Class 12 Education Chapter 8 Question Answer । দ্বাদশ শ্রেণী এডুকেশন চতুর্থ সেমিস্টার । অষ্টম অধ্যায় । শিক্ষাগত প্রযুক্তিবিদ্যার উপাদানসমূহ

Class 12 Education Chapter 8 Question Answer । দ্বাদশ শ্রেণী এডুকেশন চতুর্থ সেমিস্টার । অষ্টম অধ্যায় । শিক্ষাগত প্রযুক্তিবিদ্যার উপাদানসমূহ

Class 12 Education Chapter 8

অষ্টম অধ্যায় – শিক্ষাগত প্রযুক্তিবিদ্যার উপাদানসমূহ

Mark – 5

() কম্পিউটারের শিক্ষামূলক অবদান বা উপযোগিতাগুলি লেখো [অথবা], শ্রেণিকক্ষে কম্পিউটারের ব্যবহারগুলি উল্লেখ করো। [অথবা], শিক্ষণ শিখনে কম্পিউটারের গুরুত্ব আলোচনা করো।[ WBCHSE ’24, 22, ’18, ’19, ’09, ’07 ]

উত্তর শিক্ষাক্ষেত্রে কম্পিউটারর অবদান :

() শিক্ষার বিষয়বস্তু উপস্থাপান: কম্পিউটারের মাধ্যমে সম্পূর্ণ শিক্ষণীয় বিষয়বস্তুকে শ্রেণিকক্ষে একসঙ্গে উপস্থাপন করা যায় এবং শিক্ষার্থীর অগ্রগতি সম্পর্কেও শিক্ষক অবগত হতে পারেন। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী এগোতে পারে। শিক্ষকের কাজের চাপ কমে। বিষয়বস্তুকে একসঙ্গে উপস্থাপন করা যায়।

() গণিত শিক্ষা: কম্পিউটার ক্লাসরুমে গণিতের বিভিন্ন জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারে। শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি মনোযোগী হয়।

() ক্ষমতা ও উৎসাহ: শিক্ষার্থীরা নিজেদের ক্ষমতা এবং উৎসাহ বা আগ্রহ অনুযায়ী কম্পিউটারকে ব্যবহার করে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ পায়।

() সময় ও শ্রম: শিক্ষার্থীরা একদিকে যেমন কম্পিউটারের মাধ্যমে তাদের কাজের সময়ের পুরোটাই কাজে লাগাতে পারে, তেমনই তাদের সময় ও শ্রম উভয়ই সাশ্রয় হয়।

() পরিকল্পনা গ্রহণ: শিক্ষার্থীরা তাদের কাজের ফলাফল খুব দ্রুত জানতে পারে এবং কম্পিউটারকে কেন্দ্র করে পরবর্তী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারে।

() ভাষা শিক্ষা: শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে লিখতে-পড়তে শেখাতে, ত্রুটি সংশোধনের মাধ্যমে কম্পিউটার শিখনে সাহায্য করে।

() সমস্যাসমাধানমূলক শিখন: শিক্ষার্থীর শিখনে, স্বাধীন চিন্তার বিকাশে, সঠিক সিদ্ধান্তগ্রহণে কম্পিউটার সাহায্য করে।

() বর্তমান সময়ে বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের কম্পিউটার শেখা জরুরি- তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও

[অথবা], কম্পিউটার শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা কেন হয় ?

উত্তর প্রয়োজনীয়তা: শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার শেখা প্রয়োজন, কারণ –

() আত্মপ্রত্যয় জাগরণ: কম্পিউটার শিখনের দ্বারা সমস্যাসমাধানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আত্মপ্রত্যয় বৃদ্ধি পায়।

() প্রেষণা সঞ্চার : শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা, ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টির মাধ্যমে কম্পিউটার শিক্ষার্থীকে কর্মদ্যোগী করে তোলে।

() গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের উপস্থাপন: কোনো সেমিনারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপনে কম্পিউটার দরকার।

() শিক্ষা: নিজের ক্ষমতা ও দক্ষতা অনুযায়ী কম্পিউটারের সাহায্যে শিক্ষার্থী শিক্ষা লাভ করে।

() ফিডব্যাক: কম্পিউটারভিত্তিক শিখনে শিক্ষার্থী নিজের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার ফিডব্যাক দ্রুত পেয়ে থাকে।

() শিখনবস্তু পাঠ: প্রোগ্রাম শিখন অনুযায়ী, পঠনের বিষয়কে ছোটো ছোটো অংশে ভেঙে পাঠগ্রহণে শিক্ষার্থীর সুবিধা হয়।

() নিজেকে জানা: কম্পিউটার শিক্ষার দ্বারা শিক্ষার্থী নিজের অগ্রগতি সম্পর্কে অবগত হয়।

() গতানুগতিক পরিবর্তন: বর্তমানে শিক্ষাক্ষেত্রে CAI, CAL, CML প্রভৃতি পদ্ধতির মাধ্যমে শ্রেণি শিক্ষণের সাহায্যে গতানুগতিক শিক্ষাব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। শিক্ষা হয়ে উঠেছে আরও সহজসরল ও আকর্ষণীয়।

() কম্পিউটারভিত্তিক শিক্ষার সুবিধা ও অসুবিধাগুলি লেখো [ WBCHSE ’11 ]

উত্তর কম্পিউটারভিত্তিক শিক্ষার সুবিধা :

