Class 12 Education Chapter 6 Long Question Answer । 4th Semester। এডুকেশন ষষ্ঠ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর চতুর্থ সেমিস্টার । দ্বাদশ শ্রেণী
প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীরা উচ্চ মাধ্যমিক এডুকেশন চতুর্থ সেমিস্টারের জন্য ষষ্ঠ অধ্যায় থেকে 5 মার্কের প্রশ্ন উত্তর পরীক্ষায় আসে, তোমরা সকলেই জানো । এই পোস্টটিতে আমি এডুকেশন উচ্চ মাধ্যমিক বা দ্বাদশ শ্রেণীর এডুকেশন ষষ্ঠ অধ্যায় থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং পরীক্ষায় কমন পাওয়ার মতো 5 মার্কের প্রশ্ন উত্তর সাজেশন দেখিয়েছি । আশা করি এই প্রশ্ন উত্তর সাজেশন মধ্যেই তোমরা প্রশ্ন কমন পেয়ে যাবে ।
Class 12 Education Chapter 6
ষষ্ঠ অধ্যায় – মানসিক স্বাস্থ্য ও মানব কল্যাণে জীবন দক্ষতাসমূহ
Mark – 5
(১) জীবন দক্ষতা শিক্ষা বলতে কী বোঝো ? এর বৈশিষ্ট্য লেখো ।
উত্তর – জীবন দক্ষতা শিক্ষা: জীবন দক্ষতা শিক্ষা হল এমন একধরনের শিক্ষা, যা দৈনন্দিন চ্যালেঞ্জগুলিকে মোকাবিলা করতে এবং স্বাস্থ্যকর উৎপাদনশীল জীবন গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় মনস্তাত্ত্বিক দক্ষতাসমূহের বিকাশের উপর দৃষ্টিনিক্ষেপ করে। এই শিক্ষার লক্ষ্য হল একজন ব্যক্তির জীবনের চাহিদাগুলি মোকাবিলা করার, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার এবং ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষমতা বাড়ানো।
জীবন দক্ষতা শিক্ষার বৈশিষ্ট্যসমূহ: জীবন দক্ষতা শিক্ষা জনগণের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ ও চাহিদা মোকাবিলার ক্ষমতা জাগ্রত করে। এর গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলি হল-
(ক) আত্মসচেতনতা: ব্যক্তিকে নিজস্ব অনুভূতি, আচরণ ও চিন্তাভাবনাকে শনাক্তকরণে সাহায্য করে অর্থাৎ আত্মসচেতনতা বৃদ্ধি করে।
(খ) মননশীল চিন্তন: জীবন দক্ষতা শিক্ষা বিভিন্ন সমস্যা, সংগৃহীত বিভিন্ন – তথ্য বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করে অর্থাৎ এটি মননশীল চিন্তনে সাহায্যকারী।
(গ) সৃজনশীলতা: উদ্দেশ্যগত ও সৃজনশীল চিন্তনের সহায়ক।
(ঘ) সিদ্ধান্ত গ্রহণ: বিভিন্ন সমস্যাকেন্দ্রিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যক্তি তথা শিক্ষার্থীদের সাহায্য করে।
(ঙ) সময় ম্যানেজমেন্ট: কোন কাজকে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে, কতটা সময় ধরে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন অর্থাৎ কাজের বিষয়ে সময় ম্যানেজমেন্টের জন্য এটি কার্যকরী।
(২) জীবন দক্ষতা বলতে কী বোঝো ? ইহার প্রয়োজনীয়তা আলোচনা করো ।
উত্তর – জীবন দক্ষতা : জীবন দক্ষতা হল পরিবর্তিত পরিবেশ এবং পরিস্থিতির সঙ্গে অভিযোজন ক্ষমতা এবং ইতিবাচক আচরণের দক্ষতা। জীবন দক্ষতা ব্যক্তির জীবনের চাহিদা এবং চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা করতে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ও অন্যদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়তে সাহায্য করে।
প্রয়োজনীয়তা: জীবন দক্ষতার প্রয়োজনীয়তাগুলি নীচে আলোচনা করা হল –
(ক) সিদ্ধান্ত গ্রহণ: জীবন দক্ষতা হল এমন কিছু দক্ষতা যা বিভিন্ন প্রকার বিকল্পগুলিকে পর্যবেক্ষণ করে, বিবেচনা করে এবং সেগুলির ভালো-মন্দ দিকগুলি বিচার করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে শেখায়।
(খ) সমস্যাসমাধান: জীবন দক্ষতা দৈনন্দিন জীবনের জটিল সমস্যাগুলিকে জটিল হিসেবে চিহ্নিত করতে এবং তাদের সুষ্ঠু সমাধান খুঁজে বের করতে শক্তি জোগায়।
(গ) প্রাক্ষোভিক নিয়ন্ত্রণ: প্রক্ষোভ হল মানুষের এক প্রকার উত্তেজিত অবস্থা। ব্যক্তিত্বের পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য এই প্রক্ষোভমূলক নিয়ন্ত্রণ খুবই জরুরি। জীবন দক্ষতা এই আবেগ এবং বিভিন্ন প্রকার মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়কের ভূমিকা পালন করে।
