শিশু ভবিষ্যতের আদর্শ নাগরিক। জীবনের শুরুতেই জীবন দক্ষতার বিকাশ শিশুকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তোলে এবং নেতৃত্বদানের উপযোগী গুণাবলির বিকাশ ঘটায়। এ ছাড়া এগুলি শিশুকে আত্মবিশ্বাসী এবং সহানুভূতিশীল হতে সাহায্য করে।
(৩) জীবন দক্ষতার শিক্ষা কেন গুরুত্বপূর্ণ ?
উত্তর – জীবন দক্ষতা ব্যক্তি জীবনকে কীভাবে সহজ এবং সরল করতে হয় তা শেখায়। জীবনকে ইতিবাচক করার দক্ষতা, জীবনকে সঠিক উপায়ে ব্যয় করার সক্ষমতা ইত্যাদি জীবন দক্ষতার শিক্ষা থেকে পাওয়া যায়।
(৪) খেলাধূলা কিভাবে জীবন দক্ষতা বিকাশে সাহায্য করে ?
উত্তর – জ্ঞানমূলক বিকাশ বাদ দিয়ে জীবন দক্ষতা বিকাশের অনেক দিক খেলাধুলার মাধ্যমে পূরণ হয়। যেমন খেলাধুলা স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করে শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। হতাশা দূর করে ইতিবাচক মানসিকতা তৈরি করতে সাহায্য করে। বাড়িয়ে দিতে শেখায়। শেখায় ইত্যাদি। ক্রীড়াশীল মনোভাব অন্যকে শ্রদ্ধা করতে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ভুলে বন্ধুত্বের হাত
(৫) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) নির্ধারিত দশটি জীবন দক্ষতা কী কী ?
উত্তর – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত দশটি জীবন দক্ষতা হল – (i) স্ব-সচেতনতা (ii) সমানুভূতি (iii) সমস্যাসমাধানের দক্ষতা (iv) সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা (v) সৃজনশীল চিন্তা (vi) সমালোচনামূলক চিন্তা (vii) যোগাযোগ দক্ষতা (viii) আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্কের দক্ষতা (ix) আবেগ নিয়ন্ত্রণের দক্ষতা (x) চাপ মোকাবিলা করার দক্ষতা
(৬) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুসারে স্ব-সচেতনতা কী ?
উত্তর – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুসারে স্ব-সচেতনতা হল- নিজের আবেগ, মানসিকতা, চিন্তা এবং আচরণ সম্পর্কে গভীরভাবে সচেতন হওয়া। এটি আমাদের নিজের শক্তি, দুর্বলতা এবং মূল্যবোধ বুঝতে সাহায্য করে, যা ব্যক্তিগত উন্নয়ন এবং সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সহায়ক।
(৭) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুসারে সমানুভূতি কী ?
উত্তর – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুসারে সমানুভূতি হল অন্যের অনুভূতি বুঝতে এবং সেগুলির প্রতি সংবেদনশীল হওয়ার ক্ষমতা। এটি এমন একটি মানসিক গুণ, যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি অন্যের অভিজ্ঞতা, দুঃখ বা কষ্টকে গভীরভাবে অনুভব করতে পারে এবং সেই অনুযায়ী আচরণ করতে সক্ষম হয়।
সংক্ষেপে বলা যায়, সমানুভূতি হল অন্যের অনুভূতি বোঝার ও তা অনুভব করার ক্ষমতা।
(৮) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে সমস্যাসমাধানের ধাপ বা পর্যায় কটি ও কী কী ?
উত্তর – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে সমস্যাসমাধানের ছয়টি ধাপ। যথা – (i) সমস্যা চিহ্নিতকরণ, (ii) সমস্যার বিশ্লেষণ, (iii) সমাধানের উপায় বের করা, (iv) উপযুক্ত সমাধান নির্বাচন, সমাধান বাস্তবায়ন এবং (v) পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন ।
(৯) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ কী ?
