Education Question Answer class 12 Chapter 9 / 4th Semester / এডুকেশন নবম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর / চতুর্থ সেমিস্টার / দ্বাদশ শ্রেণী
Education Question Answer class 12
নবম অধ্যায় – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
এই অধ্যায় থেকে প্রথমে আমরা 5 মার্কের প্রশ্ন উত্তর দেখে নিব । তারপর আমরা এই অধ্যায় থেকে 2 মার্কের প্রশ্ন উত্তর নীচে দেখবো । আশা করি এই অধ্যায় থেকে নীচে দেওয়া প্রশ্ন উত্তরগুলি ভালোভাবে পড়লেই পরীক্ষায় কমন পেয়ে যাবে । এই প্রশ্ন উত্তরগুলির বাইরে আর কোনো প্রশ্ন উত্তর পড়তে হবে না ।
Mark – 5
(১) শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধাগুলি কী কী ?
উত্তর – শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা: শিক্ষার্থীদের শিখন অভিজ্ঞতার উন্নয়নে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়। এর সুবিধাগুলি হল –
(ক) তথ্যসংগ্রন্থ: শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন তথ্য অ্যাকাডেমিক জার্নাল, E-BOOK, মাল্টিমিডিয়া ইত্যাদি থেকে সংগ্রহ করে।
(খ) নমনীয়তা: শিক্ষাপ্রযুক্তির তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে নমনীয়তা রয়েছে। কারণ শিক্ষার্থীরা যে-কোনো ধরনের তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।
(গ) সহাযাগিতা: এটি প্রোজেক্ট এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে শিক্ষক ও সহপাঠীদের সহযোগিতা প্রদানে সাহায্য করে।
(ঘ) পুঙ্খানুপুঙ্খ চিন্তন: তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের সমস্যাসমাধান দক্ষতা ও খুঁটিনাটি চিন্তন দক্ষতা গড়ে ওঠে।
(ঙ) প্রযুক্তিগত দক্ষতা: প্রযুক্তিগত দক্ষতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন শিক্ষামূলক কাজের ইচ্ছা জাগ্রত হয়।
(চ) গ্রেডিং দক্ষতা: শিক্ষকরা অনেক সহজে শিক্ষার্থীদের গ্রেড প্রদান করতে পারে এবং তাদের ফিডব্যাক গ্রহণ করতে পারে।
(ছ) পাঠ পরিকল্পনা তৈরি: শিক্ষক তথ্য প্রয়োগ করে পাঠ পরিকল্পনা করতে পারেন, যা শিক্ষার্থীদের শিখন স্টাইল, আগ্রহ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার শ্রম ও সময় উভয়েরই সাশ্রয় করে।
(২) তথ্য প্রযুক্তিবিজ্ঞানের অসুবিধাগুলি লেখো ।
উত্তর – তথ্য প্রযুক্তিবিজ্ঞানের অসুবিধা: তথ্য প্রযুক্তিবিজ্ঞানের অসুবিধাগুলি হল-
(ক) সানাযোগে ঘাটতি: বিভিন্ন ধরনের সমাজ মাধ্যম, গেমস-এর প্রতি শিক্ষার্থীরা আসক্ত হয়ে পড়ে। ফলে শিখনে মনোযোগ নষ্ট হয়।
(খ) শারীরিক কার্যকারিতা : কান শিক্ষার্থীরা স্ক্রিনের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। ফলে তাদের মধ্যে শারীরিক কার্যকারিতা কমে, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক।
(গ) তথ্য সংরক্ষাণ অসুবিধা: শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য অনেকসময় চুরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
(ঘ) খরচসাপেক্ষ: বিদ্যালয়ে তথ্যপ্রযুক্তির শিক্ষা খরচসাপেক্ষ হয়ে পড়ে।
(ঙ) দক্ষতার অভাব: সব শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তিতে সমানভাবে দক্ষ হতে পারে না। ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসাম্য সৃষ্টি হয়।
(চ) সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার অভাব: শিক্ষার্থীরা বেশি পরিমাণে প্রযুক্তিতে আসক্ত হয়ে পড়লে সামাজিক মিথস্ক্রিয়া কমে যায়। ফলে শিক্ষার্থীদের সামাজিক বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হয়।
(ছ) প্রাক্ষোভিক বিকাশে বাধা: তথ্য প্রযুক্তিবিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রাক্ষোভিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে। শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার ফলে যে ধরনের প্রক্ষোভের বিকাশ ঘটে, সেই ধরনের প্রাক্ষোভিক বিকাশ তথ্য প্রযুক্তিতে ঘটে না।
(৩) শিক্ষাপ্রযুক্তির পরিধি বা ক্ষেত্রসমূহ আলোচনা করো ।
উত্তর – শিক্ষা যেমন বিস্তৃত, শিক্ষার পরিধি যেমন ব্যাপক, শিক্ষা প্রযুক্তিবিজ্ঞানের পরিধিও তেমন ব্যাপক ও বিস্তৃত, এর পরিধি মূর্ত শিক্ষা পক্রিয়া থেকে শুরু করে বিমূর্ত শিক্ষা প্রক্রিয়া বা আরও যুগ্ম প্রক্রিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত ও ব্যপ্ত। শিক্ষার বিভিন্ন কর্মপ্রণালীর মধ্যে এই প্রযুক্তি হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও সিস্টেম বিশ্লেষণকে সমন্বিত করত সক্ষম। মূলত তিনটি ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি কাজ করে- (ক) সাধারণ শিক্ষামূলক ক্ষেত্র, প্রশাসন ও পরিচালনাগত প্রযুক্তি। (খ) শিক্ষাগত মূল্যায়ন, পরীক্ষণ ও যাচাই সম্বন্ধীয় প্রযুক্তি। (গ) নির্দেশদান ও শিক্ষণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত প্রযুক্তি।
Rowntree (1973) শিক্ষাপ্রযুক্তির নিম্নলিখিত ক্ষেত্রগুলির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন- (ক) শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য চিহ্নিতকরণ, (খ) শিক্ষামূলক পরিবেশের পরিকল্পনা করা (গ) উপযুক্ত শিক্ষণ প্রক্রিয়া ও শিক্ষাগত মাধ্যম স্থির করা (ঘ) শিক্ষণ পদ্ধতির উপযুক্ততা নির্ণয় করার জন্য মূল্যায়ন ব্যবস্থা স্থির করা (ঙ) মূল্যায়ন থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান বা অন্তর্দৃষ্টির সাহায্যে ভবিষ্যতে এই শিক্ষণ-শিখন প্রক্রিয়াকে অধিকতর কার্যকরী করার জন্য তার উন্নতিসাধন করা।

(৪) যোগাযোগ কাকে বলে? যোগাযোগের উদ্দেশ্যগুলি লেখো।
