ছুটি গল্পের বড়ো প্রশ্ন উত্তর Class 11 । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। একাদশ শ্রেণী দ্বিতীয় সেমিস্টার। Class 11 Chhuti Golpo Long Question Answer
ছুটি গল্পের বড়ো প্রশ্ন উত্তর Class 11
(১) ‘মা, এখন আমার ছুটি হয়েছে মা, এখন আমি বাড়ি যাচ্ছি ।’- (ক) বক্তা কে ? (খ) কোন প্রসঙ্গে তিনি এই মন্তব্য করেন ? (গ) উক্তিটির তাৎপর্য লেখো । 1+1+3
উত্তর –
(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্প থেকে গৃহীত আলোচ্য উক্তিটির বক্তা হলেন ফটিক চক্রবর্তী ।
(খ) ফটিক জ্বরের ঘোরে প্রলাপ বকতে থাকে। ডাক্তার তার শারীরিক অবস্থা ভালো নয় জানিয়ে দেয় । এমন সময় তার মা খবর পেয়ে তার কাছে আসে । সে ফটিককে জড়িয়ে ধরে ডাকতে থাকে । ফটিক তখন জ্বরের ঘোরে উত্তর দেয় । সেই প্রসঙ্গেই আলোচ্য মন্তব্যটি করা হয়েছে।
(গ) পুলিশের গাড়ি করে ফটিক যখন মামার বাড়ি ফেরে তখন তার সারা শরীর ভেজা, সর্বাঙ্গে কাদা, মুখচোখ লোহিত বর্ণ এবং জ্বরে থরথর করে কাঁপছে । ধীরে ধীরে তার জ্বর বাড়তে থাকে এবং জ্বরের ঘোরে প্রলাপও বকতে থাকে । ডাক্তার জানিয়ে দেন, অবস্থা বড়োই খারাপ । এ গল্পে লেখক খুব সন্তর্পণে ফটিকের জীবনদীপ নির্বাপিত করতে চেয়েছেন । তিনি সরাসরি ফটিকের মৃত্যুর কথা না বললেও ‘ছুটি’ শব্দটি এখানে সেই অর্থেই ব্যবহৃত হয়েছে । ফটিকের এই ‘ছুটি’ হল মুক্তি –বর্তমান স্নেহহীন, প্রেমহীন জীবন থেকে চিরতরে মুক্তি । তাই অসুস্থতার মধ্যে তার মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছে ছুটি তথা মুক্তির আবেদন । কিন্তু তা যে মৃত্যু, ফটিক সেটা জানত না । অবচেতন মনে ফটিক ভীষণভাবে মায়ের কাছে যেতে চেয়েছিল । তাই ঘোরের মধ্যেও মায়ের কণ্ঠস্বর শুনে সে বাড়ি যাওয়ার কথা বলে । এই বাড়ি যাওয়ার অর্থ হল চিরপ্রশান্তির উদ্দেশে অনন্তলোকে যাত্রা করা ।
(২) ‘বিশেষত, তেরো-চৌদ্দ বৎসরের ছেলের মতো পৃথিবীতে এমন বালাই আর নাই।’ – (ক) কার কথা বলা হয়েছে ? (খ) ‘তেরো-চৌদ্দ বৎসরের’ ছেলেটি কে ? (গ) এমন মন্তব্যের কারণ কী ? 1+1+3
উত্তর –
(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্প থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশটিতে ফটিকের কথা বলা হয়েছে ।
(খ) ‘তেরো-চৌদ্দ বৎসরের’ ছেলেটি বলতে এখানে ফটিক চক্রবর্তীর কথা বলা হয়েছে।
(গ) তেরো-চৌদ্দ বছর সময় থেকে ছেলেদের শারীরিক পরিবর্তন শুরু হয় । তাতে থাকে না শোভনতা । তারা কাজেও লাগে না । তাকে দেখে বিশেষ স্নেহের উদ্রেকও হয় না । তাদের সঙ্গ বিশেষ কাম্য নয় । তাদের মুখের আধো আধো কথা ন্যাকামি বলে মনে হয় । আবার পাকা কথাকে জ্যাঠামি বলে মনে হয় । তাদের কণ্ঠের মধ্যে থাকে না মিষ্টতা । লোকে সবসময় তাদের অপরাধ খুঁজে বেড়ায় । শৈশব আর যৌবনের অনেক দোষত্রুটি ক্ষমা করে দেওয়া যায় ঠিকই কিন্তু এই বয়সের সামান্য ত্রুটি বিচ্যুতিগুলোকে অনেক বড়ো করে দেখা হয় ।
(৩) ‘এইরূপ প্রত্যাশা করতে তাহার লজ্জাবোধ হইতে লাগিল’। – (ক) কার কথা বলা হয়েছে ? (খ) এইরূপ প্রত্যাশা বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? (গ) উদ্দিষ্ট ব্যক্তির এমন মনে হবার কারণ কী ?