উত্তর – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ হল একটি প্রক্রিয়া যেখানে একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে বা সমস্যার সমাধানে বিকল্প উপায়গুলির মধ্যে থেকে সেরা এবং সবচেয়ে উপযুক্ত পন্থা বেছে নেওয়া হয়।
(১০) সিদ্ধান্ত গ্রহণের কটি ধাপ ও কী কী ?
উত্তর – সিদ্ধান্ত গ্রহণের ছয়টি ধাপ। ধাপগুলি হল – (i) সমস্যা কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ, (ii) চিহ্নিতকরণ, (iii) তথ্য সংগ্রহ, (iv) বিকল্পের মূল্যায়ন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ,পর্যালোচনা।
(১১) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সৃজনশীল চিন্তা কী ?
উত্তর – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সৃজনশীল চিন্তা হল এমন একটি মানসিক প্রক্রিয়া যা নতুন ধারণা, দৃষ্টিভঙ্গি এবং সমাধান খোঁজার ক্ষেত্রে সহায়ক। এটি সমস্যাসমাধান, সুযোগ চিহ্নিতকরণ এবং নতুন ধারণা উদ্ভাবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
(১২) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সমালোচনামূলক চিন্তা কাকে বলে ?
উত্তর – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, সমালোচনামূলক চিন্তা হল এমন একটি দক্ষতা যা একজন ব্যক্তিকে বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ, মূল্যায়ন ও যৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে। এটি সমস্যাসমাধান, সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তথ্যের মান যাচাই করার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া।
(১৩) সমালোচনামূলক চিন্তার মূল উপাদানগুলি কী কী ?
উত্তর – সমালোচনামূলক চিন্তার মূল উপাদানগুলি হল – (i) তথ্য বিশ্লেষণ করা, (ii) যুক্তি ব্যবহার করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, (iii) তথ্য যাচাই করা, (iv) স্বতন্ত্র চিন্তার বিকাশ করা এবং (v) বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি বিবেচনা করা।
(১৪) সহমর্মিতা বিকাশের যে-কোনো দুটি কৌশল সম্পর্কে লেখো ।
উত্তর – সহমর্মিতা বিকাশের কৌশলগুলি হল –
(ক) অন্যের অবস্থান অনুধাবন: অন্যের পরিস্থিতি ও অনুভূতি বোঝার জন্য নিজেকে সেই স্থানে কল্পনা করা এবং পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা।
(খ) খোলামেলা প্রশ্ন করা: অন্যের অনুভূতি ও চাহিদা উপলব্ধির জন্য খোলামেলা প্রশ্ন করা দরকার। এর ফলে তার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়।
(১৫) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) র মতে, কার্যকর যোগাযোগ কী ?
উত্তর – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, কার্যকর যোগাযোগ হল একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে তথ্য, ভাবনা এবং বার্তা স্পষ্ট, সহজবোধ্য এবং শ্রোতার প্রয়োজন অনুযায়ী এমনভাবে বিনিময় করা হয় যা তথ্যের সঠিক বোঝাপড়া নিশ্চিত করে এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়তা করে।
(১৬) কার্যকর যোগাযোগের 4টি বৈশিষ্ট্য লেখো ।
উত্তর – কার্যকর যোগাযোগের বৈশিষ্ট্যগুলি হল –
(ক) সম্পূর্ণতা: অসম্পূর্ণ বার্তার দ্বারা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়, তাই বার্তার দ্বারা সম্পূর্ণ তথ্য প্রদান করতে হয়, যাতে প্রাপক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
(খ) যথার্থতা: বার্তার তথ্যের যথার্থতা থাকে।
(গ) স্পষ্ট: বার্তা স্পষ্ট হয়। অনিশ্চিত কথা বা জটিল শব্দ, বার্তা বোঝার ক্ষেত্রে অসুবিধা হয়।
(ঘ) সামঞ্জস্যতা: কার্যকর যোগাযোগের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা ও সামঞ্জস্যতা থাকে।
(১৭) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্কের দক্ষতা কী ?