উত্তর – যোগাযোগ: যোগাযোগ শব্দের অর্থ হল একে অন্যের সঙ্গে তথ্য, অভিজ্ঞতা ও ভাববিনিময় করা। অনেকে যোগাযোগকে পারস্পরিক বোঝাপড়া বলে মনে করে থাকে। Communication বা যোগাযোগ কথাটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘Communicare’ থেকে। যার অর্থ ‘to share’ অথবা ‘to make common’ অর্থাৎ ভাগ করা বা সাধারণ করা। এ ছাড়াও ল্যাটিন শব্দ ‘Communis’ হল ‘Communicare’ শব্দের মূল ভিত্তি, যার অর্থ হল সাধারণ। তাই যোগাযোগের মাধ্যমে মানুষে মানুষে ধারণা, রীতিনীতি ও তত্ত্বের আদান-প্রদান করে সহমত বা অভিজ্ঞতা অর্জনে ব্যক্তি সফল হয়।
সংজ্ঞা: যোগাযোগ কথার অর্থ হল যার দ্বারা মানুষ নিজের ভাবকে, অনুভবকে একে অপরের সঙ্গে বিনিময় করে। Aristotle-এর মতে, যোগাযোগ হল অন্যদের প্রভাবিত করার পক্রিয়া, যার মাধ্যমে একে অন্যের থেকে কাঙ্খিত আচরণ আশা করতে পারে। Dewey বলেছেন, যোগাযোগ হল এমন প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মানুষ একে অন্যের সঙ্গে অভিজ্ঞতার আদান-প্রদান ঘটায় যতক্ষণ না পর্যন্ত একটা পারস্পরিক বোঝাপড়ায় উপনীত হতে পারে।
যোগাযোগের উদ্দেশ্য: যোগাযোগের উদ্দেশ্যগুলি হল- (ক) বার্তা প্রদান, গ্রহণ ও বিনিময় করা (খ) কোনো বিশেষ কর্ম বা সম্পর্কসমূহ বজায় রাখার জন্য যোগাযোগের ব্যবহার। (গ) একজন যেভাবে চিন্তা বা কাজ করে, সেই অনুযায়ী, অপরকে চিন্তা করানো বা কাজ করানো। (ঘ) আমরা যা চিন্তা করি ও কাজ করি সেই অনুযায়ী, অপরকে চিন্তা করানো বা কাজ করানো। (ঙ) আমাদের নিজেদের কাছে বা অপরের কাছে আমাদের কল্পনাকে প্রকাশ করা। (চ) কোনো কথার অর্থ অনুধাবন করা এবং এই সম্পর্কে আমাদের অভিজ্ঞতার অর্থ উপলবিধ করা।
(৫) যোগাযোগ প্রক্রিয়ার উপাদানসমূহ সম্পর্কে লেখো ।
উত্তর – যোগাযোগ প্রক্রিয়ার উপাদানসমূহ: যোগাযোগ হল বিভিন্ন উপাদানের সমাহার। সেই উপাদানগুলি হল –
প্রেরক: যে যোগাযোগ প্রেরণ করে, সেই হল প্রেরক। প্রেরক মানুষ, যন্ত্র ইত্যাদি হতে পারে। যেহেতু শিক্ষক শিক্ষাদান করেন, তাই শিক্ষক প্রেরক। তবে শিক্ষণ-শিখনের ক্ষেত্রে যখন শিক্ষার্থী ফিডব্যাক দেয়, তখন শিক্ষার্থী প্রেরকের কাজ করে।
(ক) বিষয়বস্তু: প্রেরকের মতামত, চিন্তাভাবনা, অনুভূতি যা অন্যজনকে প্রেরণ করা হয়, তাই হল বিষয়বস্তু। শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষক কোন্ বিষয় পাঠদান করছেন, সেই পাঠদান সংক্রান্ত বিষয় এক্ষেত্রে বিষয়বস্তু।
(খ) মাধ্যম: বিষয়বস্তুকে যথাযথভাবে সঞ্চালিত করার জন্য প্রেরক ভাষাকে কাজে লাগাতে পারেন বা ভাষা ছাড়াও সঞ্চালন করতে পারেন। ভাষাকে যখন ব্যবহার করেন, তখন মাধ্যম হল বাচনিক, আবার ভাষা ব্যবহার না করলে মাধ্যম হবে অবাচনিক। TV, Taperecorder, কম্পিউটার, মোবাইল ইত্যাদির মাধ্যমে যোগাযোগ গড়ে তোলা যায়।
(গ) গ্রাহক: বার্তা যিনি গ্রহণ করেন, তিনি হলেন গ্রাহক। শিক্ষণ-শিখন প্রক্রিয়ায় যখন শিক্ষক পাঠদান করেন, তখন শিক্ষার্থী হল গ্রাহক আবার শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া যখন শিক্ষক গ্রহণ করেন, সেক্ষেত্রে শিক্ষক হলেন গ্রাহক।
(ঘ) ফিডব্যাক: গ্রাহকের প্রতিক্রিয়াই হল ফিডব্যাক। ফিডব্যাকের সাহায্যে যোগাযোগ প্রক্রিয়ার কার্যকারিতা বিচার করা হয়।
(ঙ) যোগাযোগের সহায়তা বা বাধা প্রদানকারী উপাদান: যোগাযোগ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে এমনকিছু বিষয় থাকতে পারে, যা যোগাযোগ প্রক্রিয়াকে তাড়াতাড়ি করতে সাহায্য করে, আবার কিছু বিষয় আছে, যা যোগাযোগ প্রক্রিয়াকে মথর করে দেয়। যেমন-শারীরিক অবস্থা, মানসিক অবস্থা, যোগাযোগের পরিবেশ ইত্যাদি।
(৬) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বলতে কী বোঝো ? শিক্ষায় তথা ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো ।
উত্তর – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (Information and Communication Technology ICT) হল এমন একটি প্রযুক্তি, যার সাহায্যে তথ্য সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ, স্থানান্তর এবং আদান-প্রদান করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে- কম্পিউটার, ইনটারনেট, মোবাইল ফোন, সফটওয়্যার, মাল্টিমিডিয়া, ইমেল, ভিডিয়ো কনফারেন্সিং, ই-লানিং ইত্যাদি। ICT কেবল তথ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা ও প্রশাসনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শিক্ষাক্ষেত্রে ICT শিক্ষাদান ও শেখার প্রক্রিয়াকে অধিকতর আকর্ষণীয়, দ্রুত ও কার্যকর করে তোলে। শিক্ষক ICT-এর সাহায্যে মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন এবং শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে। ICT-এর মাধ্যমে দূরশিক্ষা, ভার্চুয়াল শ্রেণিকক্ষ, অনলাইন টেস্ট ও ই-লাইব্রেরি ব্যবস্থাও গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে।
শিক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বৈশিষ্ট্য: শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্য-যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষণ-শিখন প্রক্রিয়ার উন্নয়নে সাহায্য করে সহযোগিতা, যোগাযোগ ও সম্পদের গ্রহণযোগ্যতার মাধ্যমে। এর বৈশিষ্ট্যগুলি হল-
(ক) সহযোগিতা প্রদান: ICT শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ক্লাসের অভ্যন্তরে এবং ক্লাসের বাইরে একসঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে কাজে উৎসাহিত করে। এর মাধ্যমে তারা জ্ঞানের বিনিময় করে এবং বিশ্বের সাথে যুক্ত হতে পারে।
(খ) যোগাযোগ: ICT শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সশরীরে উপস্থিত না থেকেও সরাসরি তথ্যলাভ ও যোগাযোগ করতে সাহায্য করে।
(গ) সম্পাদর গ্রহণযোগ্যতা: ICT ডিজিটাল তথ্য ও সম্পদকে গ্রহণ করতে পারে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা online বিষয়বস্তুও সংগ্রহ করতে পারে।