উত্তর- কম্পিউটারভিত্তিক শিক্ষার সুবিধাগুলি হল-

() আত্মপ্রত্যয় জাগরণ : কম্পিউটারভিত্তিক শিক্ষা সমস্যাসমাধানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আত্মপ্রত্যয় বৃদ্ধি করে।

() প্রেষণা সঞ্চার: কম্পিউটারভিত্তিক শিক্ষা ইতিবাচক মানসিকতা গঠনের সহায়ক। এতে শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রেষণার সঞ্চার ঘটে।

() সক্রিয়তা বৃদ্ধি: কম্পিউটারভিত্তিক শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সমকালীন বিষয় সম্পর্কে সক্রিয় জ্ঞানের অধিকারী হয়।

() সমস্যাসমাধান: কম্পিউটারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা জটিল সমস্যার সমাধান করে ।

অসুবিধা: কম্পিউটারভিত্তিক শিক্ষার অসুবিধাগুলি হল –

() ব্যয়বহুলতা : ব্যয়বহুল হওয়ায় উপযুক্ত সংখ্যক কম্পিউটার বিদ্যালয়ে নেই।

() সংবেদনশীলতার ভাব: সাধারণ শিক্ষণ পদ্ধতিতে শিক্ষক শিক্ষার্থীর প্রয়োজন অনুযায়ী বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন কিন্তু কম্পিউটারভিত্তিক শিখনে তাৎক্ষণিকভাবে তা সম্ভব হয় না।

() মানবিক সম্পর্কের অভাব: কম্পিউটারের মাধ্যমে মানবিক সম্পর্ক হয় না, শুধু যন্ত্রের সঙ্গে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া চলে।

() হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার-এর মধ্যে পার্থক্য লেখো

উত্তর হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার-এর মধ্যে পার্থক্য: হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার-এর মধ্যে পার্থক্য হল –

হার্ডওয়্যারসফটওয়্যার
যে যন্ত্রাংশের সমন্বয়ে কম্পিউটার তৈরি হয়, তাকে হার্ডওয়্যার বলে।কম্পিউটার হার্ডওয়‍্যারকে দিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য যে নির্দেশ বা প্রোগ্রাম সমষ্টি ব্যবহার করা হয়, তাকে সফটওয়্যার বলে।
হার্ডওয়্যার যন্ত্রাংশগুলিকে আমরা স্পর্শ করতে পারি।সফটওয়‍্যারকে আমরা স্পর্শ করতে পারি না।
হার্ডওয়্যার ক্রমশ ব্যবহার করার ফলে ক্ষয় হয়।সফটওয়‍্যার ক্রমশ ব্যবহার করার ফলে কোনো ক্ষয় হয় না।
হার্ডওয়্যারের প্রতিলিপি ব্যবহারকারী প্রস্তুত করতে পারে না।সফটওয়‍্যারের প্রতিলিপি ব্যবহারকারী প্রস্তুত করতে পারেন।
হার্ডওয়্যার যন্ত্রাংশের উন্নতি ঘটানো হয় চিপ, মাইক্রোচিপ ইত্যাদির পরিবর্তন ঘটিয়ে।সফটওয়্যার প্রোগ্রামের দ্বারা লিখিত প্রোগ্রামের সাহায্যে সফটওয়্যারের উন্নতি ঘটানো যায়।
হার্ডওয়‍্যারের উদাহরণ হল- মাদারবোর্ড, হার্ডডিস্ক ইত্যাদি।সফটওয়‍্যারের উদাহরণ হল উইন্ডোস, এম এস ওয়ার্ড ইত্যাদি।
এটি শিক্ষণ সহায়ক উপকরণের সঙ্গে যুক্ত থাকে। যেমন-রেডিয়ো, স্লাইড, কম্পিউটার ইত্যাদি।এটি প্রোগ্রাম শিখন, টাস্ক বিশ্লেষণ, পুনঃশিখন, মূল্যায়ন ইত্যাদি কার্যের সঙ্গে যুক্ত।
নির্দেশনার কাজে ইলেকট্রিক এবং যান্ত্রিক যন্ত্র ব্যবহার করা হয়।
সফটওয়্যার প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আচরণমূলক নীতি ব্যবহৃত হয়।

() কম্পিউটার সফটওয়্যার কাকে বলে ? শিক্ষক ও কম্পিউটার একে অপরের পরিপূরক বা বিকল্প-ব্যাখ্যা করো

উত্তর কম্পিউটার সফটওয়্যার: কম্পিউটার ল্যাঙ্গুয়েজে লেখা পূর্ব নির্ধারিত নির্দেশাবলির সাহায্যে যে কার্যপ্রণালী সম্পাদিত হয়, সেগুলির সমষ্টি হল সফটওয়্যার। কম্পিউটার সফটওয়্যারে কর্মসূচি তৈরি করা হয়। সফটওয়্যারে, প্রোগ্রামার কাজের রকমফের অনুযায়ী প্রোগ্রামিং করে থাকে। যেমন-MS-Word, MS-Excel, MS-Power Point, Page Maker, Corel Draw ইত্যাদি।

শিক্ষক ও কম্পিউটার:

() মানবিক সম্পর্ক: শিক্ষার্থী যদি নির্ভুল প্রতিক্রিয়া করে, তবে সে কম্পিউটারের থেকে একটি উত্তর পায়। কিন্তু সঠিক উত্তর দিলে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেন। এতে মানবিক সম্পর্কের বিষয়টি থাকে।

() মানসিক অবস্থার বোধগম্যতা: শিক্ষার্থীর মানসিক অবস্থা বুঝে শিক্ষক প্রয়োজন অনুযায়ী শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করতে পারেন। কম্পিউটারের পক্ষে এটি সম্ভব নয়।