উত্তর – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্কের দক্ষতা হল এমন একটি জীবন দক্ষতা যা মানুষকে অন্যদের সঙ্গে গঠনমূলক এবং স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক স্থাপন ও বজায় রাখতে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার সামাজিক মিথস্ক্রিয়া, যোগাযোগ এবং সহযোগিতার দক্ষতা উন্নত করতে পারে।
(১৮) আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্কের দুটি গুরুত্ব লেখো ।
উত্তর – আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্কের গুরুত্বগুলি হল –
(ক) অনুভূতি ও ভাবনা প্রকাশ: আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্কের মাধ্যমে ব্যক্তি তার অনুভূতি, মতামত ও ভাবনা যথাযথভাবে প্রকাশ করতে শেখে।
(খ) দলগত কাজে সহযোগিতা: আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্কের মাধ্যমে দলগত কাজ করার ক্ষেত্রে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সহমর্মিতার মাধ্যমে সাফল্য অর্জিত হয়।
(১৯) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, আবেগ নিয়ন্ত্রণের দক্ষতা কাকে বলে ?
উত্তর – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, আবেগ নিয়ন্ত্রণের দক্ষতা হল এমন একটি ক্ষমতা বা প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি নিজের আবেগ বা অনুভূতিগুলিকে সচেতনভাবে বোঝেন, পরিচালনা করেন এবং নিয়ন্ত্রণ করেন। এটি মানসিক স্বাস্থ্য ও সামগ্রিক জীবনের মান উন্নত করতে সাহায্য করে।
(২০) আবেগ নিয়ন্ত্রণের দুটি বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো ।
উত্তর – আবেগ নিয়ন্ত্রণের বৈশিষ্ট্যগুলি হল –
(ক) সঠিক আবেগ চিহ্নিতকরণ: ব্যক্তি তার আবেগগুলির মধ্যে থেকে সঠিক আবেগ অর্থাৎ ধনাত্মক বা ঋণাত্মক আবেগকে উপলব্ধি করে চিহ্নিত করার দক্ষতা অর্জন করে।
(খ) আবেগ পরিচালনার পদ্ধতি: গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া, আত্মবিশ্বাস গঠন, ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ইত্যাদি কৌশল প্রয়োগ করে একজন ব্যক্তি তার আবেগকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালিত করতে পারে।
(২১) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, চাপ মোকাবিলা করার দক্ষতা কী ?
উত্তর – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মানসিক চাপ মোকাবিলা বলতে বোঝায় প্রতিকূল পরিস্থিতি, চাপ বা জীবনের চ্যালেঞ্জের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার এবং সেই পরিস্থিতিতে কার্যকরভাবে সাড়া দেওয়ার ক্ষমতা। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে ব্যক্তি মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা বজায় রেখে সমস্যাসমাধান করে এবং নিজের জীবনের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে।
(২২) মানসিক চাপ এড়ানোর জন্য কীভাবে সময় পরিচালনা করা যায় ?
উত্তর – প্রতিদিন একটি তালিকা তৈরি করা, অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা এবং নির্দিষ্ট সময় বিরতি নিয়ে কাজ করা ইত্যাদি সময় পরিচালনায় সাহায্য করে এবং মানসিক চাপ এড়াতে পারে।
(২৩) মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে দৈনন্দিন জীবনে কোন অভ্যাসগুলি কার্যকর ?
উত্তর – নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম, ধ্যান বা যোগব্যায়াম এবং নিজের জন্য সময় বের করা মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সহায়তা করে।
(২৪) চাপ মোকাবিলা করার সহজ উপায় কী ?
উত্তর – গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া, সময় ভাগ করে কাজ করা, প্রিয় মানুষের সঙ্গে কথা বলা এবং নিজের পছন্দের কাজ করা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
(২৫) আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির জন্য কী করা উচিত ?