(ঘ) ভিন্নভাবে সক্ষম শিক্ষার্থীদের সহায়তা: ভিন্নভাবে সক্ষম শিক্ষার্থীদের শিখনে ICT সাহায্য করে।
(ঙ) মিথস্ক্রিয়া: ICT বহুধামাধ্যমের মধ্যে যোগাযোগ ঘটিয়ে শিক্ষাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ICT-এর সঙ্গে গ্রাফিক্স, বক্তব্য, শব্দ, চিত্র ইত্যাদির মিথস্ক্রিয়া ঘটিয়ে শিক্ষণকে আকর্ষণীয় করে তোলা যায়।
(চ) নমনীয়তা: ICT ব্যবহারের ক্ষেত্রে নমনীয়তা রয়েছে এবং একে বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করা যায়।
(এ) প্রেষণা স্যার: ICT শিক্ষার্থীদের শিখনে প্রেষণা জাগায় এবং সেগুলিকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের নতুন ধারণা তৈরিতে উৎসাহিত করে।
(৭) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপাদানগুলি লেখো ।
উত্তর – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপাদানসমূহ: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপাদানগুলি হল-
(ক) সফটওয়্যার: কম্পিউটারের প্রোগ্রামিং-এর সমন্বয়, যা কোনো নির্দিষ্ট কাজকে ধাপে ধাপে সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেয়, তাকে সফটওয়্যার বলে। কম্পিউটারের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার চালানো যায় এবং সার্বিকভাবে কম্পিউটার পরিচালনার জন্য বিভিন্ন প্রকারের সফটওয়্যার রয়েছে। সেগুলিকে বলে অপারেটিং সিস্টেম। যেমন- লিনাক্স, মাইক্রোসফট, উইন্ডোজ ইত্যাদি।
(খ) হার্ডওয়্যার: কম্পিউটারের ইনপুট-আউটপুট, স্টোরেজ ডিভাইসসহ অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সকল যন্ত্রাংশকে একসঙ্গে বলে হার্ডওয়্যার।
(গ) তথ্য: বিভিন্ন ধরনের ডাটাকে প্রক্রিয়াকরণ, পরিচালন ও সংঘবদ্ধকরণের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থপূর্ণ ফলাফলকে তথ্য বলে।
(ঘ) প্রক্রিয়া: কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় নির্দিষ্ট ক্রমে। একেই বলে প্রক্রিয়া। বিভিন্ন ধরনের তথ্য আদানপ্রদানের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়া কার্যকরী হয়।
(ঙ) ব্যক্তি: বিভিন্ন ধরনের তথ্য সরবরাহ, আউটপুট সঠিকভাবে যাচাই করে সিদ্ধান্তগ্রহণ যে করে, সেই হল ব্যক্তি।
(চ) ডাটা: কোনো তথ্যের ক্ষুদ্রতম একক যার অর্থ রয়েছে, কিন্তু পূর্ণাঙ্গ নয়, এগুলি হল ডাটা। কতকগুলি ডাটা একত্রিত হয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্য তৈরি করে।
(৮) শিক্ষাক্ষেত্রে ইনটারনেটের ভূমিকা লেখো ।
উত্তর – শিক্ষাক্ষেত্রে ইনটারনেটের ভূমিকা: ইনটারনেটকে শিক্ষার বিভিন্ন কর্মকান্ডের সঙ্গে বর্তমানে যুক্ত করা হয়েছে। সেগুলি হল –
(ক) ই-লার্নিং: এটি হল শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষা উপকরণ, শিক্ষার মাধ্যম, গ্রহণযোগ্যতা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সর্বজনীনতা, নৈতিকতাসহ সমগ্র বিষয়ের সমন্বয়ে গঠিত গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি।
(খ) ই-কনটেন্ট: যেসব বিষয়বস্তু কোনো ইলেকট্রনিক যন্ত্র বা যন্ত্রাংশের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয়, তাকে ই-কনটেন্ট বলে। ডকুমেন্ট, অডিয়ো, ইমেজ, প্রেজেন্টেশন ওয়েবসাইট, ভিডিয়ো, ইনফোগ্রাফ ইত্যাদি সাত ধরনের ই-কনটেন্ট রয়েছে।
(গ) মোবাইল লার্নিং: ব্যক্তিগত ইলেকট্রনিক ডিভাইস দ্বারা বিষয়বস্তুকে আত্তীকরণের মাধ্যমে শিখন হল মোবাইল লার্নিং। এক্ষেত্রে মোবাইলকে শিক্ষাগত প্রযুক্তি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
(ঘ) ডিসট্যান্স লার্নিং: এটি হল এমন একধরনের কৌশল, যার মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা শিক্ষক থেকে দূরে থেকেও শিক্ষার্থী শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে। এই ধরনের শিখনে ভৌগোলিক, আর্থিক, সামাজিক, পারিবারিক ইত্যাদির ভূমিকা নেই। যে-কোনো ব্যক্তিই এই ব্যবস্থা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।
(ঙ) অনলাইন লার্নিং: অনলাইন লার্নিং-এ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের Google Meet, Google Classroom ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষা দিতে পারে। এর মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া সম্ভব। তা ছাড়া এর মাধ্যমে মূল্যায়ন করা যায়।
(চ) ভার্চুয়াল ইউনিভারসিটি : ইনটারনেট ও সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন কোর্স ও প্রোগ্রাম পরিচালনা করা যায়। যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা খুব সহজে নিজের ইচ্ছামতো কোর্স ও প্রোগ্রাম গ্রহণ করতে পারে।
(ছ) উইকিপিডিয়া: উইকিপিডিয়া হল ওয়েবভিত্তিক, বহুভাষিক, বিশ্বকোষ, যা উইকিমিডিয়া ফাউন্ডেশন দ্বারা পরিচালিত। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দক্ষতা অর্জনে শিক্ষায় প্রাপ্ত প্রেষণা সৃষ্টিতে এর ব্যবহার রয়েছে।
(জ) ম্যাসিভ ওপেন জনলাইন কোর্স (MOOCs): শিক্ষা ও বৃত্তিমূলক বিভিন্ন ধরনের কোর্স খুব সহজে সববয়সের মানুষদের জন্য একটি অনলাইন কোর্স হল MOOCs। বিনা খরচে শিক্ষার্থী এই শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে।
(৯) ডিজিটাল সাক্ষরতা কাকে বলে ? ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যাবহারিক দিকগুলি লেখো । **
উত্তর – ডিজিটাল সাক্ষরতা: মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্মের জন্য মোবাইল, কম্পিউটার, ইনটারনেট অ্যাক্সেস করার এবং ইনটারনেটের মাধ্যমে অন্যদের সঙ্গে যুক্ত করার দক্ষতাই হল ডিজিটাল সাক্ষরতা। যেমন- ই-মেল পাঠানো ও গ্রহণ, ব্লগ লেখা ও প্রকাশ করা। চার্লস ব্যাবেজকে আধুনিক ডিজিটাল কম্পিউটারের জনক বলা হয়।
ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যাবহারিক দিক:
(ক) জার্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স (AI) বা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা: মানুষ যেভাবে চিন্তাভাবনা করে, কৃত্রিম উপায়ে কম্পিউটার সেইভাবে চিন্তাভাবনার রূপদান করার জন্য যে ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়া কার্যকরী হয়, তাকে আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলে। বিশেষ ধরনের সেনসরের মাধ্যমে এটি মানুষের বলা কথা বুঝতে পারে। AI কে ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার ল্যাঙ্গুয়েজ শিখনের প্রয়োজন।
(খ) রোবোটিক্স: রোবোটিক্স হল এমন একটি প্রযুক্তির শাখা, যেখানে রোবোটের ডিজাইন, নির্মাণ, কার্যক্রম ও প্রয়োগ করা হয়। সুতরাং কোনো স্ট্রাকচার-এর সেনসিং থাকলে, তাকে রোবোট বলে। রোবোটিক্স সম্বন্ধে যথাযথ শিক্ষাদানের জন্য উন্নত প্রযুক্তিগত জ্ঞানসম্পন্ন শিক্ষক প্রয়োজন।
(গ) ক্রায়োসার্জারী: খুব ঠান্ডা বা বরফ শীতল তাপমাত্রায় শরীরের অস্বাভাবিকতা ধ্বংস করার পদ্ধতি হল ক্রায়োসার্জারী। ক্রায়োসার্জারী ত্বকের বিভিন্ন ক্ষতের চিকিৎসাতেও, এমনকি ক্যান্সার, টিউমার ইত্যাদি চিকিৎসায় বর্তমানে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই সম্বন্ধে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য উপযুক্ত বিশেষজ্ঞ শিক্ষক প্রয়োজন।
(ঘ) মহাকাশ গবেষণা: মহাকাশ সম্বন্ধীয় গবেষণায় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। উন্নত প্রযুক্তিবিদগণের যথাযথ শিক্ষণ মহাকাশ বিজ্ঞানী প্রস্তুত করে থাকেন।
(ঙ) বায়োইনফরমেটিক্স: এই ডিজিটাইজেশন পদ্ধতি ফলিত গণিত, তথ্য বিজ্ঞান, পরিসংখ্যা, কম্পিউটার বিজ্ঞান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), জৈবরসায়ন জীবনবিজ্ঞান ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ের জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে বায়োইনফরমেটিক্স শাখাটি তৈরি হয়েছে। এর জ্ঞান প্রোটিনের গঠন বিশ্লেষণ, DNA বিশ্লেষণ ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করা হয়।
(১০) ইউনিভার্সাল অ্যাকসেস কী ? গ্লোবাল ভিলেজ কাকে বলে ?
উত্তর – ইউনিভার্সাল ব্যবহার : ইউনিভার্সাল অ্যাকসেস বলতে বোঝায়, সকল মানুষকে তথ্য ও প্রযুক্তি অর্থাৎ ডিজিটাল প্রযুক্তি সম্বন্ধে ধারণা অর্জনের জন্য সমান সুযোগ ও প্রবেশাধিকার দেওয়া।
ইউনিভার্সাল অ্যাকসেস এর মাধ্যমে সারা বিশ্বের মানুষজনকে ডিজিটাল ভিলেজে পরিণত করাই হল ইউনিভার্সাল একসেসের প্রধান উদ্দেশ্য। এই ধারণায় বলা হয়, সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষজনকে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ, কথোপকথন, গণমাধ্যম ও ইলেকট্রনিক যোগাযোগের সঙ্গে যুক্ত করা।
গ্লোবাল ভিলেজ: বৈদ্যুতিক প্রযুক্তি ও তথ্যের তাড়াতাড়ি সঞ্চালনের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্বের প্রতিটি মানুষকে একটি গ্রামের অংশ হিসেবে এমনভাবে তুলে ধরা হবে, যার ফলে বিশ্বের প্রতিটি মানুষই তথ্য ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে উপযুক্ত ইনটারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে একটি একক কমিউনিটিতে পরিণত হবে অর্থাৎ প্রত্যেক মানুষই ডিজিটাল পদ্ধতিকে ব্যবহার করে তাদের চিন্তাভাবনা, কৃষ্টি-সংস্কৃতির গঠনে একে অপরকে সাহায্য করতে পারবে। এই কারণে বর্তমান বিশ্বকে গ্লোবাল ভিলেজ বলা হয়।
সুতরাং গ্লোবাল ভিলেজ হল তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর এমন একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা, যেখানে পৃথিবীর সকল প্রান্তের মানুষ একই ধরনের ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে চিন্তাভাবনা, কৃষ্টি-সংস্কৃতিতে একে অপরকে সহযোগিতা করতে পারে।
Mark – 2
(১) তথ্যপ্রযুক্তির সংজ্ঞা দাও ।
উত্তর – ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যাসোসিয়েসন অফ আমেরিকা (ITAA) এর মতে, তথ্যপ্রযুক্তি হল কম্পিউটারনির্ভর একটি তথ্য প্রক্রিয়া, যা সফটওয়্যারের যথাযথ ব্যবহার, কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের অধ্যয়ন, ডিজাইন, উন্নয়ন ও বাস্তবায়ন দ্বারা পরিচালিত হয়।
UNESCO: তথ্য হল কম্পিউটার, মানুষ ও যন্ত্রের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়াজনিত ঘটনা, যেগুলি সামাজিক, আর্থিক ও সাংস্কৃতিক ক্রিয়াকর্মের সঙ্গে যুক্ত। তথ্যপ্রযুক্তি হল বিজ্ঞানসম্মত টেকনোলজি ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিদ্যা এবং ম্যানেজমেন্টের কৌশল, যা তথ্যসমূহের সংগ্রহ ও প্রয়োগের সঙ্গে সম্পর্কিত।
(২) শিক্ষাক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির কয়েকটি সুবিধা লেখো ।
উত্তর – (ক) নমনীয়তা: শিক্ষাপ্রযুক্তির তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে নমনীয়তা রয়েছে, কারণ শিক্ষার্থীরা যে-কোনো ধরনের তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।
(খ) সহযোগিতা: এটি প্রোজেক্ট এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে শিক্ষক ও সহপাঠীদের সহযোগিতা প্রদানে সাহায্য করে।
(গ) পুঙ্খানুপুঙ্খ চিন্তন: তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের সমস্যাসমাধান দক্ষতা ও খুঁটিনাটি চিন্তন দক্ষতা গড়ে ওঠে।
(ঘ) প্রযুক্তিগত দক্ষতা: প্রযুক্তিগত দক্ষতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন শিক্ষামূলক কাজের ইচ্ছা জাগ্রত হয়।
(৩) শিক্ষায় প্রযুক্তি কী ? প্রযুক্তি কীভাবে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করে ?