উত্তর –
(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্প থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশটিতে ফটিক চক্রবর্তীর কথা বলা হয়েছে ।
(খ) স্কুল থেকে ফিরে এসে ফটিকের মাথা ব্যথা ও গা শিরশির করতে থাকে। সে বুঝতে পারে তার জ্বর আসতে চলেছে। শারীরিক অসুস্থতায় পৃথিবীতে নিজের মা ছাড়া অন্যের কাছে সেবা ও পরিচর্যার আশা বৃথা। বিশেষত তার স্নেহ, ভালোবাসাহীন মামির কাছে তা যেন উপদ্রবের সামিল হবে। এখানে সেই কথাই বলা হয়েছে।
(গ) ফটিক মামাবাড়িতে স্নেহ, ভালোবাসাহীন পরিবেশে দিন কাটাচ্ছিল। তার কোনো আচরণই মামির চোখে ভালো লাগত না। পরিবর্তে সে যেন এক দুগ্রহের মতো এই পরিবারে অবস্থান করছিল। মামির চোখে সে এক অকর্মণ্য, নির্বোধ বালক। তার শারীরিক অসুস্থতা মামির কাছে অনাবশ্যক জ্বালাতন ছাড়া আর কিছুই নয় বলেই ফটিক মনে করে। সুস্থ ফটিকই তার কাছে গলগ্রহ, অসুস্থ ফটিক তো অনাবশ্যক জ্বালাতন ছাড়া কিছুই নয়। তাই ফটিকের মনে এমন ভাবনার উদয় হয়েছে।
(৪) ‘ছুটি’ গল্পে মামা বাড়িতে গিয়ে ফটিকের যে দুরবস্থা হয়েছিল তা নিজের ভাষায় লেখো । 5
উত্তর –
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্পে পল্লিপ্রকৃতির কোলে বেড়ে-ওঠা ফটিক কলকাতায় বিশ্বম্ভরবাবুর সঙ্গে মামার বাড়িতে পৌঁছোয় । সেখানে পৌঁছোনোর পর প্রথমে মামির সঙ্গে আলাপ হয়। এদিকে মামির তিন সন্তান রয়েছে তার উপরে আবার ফটিকের উপস্থিতি মামি ভালো মনে নেননি। মূলত তেরো-চোদ্দো বয়সের ছেলেকে সামলানো অত্যন্ত দুরূহ কাজ। এদের চেহারায় কোনো সৌন্দর্য থাকে না, তারা কোনো কাজেও লাগে না। তাদের দেখে কোনো স্নেহ জন্মায় না। তাদের কথাবার্তায় ন্যাকামি-জ্যাঠামি আর বাচালতা প্রকাশ পায়। এই বয়সের স্বাভাবিক যা দোষত্রুটি সবই অসহ্য। ফটিক এমনই এক কিশোর। সে নিজের সম্পর্কে সবই বোঝে, তাই সে লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। সে একটু ভালোবাসা পেতে চায়। এই বয়সের কেউ স্নেহ-ভালোবাসা পেলে সে নিজের সবকিছু উজাড় করে দিতে পারে। মামির কাজকর্ম করেও ফটিক মামির মন জয় করতে পারেনি। সে ছিল উপেক্ষার পাত্র। ফটিকের উৎসাহ দমনে মামির ব্যঙ্গার্থক উক্তি তাকে ব্যথিত করে তুলত। ফটিক ভাবত, পরের পয়সা নষ্ট না করাই ভালো। মামিমার উপেক্ষা, মামাতো ভাইদের সম্পর্ক অস্বীকার, মাস্টারমশাইদের প্রহারে মামাতো ভাইদের উল্লাস তার – কাছে দুঃসহ হয়ে উঠেছিল। শেষপর্যন্ত সে নিরুদ্দেশ হয় এবং পুলিশের সাহায্যে মামাবাড়িতে তার প্রত্যাবর্তন ঘটে। প্রবল জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সে ভুল বকতে থাকে- “মা, এখন আমার ছুটি হয়েছে মা, এখন আমি বাড়ি যাচ্ছি।” এই আকুলতার মধ্য দিয়েই গল্পের পরিসমাপ্তি হয়।