উত্তর – নিজেকে ভালোভাবে জানার চেষ্টা করা, ইতিবাচক চিন্তা করা, ছোটো ছোটো লক্ষ্য স্থির করা এবং সেগুলি পূরণ করার চেষ্টা করা আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।
(২৬) মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে ভালো সম্পর্কগুলির ভূমিকা কী ?
উত্তর – ভালো সম্পর্ক, যেমন পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা এবং সহানুভূতির যোগাযোগ মানসিক স্বাস্থ্যকে উন্নত করতে সাহায্য করে।
(২৭) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর মতে, জীবন দক্ষতা কী ?
উত্তর – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর মতে, “জীবন দক্ষতা হল অভিযোজিত এবং ইতিবাচক আচরণের দক্ষতা যা ব্যক্তিদের দৈনন্দিন জীবনের চাহিদা এবং চ্যালেঞ্জগুলির সঙ্গে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম করে”।
(২৮) মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্য জীবন দক্ষতার উপায়গুলি কী কী ?
উত্তর – মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্য জীবন দক্ষতার উপায়গুলি হল- স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়া, কৃতজ্ঞতা অনুশীলন, শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা, মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার এড়িয়ে চলা, সাহায্যের জন্য জিজ্ঞাসা করা ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করা ইত্যাদি।
(২৯) জীবন দক্ষতার দুটি গুরুত্ব উল্লেখ করো ।
উত্তর – জীবন দক্ষতার দুটি গুরুত্ব হল নিম্নরূপ- জীবন দক্ষতা শিক্ষার ফলে, সচেতনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় এবং সমালোচনামূলক ও সৃজনশীলভাবে চিন্তা করা যায়। সমস্যাসমাধান করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং জীবনযাপনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া যায়।
(৩০) জীবন দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা কী ?
উত্তর – জীবন দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা হল এমন একটি শিক্ষা পদ্ধতি, যা ব্যক্তিগত জীবনের দক্ষতা বিকাশে মনোযোগ দেয়। এই শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সমস্যাসমাধান, আত্ম-প্রতিফলন, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা, আন্তঃব্যক্তিগত দক্ষতা ইত্যাদি শেখে।
(৩১) জীবন দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষার প্রয়োজন কেন ?
উত্তর – জীবন দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা আত্মবিশ্বাস বিকাশ করতে সাহায্য করে, জীবনের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এবং চ্যালেঞ্জের সঙ্গে সফলভাবে মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত এবং পেশাগত বিকাশের জন্য এটি প্রয়োজন।
(৩২) জীবন দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষার কয়েকটি উদাহরণ দাও ।
উত্তর – জীবন দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষার কয়েকটি উদাহরণ হল-সমস্যাসমাধান, সিদ্ধান্তগ্রহণ, যোগাযোগ দক্ষতা, আত্মসচেতনতা, সমানুভূতি, চাপ মোকাবিলা, সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা, সৃজনশীল চিন্তাভাবনা, আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্ক, আত্ম-প্রতিফলন।
(৩৩) জীবন দক্ষতা শিক্ষার দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো ।
উত্তর – জীবন দক্ষতা শিক্ষার দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল –
(ক) আত্মসচেতনতা: জীবন দক্ষতা শিক্ষা ব্যক্তিকে নিজস্ব অনুভূতি, আচরণ ও চিন্তাভাবনাকে শনাক্তকরণে সাহায্য করে অর্থাৎ আত্মসচেতনতা বৃদ্ধি করে।
(খ) সময় ম্যানেজমেন্ট: জীবন দক্ষতা শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী বুঝতে পারে কোন্ কাজকে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে, কতটা সময় ধরে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। অর্থাৎ কাজের বিষয়ে জীবন দক্ষতা শিক্ষা সময় ম্যানেজমেন্টের জন্য কার্যকরী।
(৩৪) জীবন দক্ষতা শিক্ষাকে কয়ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী ?
উত্তর – জীবন দক্ষতা শিক্ষাকে প্রধানত তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথা – চিন্তন দক্ষতা, সামাজিক দক্ষতা এবং প্রাক্ষোভিক দক্ষতা।
(৩৫) চিন্তন দক্ষতা বলতে কী বোঝো ?