() চরিত্রগঠান সহায়ক: শিক্ষক শিক্ষার্থীর চরিত্রগঠনে বিশেষ ভূমিকা নেন, যা কম্পিউটার করতে পারে না।

() যোগাযোগ: শিক্ষার্থী কম্পিউটারের মধ্যে থাকা প্রোগ্রামগুলির মাধ্যমে কাজ করতে পারে, এইভাবেই কম্পিউটারের সঙ্গে শিক্ষার্থীর যোগাযোগ স্থাপিত হয়। অন্যদিকে শিক্ষক প্রয়োজন অনুযায়ী, শ্রেণিকক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন ও যোগাযোগের পথ রচনা করতে পারেন।

এর থেকে বোঝা যায় কম্পিউটার শিক্ষাদানে সহায়কমাত্র। কখনোই শিক্ষকের বিকল্প নয় বরং পরিপূরক এবং একে অপরের সহায়ক, কম্পিউটার যেমন সাহায্য করে, শিক্ষক তেমনই নিয়ন্ত্রণ করেন।

() কম্পিউটার সাক্ষরতা কী ? কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশ সম্পর্কে আলোচনা করো

উত্তর কম্পিউটার : Computer শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ Computare থেকে, যার অর্থ হল গণনা করা। এটি একপ্রকার গণকযন্ত্র (Calculating Device)। কম্পিউটার কোনো একক যন্ত্র নয়, অনেকগুলি যন্ত্রের সমন্বয়কে বোঝায়। এটি এমন একটি যন্ত্র, যা প্রচণ্ড দ্রুতগতিতে কাজ করে। তথ্যকে পরিমার্জন বা পরিবর্ধন করতে পারে এবং তথ্যের আদানপ্রদান করতে পারে এবং সেইসঙ্গে বিপুল পরিমাণ তথ্য সংরক্ষণ করে রাখতে পারে।

কম্পিউটার :

কম্পিউটার উদ্ভাবনের কৃতিত্ব কোনো একজনের নয়, এটি বিশ্বের অজস্র বিজ্ঞানীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল।

কম্পিউটার সাক্ষরতা: কোনো ব্যক্তির কম্পিউটার সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞান অর্জন ও তা ব্যবহার করার ন্যূনতম দক্ষতাকে কম্পিউটার সাক্ষরতা বলে।

কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশ:

() ইনপুট ডিভাইস: এটি কম্পিউটারে তথ্য জোগান দেওয়ার যন্ত্র, এর মাধ্যমে কম্পিউটারকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া যায়। যেমন-কি-বোর্ড, লাইটপেন, মাউস, জয়স্টিক ইত্যাদি।

() সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট (CPU): এটি হল কম্পিউটারের মস্তিষ্ক। ডেটা প্রসেসিং ছাড়াও কম্পিউটারের ভিতরের ও কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত যন্ত্রাংশকে নিয়ন্ত্রণ করে এই ইউনিট। এর প্রধান অংশ হল-কন্ট্রোল ইউনিট (Control Unit) এবং অ্যারিথমেটিক লজিক ইউনিট (Arithmetic Logic Unit) I

() মেমোরি ইউনিট: কম্পিউটারে যে তথ্য প্রবেশ করানো হয়, তা সঞ্চিত থাকে তার মেমোরি ইউনিটে। একে দুভাগে ভাগ করা যায়। যথা- প্রাইমারি মেমোরি এবং সেকেন্ডারি মেমোরি।

() আউটপুট ডিভাইস: এটি কম্পিউটারের ফলাফল পরিবেশনের যন্ত্র। মনিটর, প্রিন্টার, স্পিকার ইত্যাদি আউটপুট ডিভাইসের উদাহরণ। ইনপুট ডিভাইস থেকে তথ্যগুলি CPU-তে বিশ্লেষিত হওয়ার পর আউটপুটে প্রেরিত হয় এবং আউটপুট ডিভাইসের মাধ্যমে ফলাফল পাওয়া যায়। যেমন- মনিটর, স্পিকার, প্রিন্টার, বারকোড, প্লটার ইত্যাদি।

() শিক্ষাপ্রযুক্তিতে হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার কাকে বলে ? [ অথবা ] হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার উভয় যে শিক্ষার ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা করে, তা উদাহরণ-সহ ব্যাখ্যা করো

উত্তর হার্ডওয়্যার: শিক্ষায় হার্ডওয়্যার প্রযুক্তি বলতে বোঝায় যান্ত্রিক বস্তুসামগ্রী ও যন্ত্রপাতির শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যবহার। শিক্ষাসহায়ক বিভিন্ন শ্রবণ-দর্শন উপকরণ যেমন- চার্ট, মডেল, স্লাইড, অডিয়ো ক্যাসেট, নানা সূক্ষ্ম  গ্যাজেট, এ ছাড়া অন্যান্য গ্যাজেট যেমন-ফিল্ম, প্রোজেক্টর, বেতার, টেপরেকর্ডার, টিভি, ভিডিয়ো, শিক্ষণ মেশিন, কম্পিউটার ইত্যাদি হল হার্ডওয়্যার প্রযুক্তি।