উত্তর – শিক্ষায় প্রযুক্তি: শিক্ষায় প্রযুক্তি হল শিক্ষাদানের জন্য ডিজিটাল সরঞ্জাম, সফটওয়্যার ও ইনটারনেটের ব্যবহার। এটি শিক্ষার্থীদের পাঠক্রম বুঝতে সহায়তা করে এবং শিক্ষকদের পাঠদানকে সহজ ও কার্যকর করে তোলে।
প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি: প্রযুক্তি শিক্ষায় ইনটারঅ্যাকটিভ লার্নিং, গেমিফিকেশন এবং মাল্টিমিডিয়া ব্যবহারের সুযোগ দেয়। এটি শিক্ষাকে আকর্ষণীয় করে তোলে এবং শিক্ষার্থীদের শিখন দক্ষতাকে উন্নত করে।
(৪) ‘Communication’ শব্দটির অর্থ কী? যোগাযোগের সংজ্ঞা দাও ।
উত্তর – Communication: ইংরেজি Communication শব্দটি ল্যাটিন শব্দ ‘Communis’ থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। যোগাযোগের অর্থ হল প্রেরক ও গ্রহীতার মধ্যে অভিন্ন সংকেত বিনিময়।
যোগাযোগের সংজ্ঞা: Aristotle-এর মতে, যোগাযোগ হল অন্যদের প্রভাবিত করার প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে একে অন্যের থেকে কাঙ্ক্ষিত আচরণ আশা করতে পারে।
(৫) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) বলতে কী বোঝায় ?
উত্তর – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (Information and Communication Technology-ICT) হল এমন একটি প্রযুক্তি, যার সাহায্যে তথ্যসংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ, সংরক্ষণ, স্থানান্তর এবং আদান-প্রদান করা যায়। এর মধ্যে রয়েছে-কম্পিউটার, ইনটারনেট, মোবাইল ফোন, সফটওয়্যার, মাল্টিমিডিয়া, ই-মেল, ভিডিয়ো কনফারেন্সিং, ই-লার্নিং ইত্যাদি। ICT কেবলমাত্র তথ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা ও প্রশাসনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিক্ষাক্ষেত্রে ICT শিক্ষাদান ও শেখার প্রক্রিয়াকে অধিকতর আকর্ষণীয়, দ্রুত ও কার্যকর করে তোলে। শিক্ষক ICT-র সাহায্যে মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন, শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে। ICT-এর মাধ্যমে দূরশিক্ষা, ভার্চুয়াল শ্রেণিকক্ষ, অনলাইন টেস্ট ও ই-লাইব্রেরি ব্যবস্থাও গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে।
(৬) শিক্ষাক্ষেত্রে ICT ব্যবহারের গুরুত্ব কী ?
উত্তর – শিক্ষাক্ষেত্রে ICT ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি শিক্ষাদানকে জীবন্ত, বাস্তবধর্মী ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক করে তোলে। উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষার্থীরা যদি একটি ভূমিকম্পের বিষয় পড়ে, তবে তা বোঝার তুলনায় ভিডিয়ো বা অ্যানিমেশনের মাধ্যমে দেখলে তারা বিষয়টি গভীরভাবে অনুধাবন করতে পারে। ICT শিক্ষার্থীদের মধ্যে কৌতূহল ও সৃজনশীলতা বাড়ায়। এ ছাড়া, এটি শিক্ষা প্রক্রিয়ার গুণগত মান উন্নয়ন করে এবং নিরক্ষরতা দূরীকরণে সাহায্য করে। দূরবর্তী এলাকার ছাত্রছাত্রীদের জন্য ICT হল শিক্ষাগ্রহণের অন্যতম কার্যকর মাধ্যম। এ ছাড়া, শিক্ষকরা দ্রুত কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন, যা পাঠদানকে আরও প্রাসঙ্গিক ও সময়োপযোগী করে তোলে।
(৭) ICT শিক্ষকের জন্য কীভাবে সহায়ক ?
উত্তর – শিক্ষক ICT ব্যবহার করে বিভিন্ন শিক্ষণ কৌশল প্রয়োগ করতে পারেন। যেমন- Powerpoint উপস্থাপনা, ইন্টারঅ্যাকটিভ ভিডিয়ো, অনলাইন অ্যাসাইনমেন্ট, ভার্চুয়াল ল্যাব ইত্যাদি। ICT-র সাহায্যে শিক্ষকরা নিজস্ব শিক্ষাদান পদ্ধতিকে উন্নত করতে পারেন এবং পাঠদানকে শিক্ষার্থীর উপযোগী করে গড়ে তুলতে পারেন। একজন শিক্ষক গুপ্স ক্লাসরুম, Zoom বা Microsoft Teams ব্যবহার করে অনলাইন ক্লাস নিতে পারেন, যেখানে ভিডিয়ো, চ্যাট ও মূল্যায়ন একত্রে করা সম্ভব। তিনি অনলাইন টেস্ট তৈরি করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নও করতে পারেন। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক শক্তিশালী হয় এবং শিক্ষা আরও দক্ষতাপূর্ণ হয়ে ওঠে।
(৮) ICT শিক্ষার্থীদের কীভাবে উপকৃত করে ?