(ঘ) সু-সম্পর্ক থাপন: এই দক্ষতা অন্য সকল ব্যক্তির সঙ্গে মধুর সম্পর্ক স্থাপন করতে শেখায় এবং সেগুলিকে মর্যাদার সঙ্গে টিকিয়ে রাখতে শেখায়।
(ঙ) জীবনযাত্রার মানান্নয়ন: জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন বলতে বোঝায় জীবনযাত্রার সামগ্রিক অবস্থার উন্নতি। যথা-স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অর্থ, পরিবেশ, সামাজিক নিরাপত্তা প্রভৃতি। এগুলির উন্নতিতে জীবন দক্ষতার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।
(চ) শিক্ষাগত ও পেশাগত সাফল্য: কী ধরনের শিক্ষাগ্রহণ করলে শিক্ষাজীবনে সাফল্য আসবে এবং কী ধরনের বৃত্তি গ্রহণ করলে পেশাগত সাফল্য আসবে সেই সমস্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে জীবন দক্ষতার গুরুত্ব অপরিসীম।

(৩) WHO-এর মতে, সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা বলতে কী বোঝো ? এর বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী ?
উত্তর – সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) নির্দেশিত জীবন দক্ষতাসমূহের মধ্যে অপর একটি দক্ষতা হল সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা, যা ব্যক্তি তথা সমাজের মানসিক সু-স্বাস্থ্য এবং কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। সিদ্ধান্ত গ্রহণ বলতে সাধারণত যে-কোনো সমস্যামূলক পরিস্থিতিতে সঠিক এবং যথাযথ সমাধান বা উপায় খুঁজে বের করার দক্ষতাকে বোঝানো হয়।
সিদ্ধান্ত গ্রহণের বৈশিষ্ট্য: সিদ্ধান্ত গ্রহণের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। যেগুলি হল –
(ক) ভাষার বিশ্লেষণ: সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিকে প্রাপ্ত তথ্যের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ ও মূল্যায়ন করতে হয়।
(খ) সমস্যা শনাস্ত্রকরণ : সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রথমেই সমস্যাটিকে শনাক্ত করতে হয় এবং সেটিকে যথাযথভাবে বিশ্লেষণ করা হয়।
(গ) সঠিক বিকল্প নির্বাচন: এই প্রক্রিয়ায় একজন ব্যক্তি নির্বাচিত সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে কী কী উপায় বা বিকল্প গ্রহণ করা যায়, সেই বিষয়ে বিশদে বিশ্লেষণ করে সঠিক বিকল্পটি নির্বাচন করতে পারে।
(ঘ) ফলাফলের মূল্যায়ন : সমস্যাসমাধানের ক্ষেত্রে প্রত্যেকটি বিকল্পকে ফলাফলের নীরিখে বিশ্লেষণ করা হয় এবং সেগুলির মূল্যায়ন করা হয়।
(ঙ) সঠিক সিদ্ধান্তগ্রহণ: এক্ষেত্রে ব্যক্তি যুক্তিসম্মত উপায়ে সঠিক সিদ্ধান্তগ্রহণ করতে পারে।
(৪) সিদ্ধান্তগ্রহণের দক্ষতা কাকে বলে ? মানসিক স্বাস্থ্য ও মানব কল্যাণে সিদ্ধান্তগ্রহণের ভূমিকা সম্পর্কে লেখো ।
উত্তর – সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) নির্দেশিত জীবন দক্ষতাসমূহের মধ্যে অপর একটি দক্ষতা হল সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা, যা ব্যক্তি তথা সমাজের মানসিক সু-স্বাস্থ্য এবং কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। সিদ্ধান্ত গ্রহণ বলতে সাধারণত যে-কোনো সমস্যামূলক পরিস্থিতিতে সঠিক এবং যথাযথ সমাধান বা উপায় খুঁজে বের করার দক্ষতাকে বোঝানো হয়।
মানসিক স্বাস্থ্য ও মানব কল্যাণে সিদ্ধান্তগ্রহণের ভূমিকা: মানসিক স্বাস্থ্য ও মানব কল্যাণে সিদ্ধান্তগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। যেমন-
(ক) জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন : ব্যক্তি যদি সকল ক্ষেত্রে সঠিক এবং যুক্তিপূর্ণ সিদ্ধান্তগ্রহণ করতে পারে, তাহলে সে তার জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সক্ষম হয়।