সফটওয়্যার: সফটওয়্যার প্রযুক্তি হল, আচরণমূলক বিজ্ঞান ও তার ব্যাবহারিক দিক, যা শিক্ষা মনোবিদ্যার সঙ্গে যুক্ত। সফটওয়্যার প্রযুক্তির উৎস হল-স্কিনার ও অন্যান্য আচরণ বিজ্ঞানীদের গবেষণা। উদাহরণ-আধুনিক প্রোগ্রাম শিখন, টাস্ক বিশ্লেষণ, উপযুক্ত শিখন স্ট্রাটেজি নির্বাচন, সঠিক উত্তর দিয়ে পুনর্শক্তি সঞ্চার, অবিরাম মূল্যায়ন ইত্যাদি। হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের পারস্পরিক সহযোগিতা: শিক্ষাপ্রযুক্তি হল হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার প্রযুক্তির পারস্পরিক সংযোগ। হার্ডওয়্যার প্রযুক্তিতে বিভিন্ন ইলেকট্রিক্যাল বা মেকানিক্যাল যন্ত্রের ব্যবহার করা হয়, যেমন-শ্রবণ-দর্শন সহায়ক উপকরণ, যন্ত্রপাতি, গণমাধ্যমের ব্যবহার ইত্যাদি যা শিক্ষার্থীকে সর্বোত্তম সাফল্য লাভে সহায়তা করে। অন্যদিকে সফটওয়্যার হল হার্ডওয়্যার ব্যবহারের জন্য বিষয়বস্তু তৈরি করা, যা হার্ডওয়্যারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সামনে উপস্থাপন করা হয়। এখানে শিখন মনোবিদ্যার ব্যবহার খুব বেশি হয়। শিক্ষণীয় বস্তু তৈরিতে, শিক্ষণ-শিখন কৌশল ও অন্যান্য কৌশল প্রস্তুত করা হয় যাতে শিক্ষণ-শিখন প্রক্রিয়ার কাজ খুব সহজতর ও দ্রুত হয়। তাই বলা যায় উভয়ই শিক্ষাক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা করে। এ বিষয়ে একটি উদাহরণ দেওয়া হল-কোনো কোম্পানিতে ওভারহেড প্রোজেক্টর বা ল্যাপটপের সাহায্যে PPT Presentation দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ল্যাপটপ, প্রোজেক্টর হল হার্ডওয়্যার। তবে PPT Technique হল সফটওয়্যারের ব্যবহার। এইভাবে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার একে অপরের পরিপূরক।

() হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার প্রযুক্তির নীতিগুলি লেখো

উত্তর হার্ডওয়্যার ও সফটওয়‍্যার প্রযুক্তির নীতি:

() পর্যাপ্ততার নীতি: হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের মাধ্যমে যে-কোনো বিষয় সম্পর্কে দ্রুত তথ্য পাওয়া যায়।

() বৈচিত্যের নীতি: শিখনের বিষয়সমূহকে বিভিন্ন বৈচিত্র্যের সঙ্গে উপস্থাপন করা যায় হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার কৌশল দ্বারা।

() উদ্দেশ্য সফলের নীতি: হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার-এর মাধ্যমে কোনো বিষয়ের উদ্দেশ্যকে স্থির রেখে কাজ করা হয়, যা সফলতা আনতে সাহায্য করে।

() শিক্ষাগত চাহিদা: হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার ব্যক্তি ও সমাজের শিক্ষাগত চাহিদা পূরণ করে।

() শিক্ষণ ও নির্দেশনা: শিক্ষণ ও নির্দেশনার কাজে সহায়তার জন্য মনোবিজ্ঞানসম্মত আচরণমূলক নীতির প্রয়োগ করা হয়।

() সাশ্রয়ের নীতি: এই প্রযুক্তির মাধ্যমে শ্রম ও খরচ উভয়েরই অনেক সাশ্রয় হয়। কম খরচে কম পরিশ্রমে কর্মসম্পাদন করা যায়।

() শিক্ষাক্ষেত্রে হার্ডওয়্যার ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি লেখো

উত্তর শিক্ষাক্ষেত্রে হার্ডওয়্যার ব্যবহারের সুবিধা: শিক্ষায় হার্ডওয়্যার শিক্ষার্থীদের উপকরণ ও উৎস প্রদান করে, যা তাদের শিখনে সাহায্য করে। আবার এটিও শিক্ষকদের শিক্ষণেও সাহায্য করে। হার্ডওয়্যার শিক্ষার্থীদের মিথস্ক্রিয়ামূলক কাজে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে, শিক্ষার্থীরা শিখন অভিজ্ঞতা বাড়াতে পারে, স্ব-শিখনে সাহায্য করে, শিক্ষকের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের যোগাযোগ দৃঢ়তর করে, এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সহপাঠীদের সঙ্গে, শিক্ষক এমনকি বাবা-মা-অভিভাবক-এর সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধি করা যায়।

হার্ডওয়্যারের অসুবিধা: হার্ডওয়্যারের বিভিন্ন সুবিধা যেমন রয়েছে, তেমনই কিছু অসুবিধাও রয়েছে। সেগুলি হল –

() ব্যয়: হার্ডওয়‍্যারের উপাদানগুলি বিশেষ করে প্রসেসর ও গ্রাফিক কার্ড অত্যন্ত দামী। খরচ পড়ে।

() রক্ষণাবেক্ষণ: হার্ডওয়্যারের নিয়মিতভাবে রক্ষণাবেক্ষণ ও মাঝে মাঝে মেরামত করা প্রয়োজন। হার্ডওয়্যারের নষ্ট হওয়া অংশ মাঝে মাঝে পরিবর্তন করা দরকার, বা উন্নত করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

() সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়: বিভিন্ন কোম্পানির হার্ডওয়্যারের উপাদানগুলির মধ্যে সামঞ্জস্যহীনতা রয়েছে। হার্ডওয়্যারকে উন্নত করার ক্ষেত্রে এই ধরনের সামঞ্জস্যহীনতা লক্ষ করা যায়।

() পরিবেশগত সমস্যা: হার্ডওয়্যার প্রযুক্তির জন্য লেড, মার্কারী, ক্যাডমিয়ামের মতো পদার্থ ব্যবহার করা হয়, সেক্ষেত্রে পরিবেশগত সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

(১০) সফটওয়্যার বলতে কী বোঝো ? এর বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো

উত্তর সফটওয়্যার: হার্ডওয়্যার মূলত যন্ত্রাংশ এবং এই যন্ত্রাংশগুলিকে বিজ্ঞানসম্মতভাবে কার্যকরী করে ব্যক্তি তথা শিক্ষার্থীদের আচরণধারার পরিবর্তন করার জন্য যে প্রযুক্তিবিজ্ঞান ব্যবহার করা হয়, তাই হল সফটওয়্যার। সফটওয়্যার প্রযুক্তিবিজ্ঞানের উৎস হল আচরণমূলক বিজ্ঞান ও তার ব্যাবহারিক প্রয়োগ, যা শিক্ষামনোবিজ্ঞানের সঙ্গে জড়িত। সফটওয়্যার হল একগুচ্ছ নির্দেশনা, তথ্য বা প্রোগ্রাম, যা হার্ডওয়্যার বা কম্পিউটারকে চালু করে নির্দিষ্ট কাজ করতে পারে। সুতরাং হার্ডওয়্যারের উপাদানগুলিকে যথাযথভাবে কার্যকরী করার জন্য প্রযুক্তিগত কৌশলই হল সফটওয়্যার।

সফটওয়‍্যারের বৈশিষ্ট্যসমূহ: Software-এর গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলি হল –

() কার্যকারিতা : যে কাজের জন্য সফটওয়্যারটি তৈরি করা হয়েছে, তা কতটা সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পারছে তাই হল সফটওয়্যারের কার্যকারিতা। কার্যকারিতার দিক থেকে যেগুলি বিচার করা হয়, সেগুলি হল – সূক্ষ্মতা, যথাযথতা, আন্তঃকার্যক্ষমতা, ইচ্ছাপূরণকারী, নিরাপদ ।

() নির্ভরাযাগ্যতা: যে উদ্দেশ্যে সফটওয়‍্যারটি তৈরি করা হয়েছে, সেই উদ্দেশ্যটি কতটা সঠিকভাবে কার্যকরী হচ্ছে, তাই হল ওই সফটওয়্যারের নির্ভরযোগ্যতা।

() দক্ষতা: সফটওয়্যারটি সঠিক তথ্য দিতে কতটা দক্ষ, সে বিষয়ে জানা যায়।

() রক্ষণাবেক্ষণ যোগ্যতা: সফটওয়্যারটি রক্ষণাবেক্ষণের পক্ষে কতটা সুবিধাজনক, সেটা বোঝা যায়।

(ঙ) ব্যবহারযোগ্যতা: সফটওয়্যারটি ব্যবহার করা কতটা সহজ বা কঠিন, সে বিষয়ে জানা যায়।

(১১) শিক্ষাক্ষেত্রে সফটওয়্যার প্রযুক্তিবিজ্ঞানের ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করো।

উত্তর শিক্ষাক্ষেত্রে সফটওয়্যার প্রযুক্তিবিজ্ঞান: শিক্ষাক্ষেত্রে সফটওয়্যার দৃষ্টিভঙ্গির উৎস হল আচরণমূলক বিজ্ঞান ও তার ব্যাবহারিক দিক, যা শিক্ষামনোবিদ্যার সঙ্গে যুক্ত। বিভিন্ন আচরণবাদী মনোবিদ যেমন-স্কিনার, প্যাভলভ, ওয়াটসন-এর গবেষণা থেকে সফটওয়্যার দৃষ্টিভঙ্গির সূত্রপাত। শিক্ষাক্ষেত্রে সফটওয়্যার প্রযুক্তিবিজ্ঞানের অন্তর্গত বিষয়গুলি হল –

() শিক্ষণ-শিখন প্রক্রিয়াকে বৈজ্ঞানিকভাবে বিষয়বস্তু ও যোগাযোগের মাধ্যমে সমন্বয় ঘটিয়ে বিষয়বস্তু উপস্থাপন করা।

() শিক্ষণ-শিখন পরিকল্পনার ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে বিষয়বস্তু বিশ্লেষণ করে শিখনের উদ্দেশ্য নির্ণয় করে উদ্দেশ্যগুলির আচরণগত উদ্দেশ্য নির্ধারণ করা। আচরণগত উদ্দেশ্য বলতে স্মরণ করতে পারা, বর্ণনা করতে পারা, বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারা, ছবি আঁকতে পারা ইত্যাদিকে বোঝায়।

() হার্ডওয়্যারের সাহায্যে নির্দেশনা দানের জন্য শিক্ষণ-শিখন কৌশল নির্বাচন করে সেগুলিকে প্রয়োগের মাধ্যমে শিক্ষণ-শিখন প্রক্রিয়াকে কার্যকরী করে তোলে সফটওয়্যার প্রযুক্তিবিজ্ঞান।