উত্তর – চিন্তন দক্ষতা বলতে এমন এক জীবন দক্ষতাকে বোঝায়, যা মস্তিষ্কের যুক্তিপূর্ণ বিকাশে সাহায্য করে। এই যুক্তিপূর্ণ বিকাশের জন্য প্রয়োজন বিশ্লেষণী দক্ষতা, সৃজনশীল চিন্তন দক্ষতা, সমস্যাসমাধানের দক্ষতা এবং সিদ্ধান্তগ্রহণের দক্ষতা ইত্যাদি।
(৩৬) সামাজিক ও প্রাক্ষোভিক দক্ষতা বলতে কী বোঝো ?
উত্তর – সামাজিক দক্ষতা: সামাজিক দক্ষতা বলতে আন্তর ব্যক্তি দক্ষতা, যোগাযোগ দক্ষতা, নেতৃত্বদানের দক্ষতা, ব্যবস্থাপনার দক্ষতা, সমবেত প্রচেষ্টার দক্ষতা, দল গঠনের দক্ষতা ইত্যাদিকে বোঝায়।
প্রাক্ষোভিক দক্ষতা : যে দক্ষতার মাধ্যমে ব্যক্তি বিভিন্ন ব্যক্তিগত দক্ষতা যেমন-মানসিক চাপ, নিজস্ব অনুভূতি, প্রক্ষোভ, সহপাঠীদের চাপ, পারিবারিক চাপ ইত্যাদির মোকাবিলা করতে পারে, তাকেই প্রাক্ষোভিক দক্ষতা বলা হয়।
(৩৭) জীবন দক্ষতা শিক্ষার দুটি উপাদান সম্পর্কে লেখো ।
উত্তর – জীবন দক্ষতা শিক্ষার উপাদানগুলি বিভিন্ন শর্তের সঙ্গে যুক্ত। এর দুটি উপাদান হল –
(ক) যোগাযোগ: জীবন দক্ষতা শিক্ষার অন্যতম একটি উপাদান হল যোগাযোগ। নিজেকে জীবনযুদ্ধে টিকিয়ে রাখতে গেলে যথাযথ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার।
(খ) সমস্যাসমাধান: সমস্যাসমাধান দক্ষতা বলতে সমস্যা স্থিরীকরণ, সমস্যার বিবৃতি, উক্ত সমস্যার সুবিধা, অসুবিধা সম্পর্কে ধারণা তৈরি এবং সমস্যাটির সমাধানমূলক উপায়গুলিকে যথোপযুক্ত প্রয়োগ করাকে বোঝানো হয়।
(৩৮) মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে জীবন দক্ষতার দুটি ভূমিকা লেখো।
উত্তর – জীবন দক্ষতার শিক্ষা ব্যক্তিকে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে জীবন দক্ষতার দুটি ভূমিকা হল –
(ক) মানসিক চাপ হ্রাস: মানসিক চাপ মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব বিস্তার করে। এর ফলে ব্যক্তির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যা যেমন-উদ্বেগ, ভয়, বিভিন্ন ধরনের শারীরিক রোগ দেখা যায়। জীবন দক্ষতার শিক্ষা ব্যক্তির মধ্যে থেকে মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
(খ) আত্মসম্মান বৃদ্ধি: জীবন দক্ষতার শিক্ষা ব্যক্তির আত্মসম্মান বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে, যার ফলে ব্যক্তির মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠে এবং তার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
(৩৯) মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যাজনিত শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় দুটি জীবন দক্ষতামূলক কাজ লেখো ।
উত্তর – মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যাজনিত শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় দুটি জীবন দক্ষতামূলক কাজ হল –
(ক) বাগান তৈরি করা: বাগান তৈরির মাধ্যমে ফুল, ফল, সবজি ইত্যাদি ফলানো যায়। নিজের হাতে বাগান তৈরি করলে ব্যক্তির মধ্যে মানসিক শান্তি আসে। এর পাশাপাশি বাগান তৈরি করার জন্য শারীরিক পরিশ্রম হয়। যা দৈহিক সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
(খ) অনুশীলন: বিভিন্ন ধরনের অনুশীলনধর্মী জীবন দক্ষতাসম্পন্ন কাজ যেমন-ব্যায়াম, যোগাসন ইত্যাদি মানসিক স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
(৪০) ভূমিকা পালন বা Role Play বলতে কী বোঝো ?