(৫) ‘বিধবা এ প্রস্তাবে সহজেই সম্মত হলেন’ – ‘বিধবা’টি কে ? তাঁর কাছে কে, কী প্রস্তাব দেন ? তিনি এ প্রস্তাবে কেন সম্মত হলেন ? ২+৩=৫
বিধবার পরিচয় : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘ছুটি’ গল্পে ‘বিধবা’ বলতে ফটিকের মায়ের কথা বলা হয়েছে।
প্রস্তাবের কথা : ‘বিধবা’ অর্থাৎ ফটিকের মায়ের কাছে তাঁর দাদা বিশ্বম্ভরবাবু প্রস্তাবটি দেন।
প্রস্তাবটি হল তিনি ফটিককে কলকাতায় নিয়ে যাবেন এবং নিজের কাছে রেখে শিক্ষা দেবেন।
প্রস্তাবে সম্মত হওয়ার কারণ : ফটিকের মা বিধবা এবং দুই সন্তানের জননী। ছোটোবেলা থেকেই ফটিক বাবার সুশাসন পায়নি। ফটিক তার মাকে মানত না। ফটিক ছিল অবাধ্য, উচ্ছৃঙ্খল এবং পড়াশোনায় অমনোযোগী। সবসময় সে তার মাকে জ্বালাতন করে বেড়াত। ফটিকের ঠিক বিপরীত ছিল তার ভাই মাখন। ফটিকের মা সবসময় আশঙ্কা করতেন, পাছে ফটিক ভাই মাখনকে জলে ফেলে দেয় কিংবা মাথা ফাটিয়ে দেয়। তাই এমন ‘হাড় জ্বালাতন’ করা ছেলে যদি কলকাতায় গিয়ে মানুষ হয়, তাতে তো পরিবারেরই মঙ্গল। সুতরাং ফটিকের মা সবদিক বিবেচনা করেই বিশম্ভরবাবুর এই প্রস্তাবে সম্মত হয়েছিলেন।
(৬) ‘দেয়ালের মধ্যে আটকা পড়িয়া কেবলই তাহার সেই গ্রামের কথা মনে পড়িত’ – (ক) ‘তাহার’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে ? (খ) উদ্দিষ্ট ব্যক্তির কোথায় এমন মনে হতো ? (গ) এমন মনে হওয়ার কারণ কী ? 1+1+3
উত্তর
(ক) এখানে ‘তাহার’ বলতে ফটিক চক্রবর্তীর কথা বলা হয়েছে ।
(খ) মামা বাড়িতে অনাদর-অবহেলায় বসবাসকালে ফটিকের এমন মনে হতো ।
(গ) মামা বাড়িতে ফটিকের অবস্থান ছিল দুগ্রহের মতো । অবহেলা আর অনাদর তার নিত্যসঙ্গী । মামি তার সঙ্গে কোনো দিনই ভালো করে বা ভালোবেসে কথা বলে নি । অথচ সে স্নেহের জন্য কাঙাল ছিল । মামি কোনো কাজ করতে বললে সে আনন্দে অধীর হয়ে উঠত । আবশ্যকের চেয়েও বেশি কাজ করে ফেলত । কিন্তু মামি তার উৎসাহ দমন করত । এমন এক মানসিক পরিস্থিতিতে যেখানে ভালোবাসা, উৎসাহ, অনুপ্রেরণা কাম্য সেখানে মামির ব্যবহার তার কাছে নিষ্ঠুর অবিচার বলে মনে হতো । ঘরের এই অনাদর তাকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল । নগরজীবনে সে হাঁফ ছেড়ে কোথাও যেতে পারত না । তাই তার নিজের গ্রামের ছবিই চোখের সামনে ভেসে উঠত ।
(৭) ‘ছুটি’ গল্পে ফটিক চরিত্রটি যেভাবে ধরা পড়েছে, তা আলোচনা করো। 5
উত্তর –
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ফটিক। তাকে ঘিরেই গল্প পরিণতির পথে এগিয়ে গেছে। তার চরিত্রের যেসব দিকগুলি, ফুটে উঠেছে সেগুলি হল-
সারল্যঃ ফটিক এক সহজ সরল গ্রাম্য বালক। উদার প্রকৃতিতে তার বেড়ে ওঠা। গ্রামীণ পরিবেশের সরলতা ছাপ তার আচরণ, খেলায় ফুটে উঠেছে।