() সফটওয়্যার প্রযুক্তিবিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে নির্দেশনা পরিকল্পনা রচনা করতে গিয়ে কয়েকটি বিষয়ের উদ্ভব হয়েছে। যেমন-সাইবারনেটিক মনোবিদ্যা, নির্দেশনামূলক প্রযুক্তিবিজ্ঞান, শিক্ষণ-শিখন তত্ত্ব, সিস্টেম অ্যানালিসিস ইত্যাদি। এ ছাড়াও শ্রেণিকক্ষের বিভিন্ন শিক্ষণ মডেল, অণুশিক্ষণের কৌশল, দলগত শিক্ষণের কৌশল ইত্যাদি।

(১২) শিক্ষাক্ষেত্রে সফটওয়্যার প্রযুক্তির সুবিধা লেখো । এই প্রযুক্তির বিকাশে শিক্ষকের ভূমিকা আলোচনা করো

উত্তর শিক্ষাক্ষেত্রে সফটওয়্যার প্রযুক্তির সুবিধা: শিক্ষাক্ষেত্রে সফটওয়্যার প্রযুক্তির মাধ্যমে বর্তমানে বিভিন্ন সুবিধা হয়েছে । সেগুলি হল –

() শিখন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম: শিখনের জন্য বিভিন্ন ধরনের কোর্স, মেটিরিয়াল, অ্যাসাইনমেন্ট, কুইজ, গ্রেড ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষক যেমন শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি পরিমাপ করতে পারেন, ঠিক তেমনই শিক্ষার্থীদের শিখনকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। তাই এই প্রযুক্তিকে Learning Management System-এ ব্যবহার করা যায়।

() ইন্টারঅ্যাকটিভ লার্নিং টুলস : বিভিন্ন ধরনের জটিল ধারণা দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের শিক্ষাধর্মী গেম, ভার্চুয়াল ল্যাব, সিম্যুলেশন ইত্যাদির সঙ্গে যুক্ত করতে পারেন, যেখানে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া সম্ভব, সুতরাং এই প্রযুক্তিবিজ্ঞান ইন্টার অ্যাকটিভ লার্নিং টুলের কাজ করে।

() অনলাইন লার্নিং: প্ল্যাটফর্ম এই প্রযুক্তিকে অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজে লাগানো যায়। প্ল্যাটফর্মে অনলাইন লেকচার, ভিডিয়ো কনফারেন্সিং, ডিজিটাল লার্নিং মেটিরিয়াল ইত্যাদিকে যে-কোনো শিক্ষার্থী যে-কোনো জায়গা থেকে অ্যাকসেস করতে পারে ডেক্সটপ, ল্যাপটপ বা স্মার্টফোনের মাধ্যমে।

() অ্যাসেসমেন্ট টুলস: শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের অ্যাসেসমেন্ট সিস্টেম যেমন-গ্রেডিং সিস্টেম, গঠনগত অ্যাসেসমেন্ট, কুইজ নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়।

সফটওয়্যার প্রযুক্তির বিকাশে শিক্ষকের ভূমিকা:

() পাঠক্রমের বিকাশ: শিক্ষক বিভিন্ন ধরনের ল্যাঙ্গুয়েজ প্রোগ্রামিং এবং ধারণাকে কাজে লাগিয়ে পাঠক্রমের নকশা তৈরি করবেন এবং নকশাতে প্রাসঙ্গিক কোডিং দেবেন।

() ব্যাবহারিক প্রয়োগ: শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের সফটওয়্যারের তাত্ত্বিক জ্ঞানকে ব্যাবহারিক ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারে, সেদিকে নজর দেবেন।

() সাম্প্রতিক প্রযুক্তির সঙ্গে সংগতিবিধান : শিক্ষক সাম্প্রতিক প্রযুক্তির সঙ্গে সংগতিবিধান করবেন। এর ফলে তিনি শিক্ষার্থীদের নতুন নতুন বিষয় বুঝতে সাহায্য করবেন।

() অ্যাসেসমেন্ট এ ফিডব্যাক: শিক্ষক অ্যাসেসমেন্ট ও ফিডব্যাকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সফটওয়্যার প্রযুক্তিতে উৎসাহিত করবেন।

(১৩) ওভারহেড প্রোজেক্টর (OHP) বলতে কী বোঝো ? এর সুবিধাগুলি লেখো

উত্তর – OHP-এর সংজ্ঞা: যে যন্ত্রের সাহায্যে টাংস্টেন হ্যালোজেন আলোক উৎস থেকে আসা আলোকরশ্মি দর্শকের মাথার উপর দিয়ে বিপরীত দিকে কোনো বিশেষ স্বচ্ছ পর্দাতে প্রতিফলিত হওয়ার ফলে, লিখিত বিষয়বস্তুর (চিত্র) যে বিবর্ধিত প্রতিবিম্ব ফুটে ওঠে, সেই বিশেষ ব্যবস্থাপনাকে ওভারহেড প্রোজেক্টর বলা হয়। ফোকাস করার জন্য নব ঘুরিয়ে প্রোজেকশন হেডটি ওঠানামা করিয়ে পর্দায় ফোকাস ঠিক রাখা হয়।

OHP-এর সুবিধা:

() কম খরচ: সমস্তরকম প্রোজেকশন থেকে OHP সহজসরল ও কম ব্যয়যুক্ত।

() বিষয়বস্তুর উপস্থাপন: স্বচ্ছ পর্দার মাধ্যমে যে-কোনো লেখা, ম্যাপ, অঙ্কন ইত্যাদিকে অনেক বড়ো করে উপস্থাপন করা যায়।