উত্তর – ICT শিক্ষার্থীদের শেখার অভিজ্ঞতাকে বহুমাত্রিক করে তোলে। তারা শুধু বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে ইনটারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় জানতে পারে, অনলাইন ভিডিয়ো দেখে শিখতে পারে এবং বিভিন্ন – ই-লার্নিং অ্যাপ ব্যবহার করে নিজে নিজে অনুশীলন করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ভাষা শেখার জন্য Duolingo বা গণিত শেখার জন্য Khan Academy অ্যাপ ব্যবহার করা যায়। শিক্ষার্থীরা মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনা দেখে বিষয়বস্তুকে সহজে মনে রাখতে পারে এবং নিজেদের গতি অনুযায়ী, শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে। ICT আত্মনির্ভরশীলতা, সমস্যাসমাধান ও তথ্য বিশ্লেষণের দক্ষতা বাড়ায়।
(৯) শিক্ষাব্যবস্থার ডিজিটাল রূপান্তরে ICT-র ভূমিকা কী ?
উত্তর – বর্তমানে শিক্ষাব্যবস্থায় ডিজিটাল রূপান্তর ঘটছে এবং এর মূল চালিকাশক্তি হল ICT। কোভিড-19-এর সময় থেকে অনলাইন ক্লাস, ভার্চুয়াল পরীক্ষা ও ই-লার্নিং একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হয়ে উঠেছে। ডিজিটাল ব্ল্যাকবোর্ড, ই-বুক এবং অ্যানিমেটেড লার্নিং কনটেন্ট শিক্ষাকে নতুন মাত্রা দিচ্ছে। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রশাসনিক কাজ যেমন-ছাত্র ভরতি, ফলাফল প্রকাশ, অ্যাটেনডেন্স- সবই এখন ICT নির্ভর। ফলে শিক্ষাব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং গতিশীলতা বেড়েছে।
(১০) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কয়েকটি প্রভাব লেখো ।
উত্তর – তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কয়েকটি প্রভাব হল- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে জানা ও আয়ত্ত করা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করতে শেখা। তথ্য ও যোগাযোগের প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে আকর্ষণীয় শিক্ষা উপকরণ প্রস্তুত করা যায়। যা, গতানুগতিক শিক্ষার চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর।
(১১) শিক্ষায় ডিজিটাল বিপ্লব বলতে কী বোঝায় ?
উত্তর – শিক্ষায় ডিজিটাল বিপ্লব হল শিক্ষাদান ও শিক্ষাগ্রহণ প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার, যার মাধ্যমে শিক্ষা আরও সহজলভ্য, দ্রুত এবং ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। প্রথাগত পাঠদান পদ্ধতির বাইরে এসে এখন অনলাইন লার্নিং, ভার্চুয়াল ক্লাসরুম, ই-বুক, মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনা, অনলাইন মূল্যায়ন ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষা নতুন রূপ নিয়েছে। বিশেষ করে কোভিড-19 মহামারির সময়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষাদান চলেছে ভার্চুয়াল মাধ্যমে। এই পরিবর্তন শুধু শহর নয়, গ্রামীণ এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ছে। ডিজিটাল বিপ্লব শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক জোরদার এবং নতুন শিক্ষা কৌশল বাস্তবায়নে সহায়তা করছে। এটি শিক্ষার্থীদের 21 শতকের উপযোগী দক্ষতা যেমন- প্রযুক্তি ব্যবহার, সমস্যা সমাধান এবং আত্মনির্ভরতা গঠনে সাহায্য করে।
(১২) শিক্ষায় ডিজিটাল বিপ্লবের দুটি সুবিধা লেখো ।
উত্তর – শিক্ষাক্ষেত্রে ডিজিটাল বিপ্লব এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। প্রযুক্তির সাহায্যে শিক্ষা এখন আরও সহজলভ্য, গতিশীল ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। এই বিপ্লবের ফলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সকলেই বহুমুখীভাবে উপকৃত হয়েছে।
প্রথমত, জ্ঞানলাভের ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হয়েছে। এখন বইয়ের সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়ে ছাত্রছাত্রীরা ইনটারনেটের মাধ্যমে বিশ্বের যে-কোনো প্রান্তের তথ্য ও পাঠ্যসামগ্রী পেতে পারে। MOOCs (Massive Open Online Courses), DIKSHA, SWAYAM, NPTEL-এর মতো প্ল্যাটফর্মে বিনামূল্যে মানসম্পন্ন শিক্ষা উপকরণ পাওয়া যাচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, পাঠদান পদ্ধতিতে উদ্ভাবন এসেছে। মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট, ভিডিয়ো লেকচার, অ্যানিমেশন, ইনটারঅ্যাকটিভ কুইজ শিক্ষাকে আরও বোধগম্য ও আনন্দদায়ক করেছে। এটি শিক্ষার্থীদের কল্পনাশক্তি ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা বাড়ায়।
(১৩) ডিজিটাল বিপ্লব শিক্ষার সমতা প্রতিষ্ঠায় কী ভূমিকা রাখে ?
উত্তর – ডিজিটাল বিপ্লব শিক্ষাক্ষেত্রে সাম্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। পূর্বে শহর ও গ্রামের মধ্যে যে শিক্ষাগত ব্যবধান ছিল, তা কমতে শুরু করেছে।
একজন ছাত্র যদি ইনটারনেট সংযোগ এবং একটি স্মার্টফোন বা কম্পিউটার পায়, তাহলে সে বিশ্বের যে-কোনো কোণ থেকে একই কোর্সে অংশগ্রহণ করতে পারে। যেমন- SWAYAM, DIKSHA, NPTEL-এর মতো প্ল্যাটফর্ম প্রত্যন্ত গ্রামের ছাত্রদেরও উচ্চমানের শিক্ষা দিচ্ছে।
তবে এখনও অনেক এলাকায় ডিজিটাল বিভাজন (Digital Divide) রয়েছে- যেখানে ইনটারনেট বা ডিভাইস সহজলভ্য নয়। তবু সরকার ও এনজিও-দের যৌথ প্রচেষ্টায় ধীরে ধীরে এই ফাঁক পূরণ হচ্ছে এবং ডিজিটাল শিক্ষা সর্বজনীন রূপ পাচ্ছে।
(১৪) ভার্চুয়াল ক্লাসরুম কী এবং এটি কীভাবে কাজ করে ?