নেতৃত্বদানের ক্ষমতাঃ ফটিক ছেলেদের দলের নেতা। তার কথায় ছেলেদের দল বিভিন্ন খেলায় মেতে ওঠে। ছেলেদের নেতৃত্বদান তথা পরিচালনার পরিচয় ফুটে ওঠে।
মাখনের প্রতি ভালোবাসাঃ মাখনের সঙ্গে ঝগড়া খুঁনসুটি চললেও সে মাখনকে ভালোবাসে। তাই কলকাতা যাবার সময় সে নির্দ্বিধায় তার খেলার সামগ্রী তার ভাইকে দিয়ে দিয়েছে।
মায়ের প্রতি ভালোবাসা: ফটিকের মায়ের প্রতি অভিমান থাকলেও সে তার মাকে ভালোবাসে। অসুস্থ অবস্থায় তার মায়ের কথা বারবার মনে পড়ছে।
আত্মাভিমানী মননঃ ফটিকের মনে হয়েছিল সে মামার বাড়িতে অন্যের অর্থ ধ্বংস করছে। মামির প্রতি গভীর অভিমানে সে বাড়ি ছেড়েছে।
সর্বোপরি ফটিক এক গ্রামীণ সরল বালক। কলকাতার পরিবেশে সে যেন জল থেকে ডাঙায় তোলা মাছের মতো হয়ে গেছে। তার মন চেয়েছে গ্রামের পরিবেশে ফিরে যেতে। মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে ফটিকের শহুরে বন্দি জীবনের মুক্তি ঘটেছে।
(৮) ‘ছুটি’ গল্পে ফটিকের মামা বিশ্বম্ভরবাবুর চরিত্রটি আলোচনা করো । 5
উত্তর –
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্পের অন্যতম চরিত্র হল বিশ্বম্ভরবাবু। তাঁর চরিত্রের যে দিকগুলি গল্পে ধরা পড়েছে, সেগুলি হল-
কর্তব্যপরায়ণঃ কর্মের তাগিদে বিশ্বম্ভরবাবু বাড়ির বাইরে থাকতেন। তাই বোনের বিশেষ খোঁজ খবর নিতে পারেন নি। কিন্তু কর্মক্ষেত্র থেকে ফিরে আসার পর তিনি বোনের সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন। শুধু তাই নয় বোনের ছেলেকে দায়িত্ব সহকারে নিজের কাছে নিয়ে গেছেন।
বোনের প্রতি ভালোবাসাঃ ফটিকের দুরন্তপনায় বিশ্বম্ভরবাবুর বোনের প্রতি দরদ ও ভালোবাসা লক্ষ করা যায়। সে বোনকে ফটিকের জ্বালাতন থেকে মুক্তি দেবার জন্য দুরন্ত ভাগ্নেকে কলকাতায় নিয়ে গেছেন।
সংসার অনভিজ্ঞঃ বিশ্বম্ভরবাবু সংসার অনভিজ্ঞ। সাংসারিক জটিলতা ধরার মতো তাঁর মনন বা মানসিকতা ছিল না। তাই নিজের গোছানো সংসারে একটি তেরো-চৌদ্দ বছরের ছেলের উপস্থিতি যে খুব সমস্যা তৈরি করতে পারে তা তিনি স্বপ্নেও ভাবতে পারেন নি।
(৯) ‘উৎসাহে তাহার রাত্রে নিদ্রা হয় না’ – (ক) কার কথা বলা হয়েছে ? (খ) তার উৎসাহের কারণ কী ? (গ) শেষ পর্যন্ত তার কী অবস্থা হল ? 1+2+2
উত্তর –
(ক) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্প থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশটিতে ফটিকের কথা বলা হয়েছে ।
(খ) ফটিক গ্রামের ছেলে। সে গ্রামের চারদিকে ঘুরে বেড়ায়। গ্রামের বাইরে যাবার সৌভাগ্য তার কোনো দিনই হয় নি। তাছাড়া নিত্য বকুনি খাওয়া, ভাইয়ের প্রতি মায়ের পক্ষপাত , ভাইয়ের দুর্ব্যবহার তার মধ্যে মামাবাড়ি যাওয়ার উৎসাহ বাড়িয়ে দিয়েছিল । তাই মামারবাড়ি কলকাতায় যাবার নাম শুনে সে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে । তার মনে উৎসাহের বান ডাকে ।