() মুখোমুখি আলোচনা: OHP স্বচ্ছ পর্দায় দেখানোর ফলে শিক্ষক-শিক্ষিকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনা করতে পারেন।

() বিভিন্ন শিক্ষণ পদ্ধতি: আলোচনা পদ্ধতি, বক্তৃতা পদ্ধতি ইত্যাদি বিভিন্ন শিক্ষণ পদ্ধতিতে OHP-এর ব্যবহার হয়।

() স্বচ্ছ পর্দার পুনর্ব্যবহার: স্বচ্ছ পর্দাটি মুছে পুনরায় ব্যবহার করা সম্ভব হয়।

() আলোকযুক্ত ঘর: ঘর অন্ধকার করে এটি ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই, আলোকিত ঘরেই এটি ব্যবহার করা সম্ভব। বিভিন্ন মানসিক ক্ষমতাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য এটি খুব সহজবোধ্য।

() শ্রেণিকক্ষে ব্যবহারের সুবিধা: আগে থেকে স্বচ্ছ পর্দায় ড্রইং করে, স্কেচ করে বা লিখে বিষয়বস্তুকে তৈরি করে রাখা যায়, যার ফলে শ্রেণিকক্ষে দেখাতে সুবিধা হয়।

(১৪) শিক্ষাক্ষেত্রে দূরদর্শনের ভূমিকা লেখো

উত্তর শিক্ষাক্ষেত্রে দূরদর্শনের ভূমিকা: শিক্ষার্থীর দক্ষতা ও উৎকর্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক দূরদর্শন। 1961 সালের ডিসেম্বরে দিল্লিতে প্রথম দূরদর্শনের উপর প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। 1971-73-এ শিক্ষাপ্রযুক্তির উপর গৃহীত প্রকল্পে NCERT ও CIET-র সঙ্গে এটি যুক্ত হয়। CIET শিক্ষার বিভিন্ন বিষয়ের উপর সফটওয়্যার প্রস্তুত করে, যা দূরদর্শনের মাধ্যমে দেখে শিক্ষার্থীরা জ্ঞানার্জন করে। দূরদর্শনের ভূমিকাগুলি হল –

() বস্তুনিষ্ঠ জ্ঞান: দূরদর্শন যেসব তথ্য শিক্ষার্থীর সামনে উপস্থাপন করে, তার দ্বারা শিক্ষার্থী বস্তুনিষ্ঠ জ্ঞান অর্জন করতে সমর্থ হয়। এখানে বিষয়বস্তু মূর্তভাবে উপস্থাপিত হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীর বাস্তব ধারণা গঠন হয়। এ ছাড়া এই মাধ্যমটির বিনোদনমূলক ও শিল্পধর্মী অনুষ্ঠান শিক্ষার্থীর মনে স্থায়ী প্রভাব ফেলে।

() জনশিক্ষার সহায়ক: এই মাধ্যমটির সাহায্যে খুব সহজেই জনগণকে সচেতন করা যায়। এর সাহায্যে জনগণকে বিভিন্ন রোগ, কৃষিকাজ, সাক্ষরতা ইত্যাদি সম্পর্কে অবহিত করা যায়।

() প্রেষণা সঞ্চার: দূরদর্শনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রেষণার সঞ্চার ঘটে। এই প্রেষণার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে পাঠগ্রহণে উৎসাহিত হয়।

() দৃশ্য-শ্রাব্য মাধ্যম: দূরদর্শন হল একটি দৃশ্য-শ্রাব্য মাধ্যম। এর দ্বারা শিক্ষার্থীর দর্শন ও শ্রবণ ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা সুসংহত ও বাস্তবধর্মী হয়ে ওঠে।

() সকলের উপযোগী শিক্ষা: শিক্ষিত ও অশিক্ষিত সকল শ্রেণির মানুষের উপযোগী শিক্ষা দেয় দূরদর্শন।

() ঘটনাল ঘটলার প্রচার: দূরদর্শনের মাধ্যমে যে-কোনো ঘটমান ঘটনার সরাসরি প্রচার করা যায়। ফলে শিক্ষার্থীরা ওই বিষয় সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করে।

() নান্দনিক বিকাশ: বিভিন্ন নাটক, গানবাজনা, নাচ প্রভৃতি দূরদর্শনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সামনে প্রচার করা হয়। এর ফলে শিক্ষার্থীদের নান্দনিক বিকাশ ঘটে থাকে।

(১৫) হার্ডওয়্যার (Hardware) প্রযুক্তি বলতে কী বোঝো? এর বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো

উত্তর হার্ডওয়্যার: শিক্ষায় হার্ডওয়্যার প্রযুক্তি বলতে শিক্ষাক্ষেত্রে যান্ত্রিক বস্তুসামগ্রী ও যন্ত্রপাতির ব্যবহারকে বোঝানো হয়। যেমন- বিভিন্ন শ্রবণ-দর্শন উপকরণ অর্থাৎ চার্ট, মডেল, স্লাইড, অডিয়ো ক্যাসেট, কম্পিউটার, টিভি, ভিডিয়ো ইত্যাদি হল হার্ডওয়্যার প্রযুক্তি।

বৈশিষ্ট্য: হার্ডওয়্যার প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্যগুলি হল –

() শ্রবণ-দর্শন উপকরণের ব্যবহার: হার্ডওয়্যার প্রযুক্তিতে শ্রবণ-দর্শনভিত্তিক উপকরণ, চার্ট, মডেল, স্লাইড, অডিয়ো ক্যাসেট, নানান সূক্ষ্ম গ্যাজেট, শিক্ষণ মেশিন, কম্পিউটার ইত্যাদির সাহায্যে শিক্ষা অতি সহজে শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়।