(খ) আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি: সিদ্ধান্তগ্রহণ দক্ষতার মধ্য দিয়ে ব্যক্তি আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে।
(গ) মানসিক চাপ হ্রাস : সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে ব্যক্তির জীবনের মানসিক চাপ, হতাশা, উদ্বেগ ইত্যাদি হ্রাস পায়।
(ঘ) পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নতি : সঠিক সিদ্ধান্তগ্রহণ ব্যক্তিকে সকলের সঙ্গে সু-সম্পর্ক বজায় রাখতে এবং সম্পর্কের উন্নতিসাধনে সাহায্য করে।
(ঙ) জটিল সমস্যার সমাধান: সিদ্ধান্তগ্রহণের দক্ষতা ব্যক্তির মধ্যে বিভিন্ন জটিল সমস্যা সমাধানের দক্ষতা সৃষ্টি করতে সহায়তা করে।
(৫) সমস্যাসমাধান দক্ষতা কী ? এর পর্যায়গুলি লেখো ।
উত্তর – সমস্যাসমাধানের ধারণা: সমস্যাসমাধান হল এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে কোনো জটিল পরিস্থিতি বা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার জন্য তথ্য সংগ্রহ করে, বিভিন্ন বিকল্প সমাধানকে বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে সঠিক সমাধান নির্বাচন করা হয়।
সমস্যাসমাধানের ধাপ বা পর্যায়সমূহ: সমস্যাসমাধানের ক্ষেত্রে যে ধাপ বা পর্যায়গুলি অবলম্বন করা হয়, সেগুলি হল –
(ক) সমস্যার উৎস শলাস্ত্রকরণ: সমস্যাসমাধানের জন্য প্রথমেই সমস্যার উৎস শনাক্ত করা হয়।
(খ) প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ: সমস্যাটিকে শনাক্ত করার পর সেটি সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে হয়।
(গ) সম্ভাব্য সমাধান নির্বাচন: সমস্যাটির যতগুলি সমাধান বা উপায় হতে পারে, সেগুলিকে নির্বাচন করা হয় এই পর্যায়ে। সম্ভাব্য সমাধানগুলির মূল্যায়ন সম্ভাব্য সমাধানগুলির প্রত্যেকটিকে এই পর্যায়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মূল্যায়ন করা হয়।
(ঘ) সঠিক সমাধান নির্বাচন : সম্ভাব্য বিকল্প সমাধানগুলির মধ্য থেকে সবথেকে যোগ্য সমাধানটি নির্বাচন করা হয় এবং সেটি প্রয়োগের ব্যবস্থা করা হয়।
(৫) সৃজনশীল চিন্তন কী ? এর বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো ।
উত্তর – সৃজনশীল চিন্তন বা Creative Thinking: সৃজনশীল চিন্তা হল এমন একটি চিন্তন প্রক্রিয়া, যেটি কোনো উদ্ভাবনী ও মৌলিক ধারণা তৈরি করে। এটি সমস্যাসমাধানের নতুন উপায় খোঁজে এবং বিভিন্ন তথ্যকে নতুনভাবে সংযোগ করার ক্ষমতা তৈরি করে।
বৈশিষ্ট্য: সৃজনশীল চিন্তনের বৈশিষ্ট্যগুলি হল-
(ক) স্বকীয়তা: সৃজনশীল চিন্তার মাধ্যমে সমস্যাসমাধানে স্বকীয়তা থাকে।
(খ) অভিনব সমস্যাসমাধালের পথ: এটি প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে গিয়ে নতুনভাবে সমস্যাসমাধানের পথ খুঁজতে সাহায্য করে।
(গ) মৌলিক চিন্তা: সৃজনশীল চিন্তা মৌলিক চিন্তা তৈরিতে ভূমিকা নেয়।
(ঘ) সার্বোত্তম সমাধানের পথ: এটি সম্ভাব্য সমাধানগুলি বিশ্লেষণের মাধ্যমে সর্বোত্তম সমাধানের পথটি বেছে নিতে সাহায্য করে।
(ঙ) পরিবর্তন: এটি কোনো বিষয়ের ফলাফল বিশ্লেষণ করে প্রয়োজন অনুযায়ী, তার পরিবর্তন ঘটায়।
(৬) সমানুভূতি কী ? সমানুভূতি বা সহমর্মিতার গুরুত্বগুলি আলোচনা করো।
উত্তর – সহমর্মিতার ধারণা: একজন ব্যক্তি অপর একজন ব্যক্তির আবেগ, অনুভূতি, চিন্তা এবং মানসিক অবস্থাকে উপলব্ধি করে প্রতিক্রিয়া করার একটি মানসিক প্রক্রিয়া হল সহমর্মিতা বা সমানুভূতি।
সহমর্মিতার গুরুত্ব:
(ক) মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি: সমানুভূতিসম্পন্ন আচরণ ব্যক্তিদের মধ্যে পারস্পরিক সমর্থন বৃদ্ধি করে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
(খ) পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন: সহমর্মিতা একজন ব্যক্তিকে অন্যের প্রতি সংবেদনশীল করে তোলে, যা পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নয়নে সহায়তা করে।