উত্তর – নিজের থেকে আলাদা এমন কারও চরিত্র ও আচরণ অনুকরণ করা হল Role Play বা ভূমিকা পালন। এই ভূমিকা পালন অনুশীলনের দক্ষতা জীবন দক্ষতা শিক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের Role Play সম্বন্ধে শিক্ষা দিলে জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যক্তিকে অবস্থা, পরিস্থিতি অনুযায়ী ভূমিকা পালন করতে হয়।
(৪১) জীবন দক্ষতা শিক্ষার প্রশিক্ষণে শিক্ষকের দুটি ভূমিকা লেখো ।
উত্তর – জীবন দক্ষতা শিক্ষার প্রশিক্ষণে শিক্ষক সাহায্যকারীর ভূমিকা পালন করবেন। এই প্রশিক্ষণে শিক্ষকের দুটি ভূমিকা হল –
(ক) শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে মিথস্ক্রিয়া: শ্রেণিকক্ষে পাঠদানকালে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিথস্ক্রিয়ার প্রয়োজন হয়। এই মিথস্ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চিন্তন দক্ষতা, সৃজনশীল দক্ষতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণ দক্ষতা, বিভিন্ন ধনাত্মক প্রক্ষোভ ইত্যাদির বিকাশ ঘটে।
(খ) শিক্ষার্থীর সমস্যা সম্পর্কিত ধারণা: প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পাঠ সংক্রান্ত, ব্যক্তিগত জীবন সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা থাকতে পারে। শিক্ষক এই সমস্যাগুলির সমাধান সম্পর্কে ধারণা দেবেন এবং প্রয়োজনে সমস্যাসমাধানে সাহায্য করবেন।
(৪২) জীবন দক্ষতা শিক্ষার জন্য বিদ্যালয়ে গৃহীত দুটি কর্মসূচি সম্পর্কে লেখো ।
উত্তর – জীবন দক্ষতা শিক্ষার জন্য বিদ্যালয়ে যে ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করা দরকার, সেগুলির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দুটি কর্মসূচি হল –
(ক) প্রার্থনা: বিদ্যালয়ে পঠনপাঠন শুরু হওয়ার আগে বিভিন্ন ধরনের দেশাত্মবোধক, আধ্যাত্মিক গান, মহাপুরুষদের বাণী ইত্যাদি পাঠ করার ব্যবস্থা থাকে, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সামাজিকতাবোধ, নৈতিকতাবোধ জাগ্রত হয়, যা জীবন দক্ষতা অর্জনে সাহায্য করে।
(খ) সহপাঠক্রমিক কাজের ব্যবস্থা: প্রতিটি বিদ্যালয়ে গান, নাচ, আবৃত্তি, কুইজ ইত্যাদি সংস্কৃতিমূলক কাজ এবং খেলাধুলা, ব্যায়াম ইত্যাদির মতো শারীরিক কার্যাবলির ব্যবস্থা করা হয়, যা শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত কল্যাণ তথা সামাজিক কল্যাণের উপযোগী।
আরও পড়ুন –
এডুকেশন – পঞ্চম অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 5 Mark )
এডুকেশন – চতুর্থ অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 5 Mark )
এডুকেশন – তৃতীয় অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 10 Mark)
এডুকেশন – দ্বিতীয় অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 2 Mark)
এডুকেশন – প্রথম অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর (2 mark)
এডুকেশন – প্রথম অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 10 Mark )
YouTube – Samim Sir