উত্তর – ভার্চুয়াল ক্লাসরুম: ভার্চুয়াল ক্লাসরুম হল এমন একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, যেখানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী একই সময়ে অনলাইনে যুক্ত হয়ে পাঠদান ও আলোচনা করতে পারে। ZOOM, Google Meet, Microsoft Teams প্রভৃতি সফটওয়্যারের সাহায্যে এই ক্লাস পরিচালিত হয়।
ভার্চুয়াল ক্লাসরুমের কাজ: শিক্ষক তার কম্পিউটারের মাধ্যমে ভিডিয়ো, অডিয়ো ও স্ক্রিন শেয়ার করে পড়াতে পারেন। শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন করতে পারে, ফিডব্যাক দিতে পারে এবং লাইভ পরীক্ষা দিতে পারে। এটি দূরবর্তী শিক্ষা (distance learning)-এর অন্যতম কার্যকর মাধ্যম। এর ফলে ছাত্র-শিক্ষক ভৌগোলিক দূরত্ব উপেক্ষা করে একই ক্লাসে যুক্ত হতে পারে। এর ফলে শিক্ষা এক নতুন, আন্তর্জাতিক মাত্রা পেয়েছে।
(১৫) শিক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ও মেশিন লার্নিং-এর প্রভাব কী ?
উত্তর – শিক্ষাক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ও মেশিন লার্নিং নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এই প্রযুক্তির সাহায্যে শিক্ষার্থীদের শেখার ধরন বুঝে তাকে ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষাদান সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ, একটি AIভিত্তিক অ্যাপ শিক্ষার্থীর পূর্বতথ্য বিশ্লেষণ করে বলে দিতে পারে- কোন্ বিষয়ে তার দুর্বলতা, সে কীভাবে শেখে ইত্যাদি। এভাবে ‘অ্যাডাপটিভ লার্নিং সিস্টেম’ তৈরি হয়। শিক্ষকের সহকারী হিসেবে AI শিক্ষার্থীদের দ্রুত মূল্যায়ন করতে পারে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফিডব্যাক দিতে পারে। তবে, এর সঠিক ব্যবহার ও তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষায় বিশেষ নজর দিতে হবে। প্রযুক্তি যেন সহায়ক হয়, বিকল্প নয়- এই নীতি মেনে AI-এর ব্যবহার শ্রেয়।
(১৬) E-learning 3 E-book বলতে কী বোঝানো হয় ?
উত্তর – E-learning: ইনটারনেটের মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণের প্রথাটিকে ইলেকট্রনিক লার্নিং বা সংক্ষেপে E-learning বলা হয়।
E-book: ইনটারনেটের মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণের জন্য বিভিন্ন বিষয়ের বই সংরক্ষিত রাখা হয়। শিক্ষার্থী তার পছন্দ ও প্রয়োজনমতো বইটি ইনটারনেট থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারে। একেই ইলেকট্রনিক বুক বা E-book বলা হয়। বিভিন্ন ধরনের E-book নিয়ে তৈরি লাইব্রেরিকে বর্তমানে E-Library বলা হয়।
(১৭) ভার্চুয়াল ক্লাসরুম কীভাবে কার্যকর হয় ? শিক্ষায় রোবোটিক্সের প্রভাব কী ?
উত্তর – ভার্চুয়াল ক্লাসরুম শিক্ষার্থীদের জন্য দূরশিক্ষায় একযোগে শিক্ষাগ্রহণের সমসুযোগ তৈরি করে।
রোবোটিক্স শিক্ষাকে উদ্ভাবনী ও প্রায়োগিক করে তোলে।
(১৮) শিক্ষায় অনলাইন কুইজ এবং লাইভ স্ট্রিমিংয়ের গুরুত্ব কী ?
উত্তর – অনলাইন কুইজ: কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে শিক্ষার্থীরা কতখানি জ্ঞানার্জন করেছে বা তাদের আচরণের কাঙ্খিত পরিবর্তন হয়েছে কিনা তার যথাযথ মূল্যায়নে সহায়ক।
লাইভ স্ট্রিমিং: শিক্ষার্থীদের দূর থেকে কোনো বিষয়ে বিশেষজ্ঞ – ব্যক্তির আলোচনা শোনা ও তা থেকে নিজের অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করার সুযোগ করে দেয়।
(১৯) ডিজিটাল সাক্ষরতা কী ?
উত্তর – ডিজিটাল সাক্ষরতা: মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্মের জন্য মোবাইল, কম্পিউটার, ইনটারনেট অ্যাক্সেস করার এবং ইনটারনেটের মাধ্যমে অন্যদের সঙ্গে যুক্ত করার দক্ষতাই হল ডিজিটাল সাক্ষরতা। যেমন- ই-মেল পাঠানো ও গ্রহণ, ব্লগ লেখা ও প্রকাশ করা। চার্লস ব্যাবেজকে আধুনিক ডিজিটাল কম্পিউটারের জনক বলা হয়।
(২০) গ্লোবাল ভিলেজ কী ?
উত্তর – গ্লোবাল ডিলেজ: বৈদ্যুতিক প্রযুক্তি ও তথ্যের তাড়াতাড়ি সঞ্চালনের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্বের প্রতিটি মানুষকে একটি গ্রামের অংশ হিসেবে এমনভাবে তুলে ধরা হবে, যার ফলে বিশ্বের প্রতিটি মানুষই তথ্য ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে উপযুক্ত ইনটারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে একটি একক কমিউনিটিতে পরিণত হবে অর্থাৎ প্রত্যেক মানুষই ডিজিটাল পদ্ধতিকে ব্যবহার করে তাদের চিন্তাভাবনা, কৃষ্টি-সংস্কৃতির গঠনে একে অপরকে সাহায্য করতে পারবে। এই কারণে বর্তমান বিশ্বকে গ্লোবাল ভিলেজ বলা হয়।
(২১) গ্লোবাল ভিলেজের কয়েকটি সুবিধা লেখো ।
উত্তর – গ্লোবাল ভিলেজের সুবিধা: মধ্যে দূরত্বের ব্যবধান অনেক কমেছে। দেশ একইরকমভাবে ব্যবহার করতে পারে। অন্যপ্রান্তের খবর অতি সহজে নেওয়া যায়। গ্লোবাল বিশ্বে বিভিন্ন দেশের ডিজিটাল প্রযুক্তিকে প্রতিটি পৃথিবীর এক প্রান্তে বসে একদেশের লোক নিজের দেশে বাস করেই অন্যদেশের কাজ অতি সহজেই করতে পারে।
(২২) ডিজিটাল ডিভাইড কী ?