(গ) সামাজিক ঐক্য ও সংহতি গঠন: সমাজের প্রতিটি ব্যক্তির মধ্যে সহমর্মিতাবোধ বৃদ্ধি পেলে সামাজিক ঐক্য ও সংহতি গঠিত হয়।
(ঘ) দলগত সহাযাগিতার মান উন্নয়ন: যে-কোনো দলগত কাজের ক্ষেত্রে সমানুভূতি দলীয় সদস্যদের মধ্যে সহযোগিতা ও বোঝাপড়ার মান উন্নয়ন হয়।
(ঙ) নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধের বিকাশসাধন: সমানুভূতি বা সহমর্মিতাবোধ ব্যক্তির মধ্যে দয়া ও ন্যায়বোধের উন্নতি ঘটায়। যা নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধের বিকাশসাধন করে।
(চ) সংঘাত নিরসনে সহায়তা: সমানুভূতির মাধ্যমে ব্যক্তিদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির প্রবণতা কম হয় এবং সামাজিক ও ব্যক্তিগত সংঘাত নিরসনে সহায়তা করে।
(৭) মানসিক চাপ মোকাবিলা করার উপায়গুলি কী কী ? এই দক্ষতার গুরুত্ব সম্পর্কে লেখো ।
উত্তর – মানসিক চাপ মোকাবিলার উপায়: মানসিক চাপ মোকাবিলার উপায় বা কৌশলগুলি হল-
(ক) শরীর চর্চা ও ব্যায়াম: নিয়মিত শরীরচর্চা ও ব্যায়াম স্ট্রেস হরমোন কমায়, যা মানসিক চাপ কমায়।
(খ) ধ্যান অনুশীলন: নিয়মিত শ্বাসপ্রশ্বাসের অনুশীলন এবং ধ্যান মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়।
(গ) ইতিবাচক মনোভাব : মানসিক চাপ মোকাবিলার ক্ষেত্রে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্তিকে সহায়তা করে।
(ঘ) শখের কাজ: ব্যক্তির গানশোনা, বইপড়া, ছবি আঁকা ইত্যাদি যে-কোনো শখের কাজের প্রতি মনোনিবেশ করলে মানসিক চাপ কমে।
মানসিক চাপ মোকাবিলার গুরুত্ব: মানসিক চাপ মোকাবিলার তাৎপর্য বা গুরুত্বগুলি হল –
(ক) আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি: মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের দক্ষতা ব্যক্তির আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটায়।
(খ) শারীরিক সুখ: মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের দক্ষতা ব্যক্তির মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ ও অনিদ্রার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
(গ) সম্পর্কের উন্নতিসাধন: ব্যক্তির মধ্যে মানসিক চাপ কমলে পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটে।
(ঘ) মানসিক স্থিতিশীলতার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা: মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের দক্ষতা ব্যক্তিকে আবেগের দিক থেকে স্থিতিশীল রাখে। এর ফলে সিদ্ধান্তগ্রহণ ও সমস্যাসমাধান সহজতর হয়।
(ঙ) কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি: মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের ফলে ব্যক্তির মধ্যে যে-কোনো কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়ে, ফলে ব্যক্তির মধ্যে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
(৮) মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে জীবন দক্ষতার ভূমিকা লেখো ।
উত্তর – জীবন দক্ষতার শিক্ষা ব্যক্তিকে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য বৃদ্ধি এবং প্রক্ষোভ নিয়ন্ত্রণেও জীবন দক্ষতা শিক্ষা সাহায্য করে। মানসিক স্বাস্থ্যরক্ষার ক্ষেত্রে জীবন দক্ষতার ভূমিকা হল-
(ক) মানসিক চাপ হ্রাস: মানসিক চাপ মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব বিস্তার করে। এর ফলে ব্যক্তির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। যেমন-উদ্বেগ, ভয় ইত্যাদি; বিভিন্ন ধরনের শারীরিক রোগ যেমন-রক্তচাপ বৃদ্ধি বা হ্রাস, ডায়াবেটিক ইত্যাদি।
(খ) বিভিন্ন সমস্যামূলক অবস্থার মোকাবিলা: ব্যক্তি নিজেকে সমাজের উপযোগী করে গড়ে তুলতে পারলে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক আচরণ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে পারে, ফলে অপেক্ষাকৃত সহজে একজন ব্যক্তি সমস্যামূলক অবস্থা থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারে।