() ব্যক্তিবৈষম্য অনুযায়ী শিখন: এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যক্তিগত বৈষম্য অনুযায়ী শিখন সম্ভব হয়।

() স্বল্প খরচ: হার্ডওয়্যার প্রযুক্তির সাহায্যে একসঙ্গে অনেক শিক্ষার্থীকে শিক্ষাদান প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা যায়।

() বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রয়োগ: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নতির একটি প্রধান প্রয়োগ হল হার্ডওয়্যার প্রযুক্তি।

() ফিডব্যাক প্রদান: শিক্ষণ-শিখন প্রক্রিয়ায় এই প্রযুক্তিতে প্রয়োজনীয় Feedback সরবরাহ করা হয়।

() সাফল্য আনয়ন: শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা অনুযায়ী সর্বাধিক সাফল্য অর্জনে সহায়তা করে।

() স্বয়ং শিখন: হার্ডওয়্যার প্রযুক্তিতে স্বয়ং শিখনের সুযোগ অনেক বেশি।

(১৬) ভাষা পরীক্ষাগার কী ? এর উদ্দেশ্যগুলি লেখো

উত্তর ভাষা পরীক্ষাগার: শিক্ষাপ্রযুক্তির একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল ভাষা পরীক্ষাগার। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে সূচনা হওয়া ভাষা পরীক্ষাগার হল স্বয়ংশিখনের একটি কৌশল। বর্তমানে বিভিন্ন দেশে বিদেশি ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এখানে শিক্ষার্থী টেপরেকর্ডারের সাহায্যে অন্যের বক্তব্য শোনে এবং সেইভাবে বলা অনুশীলন করে। ভাষা পরীক্ষাগারে শ্রবণ এবং কথন উভয় বিষয়ের উপরই গুরুত্ব দেওয়া হয়। ভাষা পরীক্ষাগারের লক্ষ্য হল সঠিক ভাষা ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে উৎকর্ষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে সক্ষম করা।

উদ্দেশ্য:

() সঠিক ভাষা ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সর্বোত্তম যোগাযোগ করতে সক্ষম করে তোলা।

() বিভিন্ন শব্দ উচ্চারণের পার্থক্য বুঝতে শিক্ষার্থীকে সাহায্য করা।

() নির্ভুলভাবে শিক্ষার্থীদের উচ্চারণ করতে শেখানো।

(ঘ) শিক্ষার্থী নিজেই তার ভুল উচ্চারণকে শনাক্ত করে এবং বারবার অনুশীলনের মাধ্যমে সংশোধন করতে পারে।

() ভাষা ব্যবহারের সঠিক শব্দচয়ন, Idioms এবং Phrase ব্যবহারের ক্ষমতার বিকাশ-এর অন্যতম লক্ষ্য।

(১৭) কম্পিউটারের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো

উত্তর বৈশিষ্ট্যসমূহ: কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্যগুলি হল –

() শিক্ষাপ্রক্রিয়াকে আকর্ষণীয় কার ভোলা: কম্পিউটারের সাহায্যে ইলেকট্রনিক মাধ্যম ব্যবহার করে শিক্ষাপ্রক্রিয়াকে আকর্ষণীয় করে তোলা যায়।

() গতিশীলতা ও নির্ভুলতা: কম্পিউটার অত্যন্ত দ্রুতগতিতে কাজ করতে পারে। তা ছাড়া নির্ভুলভাবে কাজ করে। সেকেন্ডে প্রায় 10 লক্ষের বেশি নির্দেশ পালন করতে পারে।

() সহজ ও দ্রুততা : কম্পিউটারের সাহায্যে শিক্ষন-শিখন প্রক্রিয়াকে সহজ ও দ্রুত কার শিক্ষণ-শিখন প্রক্রিয়াকে সহজ ও দ্রুত করে তোলা যায়।

() সংযোগসাধন: অনেকগুলি কম্পিউটারকে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কের (LAN) মাধ্যমে যুক্ত করে একই তথ্যের ভিত্তিতে নানান ধরনের গণনা বিভিন্ন কম্পিউটারে করা যায়।

() তথ্য সঞ্চয়: কম্পিউটার নিজের হার্ড ডিস্কে বিপুল তথ্য সংরক্ষণ করতে পারে। এ ছাড়া প্রয়োজনমতো অতি দ্রুত তা সরবরাহ করতে পারে।

() System দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োগ: কম্পিউটার শিক্ষায় সিস্টেম দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োগ করা হয়। সিস্টেমের বিভিন্ন উপাদানগুলি শিক্ষা প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে চলতে সাহায্য করে।

() বিভিন্নরকম তথ্য পরিবেশন: কম্পিউটারের সাহায্যে দেশ-বিদেশের নানান বৈচিত্র্যময় তথ্য পরিবেশন করে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের চাহিদা পূরণ করা যায়।

আরও পড়ুন

এডুকেশন – সপ্তম অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 5 Mark )

এডুকেশন – ষষ্ঠ অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 2 Mark )

এডুকেশন – পঞ্চম অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 5 Mark )

এডুকেশন – চতুর্থ অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 5 Mark )

এডুকেশন – তৃতীয় অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 10 Mark)

এডুকেশন – দ্বিতীয় অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 2 Mark)

এডুকেশন – প্রথম অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর (2 mark)

এডুকেশন – প্রথম অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 10 Mark )

YouTube – Samim Sir

Leave a Comment