উত্তর – ডিজিটাল ডিভাইড: ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারকারী এবং ডিজিটাল প্রযুক্তি যারা ব্যবহার করতে পারে না, উভয় গোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞান, লাইফস্টাইল, সংস্কৃতিগত জ্ঞানের মধ্যে যে পার্থক্য দেখা যায়, তাকেই বলে ডিজিটাল ডিভাইড। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলির মানুষজন বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে, অপরপক্ষে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির মানুষ সব ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে না, আবার অনুন্নত দেশগুলি প্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেকটা পিছিয়ে।
(২৩) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স (AI) কী ?
উত্তর – কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স (AI): মানুষ যেভাবে চিন্তাভাবনা করে, কৃত্রিম উপায়ে কম্পিউটার সেইভাবে চিন্তাভাবনার রূপদান করার জন্য যে ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়া কার্যকরী হয়, তাকে আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স বলে। বিশেষ ধরনের সেনসরের মাধ্যমে এটি মানুষের বলা কথা বুঝতে পারে। AI-কে ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার ল্যাঙ্গুয়েজ শিখনের প্রয়োজন।
(২৪) শিক্ষায় ডিজিটাল বিপ্লব বলতে কী বোঝো ?
উত্তর – শিক্ষায় ডিজিটাল বিপ্লব হল শিক্ষাদান ও শিক্ষাগ্রহণ প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার, যার মাধ্যমে শিক্ষা আরও সহজলভ্য, দ্রুত এবং ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। প্রথাগত পাঠদান পদ্ধতির বাইরে এসে এখন অনলাইন লার্নিং, ভার্চুয়াল ক্লাসরুম, ই-বুক, মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপনা, অনলাইন মূল্যায়ন ইত্যাদির মাধমে শিক্ষা নতুন রূপ নিয়েছে। বিশেষ করে কোভিড-19 মহামারির সময়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষাদান চলেছে ভার্চুয়াল মাধ্যমে। এই পরিবর্তন শুধু শহর নয়, গ্রামীণ এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ছে। ডিজিটাল বিপ্লব শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক জোরদার এবং নতুন শিক্ষাকৌশল বাস্তবায়নে সহায়তা করছে। এটি শিক্ষার্থীদের 21 শতকের উপযোগী দক্ষতা যেমন- প্রযুক্তি-ব্যবহার, সমস্যাসমাধান এবং আত্মনির্ভরতা গঠনে সাহায্য করে।
(২৫) EDUSAT কী ?
উত্তর – ভারতে প্রথম স্যাটেলাইটভিত্তিক প্রকল্প হল EDUSATI শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নকল্পে EDUSAT-এর সাহায্য নেওয়া হয়। EDUSAT প্রকল্পটি Indian Space Research Organisation-এর প্রযুক্তিগত সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে। বিদ্যালয় শিক্ষা থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি বাস্তবায়নে EDUSAT কার্যকরী। EDUSAT-এর পুরোনাম হল- Educational Satellite. On
(২৬) VICTERS কী ?
উত্তর – VICTERS (Versatile ICT Enabled Resource for Students): EDUSAT নেটওয়ার্কের বাস্তবায়নের জন্য ও শিক্ষামূলক চ্যানেলকে পরিচালনার জন্য এটি একটি নোডাল এজেন্সি। এই চ্যানেলটি প্রতিদিন 17 ঘণ্টা বিভিন্ন ধরনের শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে। 2005 সালের 28 জুলাই তিরুবনন্তপুরমে VICTERS-এই শিক্ষামূলক চ্যানেলটি উদ্বোধন করা হয়।
(২৭) ই-গভর্নেন্স পরিসেবার ক্ষেত্রে IT Project-এর ভূমিকা কী ?
উত্তর – ই-গভর্নেন্স পরিসেবা: IT @ School Project-এর মাধ্যমে e-গভর্নেন্স পরিসেবার উন্নতিসাধন করা যায়, যেমন- +1 শ্রেণিতে ভরতির জন্য একক প্রবেশাধিকার পদ্ধতি, মিড-ডে মিল সংক্রান্ত তথ্যসমূহ কম্পিউটারে নথিভুক্ত করা, স্থানান্তরকরণ, প্রাক্-মাধ্যমিক বৃত্তি, শিক্ষকদের অনলাইন দ্বারা কেন্দ্রীয় অনলাইন পাঠ্যপুস্তক সহায়ক সিস্টেম, SPARK পরিসেবার বাস্তবায়ন (SPARK হল Service Payroll Administrative Repository of Kerala) ইত্যাদি।
(২৮) ডিজিটাল ক্লাসরুম কী ?
উত্তর – ডিজিটাল ক্লাসরুম: ডিজিটালাইজেশনের মধ্যে সবচেয়ে দৃশ্যমান পরিবর্তনগুলির মধ্যে অন্যতম একটি হল ঐতিহ্যবাহী ইট-মর্টার ক্লাসরুম থেকে ডিজিটাল ক্লাসরুমে রূপান্তর। ল্যাপটপ, ট্যাবলেট ও ইনটারনেট হোয়াইট বোর্ডের মতো ডিজিটাল ডিভাইসের প্রবর্তন শিক্ষার্থীদের শিক্ষামূলক বিষয়বস্তুর সঙ্গে জড়িত হওয়ার পদ্ধতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। শিক্ষা এখন আর স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়, এটি যে-কোনো জায়গায়, যে-কোনো সময় ঘটতে পারে। ই-বুকগুলি মাল্টিমিডিয়া হাইপারলিঙ্ক ও অনুসন্ধান ফাংশনের মতো ইনটারেকটিভ বৈশিষ্ট্যগুলি অফার করে, যা শিক্ষার্থীদের শেখার প্রতি আরও আকৃষ্ট দক্ষ করে তোলে।
আরও দেখুন –
এডুকেশন – অষ্টম অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর
এডুকেশন – সপ্তম অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 5 Mark )
এডুকেশন – ষষ্ঠ অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 2 Mark )
এডুকেশন – পঞ্চম অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 5 Mark )
এডুকেশন – চতুর্থ অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 5 Mark )
এডুকেশন – তৃতীয় অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 10 Mark)
এডুকেশন – দ্বিতীয় অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 2 Mark)
এডুকেশন – প্রথম অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর (2 mark)
এডুকেশন – প্রথম অধ্যায় – প্রশ্ন উত্তর ( 10 Mark )
YouTube – Samim Sir