(গ) আত্মসম্মান বৃদ্ধি: জীবন দক্ষতা শিক্ষা ব্যক্তির আত্মসম্মান বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে, যার ফলে ব্যক্তির মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠে এবং তার মধ্যে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
(ঘ) অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধি: মানব জীবনের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন অবস্থায় জীবন দক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেকটি স্তরের সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য জীবন দক্ষতার শিক্ষা শিক্ষার্থীকে সঠিকভাবে অভিযোজনে সাহায্য করে।
(ঙ) প্রাক্ষোভিক ক্ষমতার উন্নয়ন: একজন ব্যক্তিকে শিশু বয়স থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের অবস্থার মধ্য দিয়ে অতিক্রম করতে হয়। এই অবস্থাগুলি যথাযথভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হলে তবেই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন সম্ভব হয় ।
(৯) জীবন দক্ষতা শিক্ষার প্রশিক্ষণে শিক্ষকের কয়েকটি ভূমিকা লেখো ।
উত্তর – জীবন দক্ষতা শিক্ষার প্রশিক্ষণে শিক্ষকের ভূমিকা হবে সাহায্যকারী। তিনি জীবন দক্ষতা শিক্ষার প্রশিক্ষণ উপযোগী পরিবেশ রচনা করে শিক্ষার্থীদের এই প্রশিক্ষণে যোগদান করতে উৎসাহিত করবেন। এই প্রশিক্ষণে শিক্ষকের ভূমিকাগুলি হল-
(ক) শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে মিথস্ক্রিয়া: শ্রেণিকক্ষে পাঠদানকালে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মিথস্ক্রিয়া প্রয়োজন। মিথস্ক্রিয়াকালে জীবন দক্ষতা উপযোগী। এর মাধ্যমে বিভিন্ন দক্ষতা যেমন- চিন্তন দক্ষতা সৃজনশীল দক্ষতা সিদ্ধান্ত গ্রহণ দক্ষতা বিভিন্ন ধনাত্মক প্রক্ষোভ ইত্যাদির বিকাশ ঘটে।
(খ) শিক্ষকের নির্দেশনা: শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের জীবন দক্ষতা উপযোগী দক্ষতা গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দান করবেন।
(গ) সমস্যা সম্পর্কিত ধারণা: প্রতিটি শিক্ষার্থীর পাঠ সংক্রান্ত এবং জীবন সংক্রান্ত সমস্যা থাকতে পারে। শিক্ষক এই সমস্যাসমূহের সমাধান সম্পর্কিত ধারণা দেবেন এবং প্রয়োজনে সমস্যাসমাধানে সাহায্য করবেন।
(ঘ) পাঠক্রম রচনা: শিক্ষকের কাজ হবে এমন পাঠক্রম রচনা করা, যার দ্বারা শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মসচেতনতাবোধ, সামাজিক দক্ষতা, চাপ ও দ্বন্দ্ব নিরসণ করা যায়। পাঠক্রম রচনার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের বয়স ও চাহিদার উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
(ঙ) শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ: শিক্ষক শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ এমনভাবে তৈরি করবেন, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থী নিজেদেরকে সহজে প্রকাশ করতে পারে এবং তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঝুঁকি নিতে পারে ।
আরও পড়ুন –
এডুকেশন – পঞ্চম অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 5 Mark )
এডুকেশন – চতুর্থ অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 5 Mark )
এডুকেশন – তৃতীয় অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 10 Mark)
এডুকেশন – দ্বিতীয় অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 2 Mark)
এডুকেশন – প্রথম অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর (2 mark)
এডুকেশন – প্রথম অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 10 Mark )
YouTube – Samim Sir