(গ) মামাবাড়িতে পৌঁছে মামিমার সঙ্গে আলাপ হয়। মামিমা যে তাকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেননি, ফটিক তা বুঝতে পারে। মামিমার আচার-ব্যবহারের মধ্যে কোনো স্নেহ, মায়া- মমতা তো সে পায়নি বরং পেয়েছিল অবহেলা, তাচ্ছিল্য ও দুর্ব্যবহার। তা ছাড়া মামাতো ভাইদের কাছে সে ছিল উপেক্ষিত, অবহেলিত ও উপহাসের পাত্র। শেষপর্যন্ত অনাদর, অবহেলা, উপেক্ষা মাথায় নিয়ে বাড়ি ফেরার উদগ্র বাসনা অনুভব করে। ফটিক প্রবল জ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রলাপ বকতে থাকে। “মামা, আমার ছুটি হয়েছে কি?” পরিশেষে বলা যায়, এক করুণ পরিণতির মধ্য দিয়ে ফটিকের মামাবাড়িতে থাকার উৎসাহের মৃত্যু ঘটেছিল।
(১০) ‘তখন তাহার মানসিক উন্নতির প্রতি মামীর এতটা যত্নবাহুল্য তাহার অত্যন্ত নিষ্ঠুর অবিচার বলিয়া মনে হইত’ – উদ্ধৃতাংশটির মধ্যে দিয়ে মামীর চরিত্রের যে দিকগুলি আভাসিত হয়েছে, তা লেখো ।
[ অথবা ]
‘ছুটি’ গল্পে ফটিকের মামির চরিত্রটি বিশ্লেষণ করো ।
উত্তর –
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ছুটি’ গল্পে ফটিকের মামি চরিত্রের স্বল্প উপস্থিতি। এই স্বল্প উপস্থিতিতেই সে তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য দ্বারা খুব সহজেই পাঠকের মনে দাগ কেটে ফেলেছেন ।
স্বার্থপর: মামি খুবই স্বার্থপর মানুষ। নিজের গোছানো সংসারে সে ফটিকের উপস্থিতি কিছুতেই মেনে নিতে পারে নি। প্রতিনিয়ত ফটিককে তার বাড়তি বোঝা বলে মনে হয়েছে।
হৃদয়হীনঃ মামি ফটিকের প্রতি হৃদয়হীন আচরণ করত। ফটিক আদেশ-অনুসারে কাজ করলেও মামি সে কাজের কোনো স্বীকৃতিই দিত না। তাছাড়া সে অসুস্থ ফটিককে ঝামেলা বলে মনে করেছে। চেয়েছে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিতে।
নির্দয়ঃ ফটিক বই হারিয়ে ফেললে স্কুলে মার খায়। মামিমা স্পষ্ট জবাব দেয় বারে বারে বই কিনে দেওয়া যাবে না। এর মধ্যে সত্যির চেয়ে মিথ্যাটাই বেশি ধরা পড়ে। সেই সঙ্গে ধরা পড়ে হৃদয়হীন মামির নির্দয় আচরণ।
অন্যকে আপন করার অক্ষমতাঃ ফটিকের মতো বয়সি ছেলেদের সামান্য একটু ভালোবাসার দরকার। অথচ মামি তার বিপরীত আচরণ করেছে। সে ফটিককে দূরেই সরিয়ে রেখেছে। তাকে আপন করে নিতে পারে নি। এটা তার চরিত্রের একটা বড়ো ত্রুটি।
আরও পড়ুন –
Alias Jimmy Valentine Question Answer (6 Mark)
Of Studies Question Answer (6 Mark)
The Garden Party Question Answer (2 Mark)
Alias Jimmy Valentine Question Answer (2 Mark)
Of Studies Question Answer (2 Mark)
My Last Duchess Question Answer (2 Mark)
The Ghost Brahman Question Answer (5 Mark)
YouTube – Samim Sir